মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

খোলা নালা-খালে বাঁশের ঘের

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

খোলা নালা-খালে বাঁশের ঘের

চট্টগ্রাম নগরের উন্মুক্ত নালা ও খালে পড়ে অকালে ঝরে গেল পাঁচটি প্রাণ। পাঁচটি প্রাণের বিনিময়েও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। অথচ প্রতিটি মৃত্যুর পরই নগরের প্রধান সেবা সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু এসব ঘটনার পর বছর পার হলেও কোথাও কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। বরং ঘটনাস্থলসহ নগরের   অধিকাংশ নালা-নর্দমা ও খালের পাড় এখনো উন্মুক্ত। এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকলেও সেবা সংস্থা দুটি দায়িত্ব এড়াতে পরস্পরের বিরুদ্ধে ঠিকই বক্তব্য ছুড়ছে।   

অভিযোগ আছে, নগরের বিভিন্ন সড়কের পাশে উন্মুক্ত অবস্থায় থাকা বড় নালা-নর্দমা সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের সঙ্গে একাকার হয়ে যায়। সড়কের কোনো চিহ্নই থাকে না। এ সময় পথচারী ও যানবাহন চলাচল করে চরম ঝুঁকি নিয়েই। কিন্তু এ নিয়ে সেবা সংস্থাগুলোর কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। দুর্ঘটনা ঘটলে সামান্য তোড়জোড় শুরু হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ থাকে না।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, নগরের বড় আকারের নালা-নর্দমা সংস্কার কাজ মেগা প্রকল্পের অধীনে চলছে। তবে ছোট আকারের উন্মুক্ত নালা নর্দমাগুলোর পাড়ে ঘেরাও দেওয়ার একটা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া নালা নর্দমাগুলো চলমান কাজের অধীনেও সংস্কার করা হচ্ছে।     

জানা যায়, গত ৩০ জুন নগরের ষোলশহর চশমা হিল এলাকায় অটোরিকশা উন্মুক্ত খালে পড়ে নিখোঁজ হন তিনজন। পরে চালক সুলতান (৩৫) ও যাত্রী খাদিজা বেগমের (৬৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ২৫ আগস্ট সালেহ আহমদ (৫০) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী মুরাদপুরে জলাবদ্ধতায় নালার পানির তীব্র স্রোতে পা পিছলে তলিয়ে যায়। এখনো মেলেনি তার খোঁজ। গত ২৮ সেপ্টেম্বর নগরের আগ্রাবাদ মোড়ে নালায় পড়ে মারা যান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার (১৯)। গত ৭ ডিসেম্বর পাঁচলাইশ থানার দুই নম্বর গেট এলাকার নালায় পড়ে মো. কামাল উদ্দিন (১০) নামের এক শিশু নিখোঁজের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুরাদপুর যে নালায় পা পিছলে পথচারী পড়ে গেছেন, এমন নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়া নালা-নর্দমা নগরে আরও অনেক আছে।

এর মধ্যে আছে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বড় উন্মুক্ত নালা, বহদ্দারহাট থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কের পাশে, আগ্রাবাদ, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেটসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের পাশে নিরাপত্তা দেয়াল ছাড়া নালা-নর্দমা আছে। ফলে নগরের নালা-নর্দমা এবং সড়কের পাশে থাকা খালগুলো এখন মৃত্যুফাঁদে রূপ নিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় নগর। পানিতে একাকার হয়ে যায় সড়ক-নালা-নর্দমা ও ছোট ছোট খাল। এসব খাল-নালায় রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান উল্টে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। পথচারী ও যানবাহন পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।

সর্বশেষ খবর