মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রতিবন্ধীদের আশার আলো

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

প্রতিবন্ধীদের আশার আলো

প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে আছেন এমন ব্যক্তিদের সেবা দিচ্ছে প্রতিবন্ধী সাহায্য ও সেবা কেন্দ্র কুমিল্লা। ২০১৫ সালের ১ মার্চ কুমিল্লায় যাত্রা শুরু হয় প্রতিবন্ধী সাহায্য ও সেবা কেন্দ্রের। কুমিল্লার আদর্শ সদর, বরুড়া ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় এ তিনটি সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কুমিল্লায় প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা অনেক ব্যক্তিই এখন মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন সেবা গ্রহণ করে। বিনামূল্যে আন্তরিক সেবা পাওয়ায় অনেক খুশি সেবা গ্রহণকারীরা।

কুমিল্লার রানীরবাজার আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা রবীন্দ্র চন্দ্র সরকার জানান, ‘আমার শোল্ডার পুরোপুরি ফ্রোজেন হয়ে গিয়েছিল। হাত-পা নাড়ানো একেবারেই বন্ধ, ঘরবন্দী হয়ে পড়েছিলাম। এখানে থেরাপি নিয়ে আমি প্রায় সুস্থ।’

দেবিদ্বারের মুর্শেদা আক্তারের মেয়ে শিশু মুনতাহা (ছদ্মনাম)। ৯ মাস বয়সী এ শিশুর বেড়ে ওঠা স্বাভাবিক ছিল না। হাত-পা নাড়াতে পারত না, মুখ দিয়েও শব্দ বের হতো না। গত তিন মাস ধরে সে কুমিল্লা আদর্শ সদরের সেবা কেন্দ্রটিতে আসছে। এখন মেয়েটি হাত-পা নাড়াতে পারছে।

সূূত্র মতে, কুমিল্লার তিনটি সেবা কেন্দ্রে এ পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার ব্যক্তিকে ৩ লাখের বেশিবার সেবা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ১১ হাজার পুরুষ, সাড়ে ৬ হাজার মহিলা ও সাড়ে ১০ হাজার শিশু কুমিল্লার সেবা কেন্দ্রগুলো থেকে সেবা নিয়েছেন।

বিনামূল্যে এ সেবা দিচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। এদিকে প্রতিবন্ধী সাহায্য ও সেবা কেন্দ্র কুমিল্লার মোবাইল থেরাপি কার্যক্রম কুমিল্লায় বেশ সাড়া ফেলেছে। সেবা কেন্দ্র আছে এমন তিনটি উপজেলা বাদ দিয়ে কুমিল্লার বাকি ১৪টি উপজেলায় প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। মোবাইল থেরাপির জন্য একটি গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে কুমিল্লায়। গাড়িটিতে থেরাপি প্রদানের জন্য সব উপকরণ যুক্ত করা হয়েছে।

আদর্শ সদর সেবা কেন্দ্রের চিকিৎসক মো. মামুন হোসেন জানান, ‘বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে আছেন। তাদের বিনামূল্যে সেবা নেওয়ার সুযোগ আছে, এ বার্তাটি অনেকে ঠিকমতো পাচ্ছেন না। আমরা চাই তাদের কাছে বার্তাটি পৌঁছে দিতে।’

কুমিল্লার প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা হাসান আহমেদ কামরুল জানান, ‘প্রতিবন্ধী সাহায্য ও সেবা কেন্দ্র কুমিল্লায় ১২ জন লোকবল আছে।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি আছে। স্পিচ থেরাপিস্ট নেই। এ পদটি পূরণ হওয়ার পাশাপাশি মহিলা সেবা প্রদানকারী বাড়ানো গেলে সেবার মান আরও ভালো হতো।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর