মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় মাইলফলক

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় মাইলফলক

চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ এপ্রিল। এরপর থেকেই শুরু হয় স্বাস্থ্যসেবায় সংকট-সমস্যা। সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংকটে বিনা চিকিৎসায় করোনা আক্রান্ত রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। আকাশচুম্বী আওয়াজ ওঠে ‘শ্বাস নিতে চায় চট্টগ্রাম’। স্বাস্থ্যসেবায় এমন বিপর্যস্ত সময়ে এগিয়ে আসে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। চালু করে করোনা ওয়ার্ড ও নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্র। গত এক বছরে এ ওয়ার্ড থেকে সেবা নিয়েছে ৪ হাজার ১০৯ জন করোনা রোগী। ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় আরটি-পিসিআর ল্যাব। করোনা চিকিৎসায় হাসপাতালের উদ্যোগটি সবার কাছে ছিল মাইলফলক।  

গত বছরের ৭ জুন হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয়-তৃতীয় তলায় ৩৪টি শয্যা নিয়ে শুরু হয় করোনা চিকিৎসা। স্থাপন করা হয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। পর্যায়ক্রমে করোনা ওয়ার্ডকে উন্নীত করা হয় ১০০ শয্যায়। পরে রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালের পুরাতন দ্বিতীয়-চতুর্থ তলার সব কেবিন, হাসপাতালের আইসিইউ এবং এইচডিইউ করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়। 

হাসপাতালের করোনা ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. রেজাউল করিম আজাদ বলেন, গত এক বছরে করোনা ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসা নেন ৪ হাজার ১০৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৬৫৩ জন। বর্তমানে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৩২ জন চিকিৎসক, ৩৮ জন নার্স ও ৫২ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মী কর্মরত আছেন। তাছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের আর্থিক সহযোগিতায় ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় করোনার নমুনা পরীক্ষায় অত্যাধুনিক আরটি-পিসিআর ল্যাব। ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করেন ৬ হাজার ৮৫ জন। শুরু হয়েছে বিদেশগামী যাত্রীদের কভিড টেস্টও। 

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মোরশেদ হোসেন বলেন, করোনা চিকিৎসার শুরুতে পুরো চট্টগ্রামে কেবল মা ও শিশু হাসপাতালে একটি ন্যাজল ক্যানুলা ছিল। বর্তমানে এ হাসপাতালেই আছে ৫০টির বেশি। করোনা চিকিৎসায় চট্টগ্রামের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ঐকান্তিক সহযোগিতায় এসব করা সম্ভব হয়েছে।  

হাসপাতালের আজীবন সদস্য ফোরামের সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান শাওন বলেন, করোনার বিপর্যস্ত সময়ে এ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করা হয়। এটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। করোনা চিকিৎসায় মাইলফলক। 

জানা যায়, ১৯৭৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্বেচ্ছাসেবী ও জনহিতকর কিছু মহৎ ব্যক্তির উদ্যোগে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়।

বর্তমানে মা ও শিশু হাসপাতালের অধীনে নার্সিং ইনস্টিটিউট, জেনারেল হাসপাতাল, নার্সিং কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ক্যান্সার হাসপাতালসহ অনেক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর