মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

নগরজুড়ে পুলিশের চোখ

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নগরজুড়ে পুলিশের চোখ

অটোরিকশায় তুলে কৌশলে এক ব্যবসায়ীর ওষুধ ছিনতাই করেছিলেন চার ব্যক্তি। ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সহজেই এই অপরাধীদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। রাজশাহীর কাটাখালীতে যে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন, সেই দৃশ্যও ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্তে এখন সুফল পাচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

রাজশাহী নগরজুড়ে লাগানো ৩০০ সিসি ক্যামেরার চোখে এখন ধরা পড়ছে গুরুত্বপূর্ণ নানা ঘটনা। এর ফলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে। এমন সুফল পাওয়ার আশা থেকেই নগরজুড়ে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)। ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ৩০০ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আরও ২০০ ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে ২০১৭ সালে নগরীতে ৬৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছিল সিটি করপোরেশন। জনগুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ১৭ পয়েন্টে বসানো হয়েছিল এসব ক্যামেরা। খরচ হয়েছিল ৬৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছুদিনের মধ্যেই বেশির ভাগ সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়ে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে আরএমপির কমিশনার হয়ে আসেন আবু কালাম সিদ্দিক। এরপর তিনি নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে নগরীজুড়ে ৫০০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন পুলিশ কমিশনার। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা। যেসব ক্যামেরা বসানো হয়েছে সেগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে আরএমপির সদর দফতর থেকে। নগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ও সহকারী কমিশনার উৎপল চৌধুরীসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা সিসি ক্যামেরাগুলো মনিটরিং করে থাকেন।

আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক গেল স্বাধীনতা দিবসের আগেই নগরীতে ৫০০ সিসি ক্যামেরা বসানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেটি অবশ্য হয়নি নগরীর বিভিন্ন সড়কে উন্নয়ন কাজ চলমান থাকার কারণে। তবে দ্রুতই বাকি ক্যামেরাগুলো বসানো যাবে বলে আশা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সহকারী কমিশনার উৎপল চৌধুরী বলেন, নগরীর প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ৩০০ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়ে গেছে। কিন্তু শহরের বিভিন্ন স্থানে সড়কে কাজ চলছে। খুঁটিগুলো তুলে অন্যস্থানে বসাতে হচ্ছে। এ কারণে ২০০ ক্যামেরা লাগানো সম্ভব হয়নি। পর্যায়ক্রমে দ্রুত সব ক্যামেরা বসানো হবে। তবে এখনই ৩০০ ক্যামেরার সুফল পাচ্ছেন তারা।

আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে শুধু অপরাধই কমবে না; আরও নানারকম সুবিধা পাওয়া যাবে। যেমন কোথাও যানজট দেখা দিলে আরএমপি সদর দফতর থেকেই দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কাছে নির্দেশনা পাঠানো যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাকি ২০০ সিসি ক্যামেরা বসানো শেষ হলে আরও বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে। তখন গোটা শহরেই পুলিশের চোখ থাকবে। তাই শহরে প্রকাশ্যে কোনো অপরাধ করার আগে অপরাধীদের ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর