শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

কান্দিখাল ভরাটে নগরবাসীর দুর্ভোগ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কান্দিখাল ভরাটে নগরবাসীর দুর্ভোগ

কুমিল্লা নগরীর সেই কান্দিখাল ভরাটে বাড়ল কুমিল্লা নগরবাসীর দুর্ভোগ। গত বুধবারের পর রবিবার সকালের বৃষ্টিতে দ্বিতীয় দফা প্লাবিত হয়েছে নগরী। বাংলাদেশ প্রতিদিন ছয় মাস আগে প্রতিবেদনে বলেছিল, নগরীর পানি নিষ্কাশনের প্রধান খাল কান্দিখাল ভরাট হচ্ছে। খালের একাংশ ভরাটে খালটি সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে যেখানে নগরী ডুবে যায়, সেখানে পানি অপসারণের পথ স্বাভাবিক না থাকলে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করবে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো।

সূত্রমতে, রবিবার বৃষ্টিতে নগরীর স্টেডিয়াম এলাকা, লাকসাম রোড, রেসকোর্স, চকবাজার, নিমতলী, হাউজিং এস্টেট, বাগিচাগাঁওসহ প্রায় সবকটি অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে নগরীর অন্তত ২ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পড়েন। বেশির ভাগ বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে পড়ে। ফ্রিজ, সোফা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ডুবে গেছে। জলমগ্ন হওয়ায় কুমিল্লা বিসিকে খাদ্য উৎপাদন, ওষুধ তৈরিসহ প্রায় সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড প্রাঙ্গণ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ, টিএন্ডটি কার্যালয় প্রাঙ্গণ।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষা বোর্ড প্রাঙ্গণসহ কলোনি এলাকায় কোমর সমান জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বাসায় পানি ঢোকায় প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।

তরুণ ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, নগরীর অন্যতম উঁচু এলাকা বজ্রপুর ইউসুফ হাই স্কুল রোডে বাস করি। জীবদ্দশায় বাসায় কখনো পানি উঠতে দেখিনি। সঙ্গে ড্রেনের মলমূত্র। যারা বলেন বৃষ্টি থামলে পানি চলে যায় কিংবা ঢাকা, চট্টগ্রামের অবস্থা এর চেয়ে খারাপ, তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকছেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, যত প্রয়োজনই হোক পুকুর, নদী, খাল বন্ধ করা যাবে না। বিশেষ করে কান্দিখাল নগরীর পানি নিষ্কাশনের প্রধান খাল। এটি আরও প্রশ্বস্ত ও গভীর করা দরকার। সেখানে এটি ভরাট করা দুঃখজনক।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, তিনবার সওজকে চিঠি দিয়েছি। তারা কাজ বন্ধ রাখেনি, খাল ভরাট করে ফোর লেনের কাজ করছে। এদিকে রেলওয়ের ডবল লেনের কাজের সময় তারা ছয়টি ব্রিজ ভেঙে ফেলে। পানি সরার জায়গাই যদি বন্ধ রাখা হয়, তাহলে কোনো লাভ হবে না।

সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজা-ই-রাব্বি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা ভরাট করে সড়ক সম্প্রসারণ করেছি। খাল ভরাট করিনি। বরং ৩৫ জন দখলদার উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে সহযোগিতা করেনি।

সর্বশেষ খবর