মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

থমকে আছে ১৮৭ কোটি টাকার উন্নয়ন

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

থমকে আছে ১৮৭ কোটি টাকার উন্নয়ন

রাজশাহী নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে ১৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার প্রকল্প। কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৩ সেপ্টেম্বর। এখনো ছয়টি ওয়ার্ডে উন্নয়নের একটি ইটও লাগেনি। বাকি ওয়ার্ডগুলোতে কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের হিসাব মতে, কাজের গড় অগ্রগতি মাত্র ১৬ শতাংশ। এ অবস্থায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ মেয়াদেও কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’র অধীনে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ১০০০ কোটি টাকার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি ওয়ার্ডের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের জন্য ১৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ডগুলোতে সড়ক-নালা সংস্কার ও নির্মাণ করা হবে। এ কাজ করছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর তাকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু করেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তবে কাজের মেয়াদ এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কাজ শুরু হয়নি, এমন দুটি ওয়ার্ড হচ্ছে নগরীর ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৮টি রাস্তা ও ৩৬টি ড্রেন এ প্রকল্পের মধ্যে আছে। এতে ৪ কোটির টাকার বরাদ্দ আছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী বললেন, এমনভাবে প্রকল্প করা হয়েছে, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ওই ওয়ার্ডে আর কোনো উন্নয়নকাজ করার প্রয়োজন পড়বে না। অথচ ঠিকাদারের কাজের মেয়াদ একবার শেষ হয়ে গেছে। তার ওয়ার্ডে একটি ইটও ফেলা হয়নি।

নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডেও কাজ শুরু হয়নি। এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, রাস্তার দরপত্র হয়েছে। কিন্তু ঠিকদার কাজ করেন না। নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এ ওয়ার্ডে ৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাজ হওয়ার কথা। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম জানান, গত মেয়াদে তিনি কাউন্সিলর হতে পারেননি। তার আগের মেয়াদের শেষের দিকে যে রাস্তাগুলো সংস্কারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, রাস্তাগুলো এখনো সেই অবস্থাতেই আছে। বর্ষায় মানুষের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যায়। বড় রাস্তা নির্মাণ করার জন্য মালামাল পরিবহন করতে গিয়ে ওয়ার্ডের ভিতরের সব রাস্তা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু উন্নয়নকাজ করার জন্য ভিতরের রাস্তাগুলোও নষ্ট করে ফেলেছে। এটি একটি সম্প্রসারিত ওয়ার্ড, কোনো পরিকল্পনা ছাড়া মানুষ যে যেভাবে পেরেছে, বাড়িঘর করেছে।

প্রকল্পের পরিচালক ও সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজ শুরু করতে বিলম্বিত হয়েছে। ঠিকাদার কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন। তাকে কাজ করেই যেতে হবে।

সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান  বলেন, ‘এই ঠিকাদার আমাদের একটু বিপদে ফেলে দিয়েছেন। তার বড় কাজের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু অলিগলির রাস্তা করার অভিজ্ঞতা নেই। তার লোকবলও কম। এখন কাজ শুরু করেছেন। তাকে সিটি করপোরেশনের লোকবল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আশা করছি, আগামী এপ্রিলের মধ্যে তিনি একটি পর্যায়ে নিয়ে আসবেন।’

সর্বশেষ খবর