সপ্তাহে ছয় দিন গৃহিণীরা ফারুকের হুইসেলের অপেক্ষায় থাকেন। সকাল বেলা বাড়ির সামনে এসে বাঁশি দিয়ে হুইসেল বাজালে বর্জ্য নিয়ে হাজির হন বাড়ির গৃহিণীরা। আবার কেউ কেউ বাড়ির গেটের সামনে জমানো বর্জ্য বালতি কিংবা পাত্রে আগেই রেখে যান। পরে ভ্যানে করে সেই বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হয়। রংপুর সিটি করপোরেশনের পুরাতন ১৫টি ওয়ার্ডের অনেক স্থানে বর্জ্য এভাবেই অপসারণ করা হচ্ছে। এতে রাস্তার পাশের ডাস্টবিনের ওপর চাপ যেমন কমছে তেমনি পাড়া-মহল্লাগুলো বর্জ্যমুক্ত থাকছে। বর্জ্যকর্মী ফারুক হোসেন জানালেন, তার বাড়ি নগরীর মিস্ত্রি পাড়া এলাকায়। তিনি আগে কৃষি কাজ করতেন। শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ছয় দিন তিনি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি মহল্লায় বর্জ্য পরিষ্কার করেন। নগরীতে ফারুকের মতো প্রায় ৭৫ জন এই বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ করছেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশনকে বর্জ্য পরিষ্কারের জন্য ভ্যানগুলো দিয়েছে। ভ্যানভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়। প্রতিটি বাড়ি থেকে ১০০ টাকা করে নেন ফারুক। দিনে ১১০টি বাড়ির বর্জ্য অপসারণ করতে পারেন তিনি। ভ্যান ভাড়া বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আয় হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। ওই টাকায় চলে তার সংসার।
২৫ নম্বর ওয়ার্ডের শাহিপাড়ার গৃহিণী রুনা লায়না জানান, বাড়ির বর্জ্য অপসারণ বেশ ঝামেলার কাজ। অনেক সময় বর্জ্য বড় রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে ফেলা হয় না। ফলে বাড়ির পরিবেশ নোংরা থাকত। ভ্যানে করে বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় বাড়ির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকছে। সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, বর্জ্যমুক্ত নগরী গড়তে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বর্জ্য অপসারণের কাজ আরও সম্প্রসারিত করা হবে।
সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলেন, সিটি মেয়র নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভ্যানগুলো দিলেও সবসময় তারা বিষয়টি মনিটরিং করছেন। নগরীতে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫টি ভ্যানে এই বর্জ্য প্রথমে মেডিকেল মোড়ের বর্জ্য সাবস্টেশনে ফেলেন বর্জ্যকর্মীরা। এরপর ওই বর্জ্য নগরীর অদূরে কলা বাগান এলাকায় নিয়ে ফেলা হয়।