বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরীণ ৩ কিলোমিটার ব্যস্ততম ফোর লেন মহাসড়কের পাশের দুই লেন ফাঁকা। অথচ মূল মহাসড়কে চলছে সব ধরনের দ্রুত ও ধীরগতির যান। বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, প্যাডেলচালিত রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, মাহেন্দ্র, আলফা, সিএনজি, পিকআপ, বাস-ট্রাক-লরি সবই চলছে মহাসড়ক দিয়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহাসড়কের পাশের দুই লেনের বেহাল দশা। বড় ছোট খানাখন্দ থাকায় হালকা যানগুলো ভাঙা সড়কে না গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানের সঙ্গে চলছে পাল্লা দিয়ে। এতে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছেন অনেকে।
বরিশাল নগরীর মধ্য দিয়ে যাওয়া ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের অভ্যন্তরীণ ১১ কিলোমিটারের মধ্যে কাশীপুর থেকে আমতলা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশ ২০১২ সালে সম্প্রসারণ করে পুরনো জেলা শহরের রূপ পাল্টে দিয়েছেন তৎকালীন মেয়র শওকত হোসেন হিরণ। ৩ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশে ৩০ থেকে ৪০ ফুট প্রশস্তকরণ, দুই পাশে ড্রেন ও ডিভাইডার নির্মাণ, ডিভাইডারে সৌন্দর্যকরণ এবং সড়ক বাতি স্থাপনের ২৯ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ যেনতেনভাবে শেষ হয় ২০১৬ সালের দিকে। মহাসড়কের দুই পাশে ডিভাইডার দিয়ে সড়ক সম্প্রসারণ বর্ধিত করা হলেও এই ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ১ নম্বর সিএন্ডবি পোল, চৌমাথা ও নথুল্লাবাদের তিনটি সেতু দুই লেনের। ছোট যানগুলো বাধ্য হয়ে দুই পাশের লেন দিয়ে চললেও ওই ৩ পয়েন্টে মহাসড়কের সেতুতে না উঠে যাতায়াতের বিকল্প উপায় নেই তাদের। পুলিশের চাপে হালকা যানগুলো কিছুদিন ৩ সেতু পয়েন্ট ছাড়া বাকি ৩ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশের লেন দিয়ে চললেও সাম্প্রতিক সময়ে লেনে খানাখন্দ হওয়ায় এখন মহাসড়কেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে তারা। বাস-ট্রাক-লরি-পিকআপ-কার-মাইক্রোসহ দ্রুতগতির যানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগরীর অভ্যন্তরীণ মহাসড়কে চলছে প্যাডেল চালিত রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা, মাহেন্দ্র আলফা, সিএনজি, বাইসাইকেল সবকিছুই। স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা, নসিমন-করিমনের ব্রেক ও নিয়ন্ত্রণহীন খুবই নাজুক। দ্রুতগতির ভারী যানের সঙ্গে একই লেনে চলতে গিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় পড়ছে স্থানীয় প্রযুক্তির হালকা যানগুলো। দুই লেন ফাঁকা থাকার পরও ব্যস্ততম মহাসড়কে হালকা যান চলার বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. আবদুর রহিম বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশ মহাসড়কের পাশের দুই লেনে ছোট ও হালকা যান চলতে বাধ্য করেছিল। কঠোর নজরদারিও ছিল। কিন্তু দুই পাশের লেনেবিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এসব জায়গায় হালকা যানে ঝাঁকি লাগে। অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশু যাত্রীরা ওই সড়কে চলতে চায় না। ভাঙা সড়কে ছোট যান চালকরা যেতে চায় না। ঝুঁকি নিয়ে হালকা যান মহাসড়কে চলছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার বলেন, ফোর লেন সড়কসহ অন্যান্য সড়ক উন্নয়নের পরিকল্পনা সিটি করপোরেশনের রয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে।