মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মেডিকেল বর্জ্য অপসারণ উদ্যোগে বিধির বাধা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

মেডিকেল বর্জ্য অপসারণ উদ্যোগে বিধির বাধা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংসে মেডিকেল ইনসিনারেটর মেশিন আমদানিতে নির্ধারিত শুল্ক ও কর মওকুফের জন্য আবেদন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিষয়টি পাঠিয়ে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ইনসিনারেটরের সব যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ও কর বাবদ সব ব্যয় চসিককে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদানের জন্য বলেছে। এ নিয়ে গত ১৯ অক্টোবর চসিককে একটি চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন বিভাগ। মেডিকেল বর্জ্যরে মধ্যে অন্যতম হলো- ব্যবহৃত সুই, সিরিঞ্জ, রক্ত ও পুঁজযুক্ত তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, টিউমার, ওষুধের শিশি, রক্তের ব্যাগ, স্যালাইনের ব্যাগ, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রভৃতি।

জানা যায়, চসিক জাইকার কারিগরি সহযোগিতা প্রকল্প ‘ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইন ঢাকা নর্থ সিটি, ঢাকা সাউথ সিটি অ্যান্ড চিটাগাং সিটি করপোরেশন’ এর আওতায় মেডিকেল ইনসিনারেটর আমদানির উদ্যোগ নেয়। প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের ইনসিনারেটর মেশিনটি আমদানি করা হবে জাপান থেকে। তবে জাইকার সঙ্গে চসিকের শর্ত ছিল যে, আমদানিতে শুল্ক ও কর চসিককে আদায় করতে হবে। তাই চসিক সরকার টু সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতে শুল্ক ও করমুক্ত আমদানি করতে গত ২৭ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন শাখার এক চিঠিতে বলা হয় ‘বিষয়টি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এখতিয়ারাধীন বিধায় শুল্ক ও কর মওকুফ করার সংশ্লিষ্ট বিষয়টি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছিল। বিভাগটি শুল্ক ও কর মওকুফের বিষয়ে বিধিগত সুযোগ নেই মর্মে অবহিত করে।’

চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক বলেন, নগরের মেডিকেল বর্জ্যগুলো পৃথকভাবে ধ্বংস করতে জাইকার একটি প্রকল্পের অধীনে  ইনসিনারেটর ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটি মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংস করার সর্বশেষ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। প্রকল্পে শর্ত ছিল যে, মেশিনটি আমদানিতে শুল্ক ও কর চসিক বহন করবে। আমরা চাইছিলাম, জি টু জি পদ্ধতিতে শুল্ক ও কর মওকুফ করতে। এখন মন্ত্রণালয় থেকে মওকুফ করা না হলে চসিক নিজস্ব অর্থ থেকে তা বহন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে হয়তো চসিকের প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ হবে।’

অভিযোগ আছে, চসিকের সঙ্গে সেবা সংস্থা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মেডিকেল বর্জ্য অপসারণের চুক্তি আছে। কিন্তু সংস্থাটি মেডিকেল ও সাধারণ বর্জ্য পৃথক না করে বর্জ্যাগারে নিয়ে সেগুলো আবার নিলামে বিক্রি করে। ফলে অপরিশোধিত মেডিকেল বর্জ্য আবারও দূষিত অবস্থায়ই ফিরে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চসিক পৃথকভাবে মেডিকেল বর্জ্য অপসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করে। জানা যায়, মেডিকেল বর্জ্যগুলো অত্যন্ত সংক্রামক ও বিপজ্জনক। এগুলো মারাত্মক রোগের জীবাণু বহন করে। এর মধ্যে আছে হেপাটাইটিস বি, সি এবং এইচআইভি/এইডস ইত্যাদি। মেডিকেল বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা না হলে সেটি সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে মিশে সম্পূর্ণ বর্জ্যকেই বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলে।

সর্বশেষ খবর