মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

মশাতেই ‘কুপোকাত’ চসিক

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

মশাতেই ‘কুপোকাত’ চসিক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি ছিল মশক নিধন, জলাবদ্ধতা দূর ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণকালে সুধীসমাবেশে বক্তাদের জোর দাবি ছিল ‘মশক নিধন এবং পরিচ্ছন্নতা’ নিশ্চিত করা। সর্বশেষ গত ২৩ মার্চ মেয়রের বছরপূর্তির সংবাদ সম্মেলনের পুরোটা জুড়ে ছিল মশার উৎপাত প্রসঙ্গ। মেয়রও মশা নিয়ে বিব্রত ও বিড়ম্বনায় আছেন বলে জানান। চসিক এক মশাতেই কুপোকাত হয়ে আছে। মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নগরবাসী। মশারি কিংবা মশার ওষুধেও সুফল মিলছে না। কোনোভাবেই রেহাই মিলছে না মশার কামড় থেকে।

চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম বলেন, মশা নিয়ে আমরা বিব্রত ও বিড়ম্বনায় আছি। নানা উদ্যোগ নিয়েছি তবুও সুফল আসেনি। এর প্রধান কারণ বর্তমানে নগরে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজে খালে দেওয়া হয়েছে বাঁধ। পানি সরছে না। কয়েক দিন আগে পরিদর্শনে গিয়ে খালে একটি ঢিল ছুড়ে মারলাম। এক ঢিলেই হাজার হাজার মশা বেরিয়ে এলো। ¯ন্ডেপ্র করেও কাজ হয় না। রাত-দিন সমানে মশা। এটা অস্বীকার করছি না। তাই জলাবদ্ধতা প্রকল্প শেষ না হলে মশা নির্মূল সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, মশা নিয়ে কাজ করতে চসিকে অস্থায়ীভাবে একজন কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে ওষুধ দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তবে কাজটি খুবই দুরূহ হয়ে গেছে। জমে থাকা পানিতে কোটি কোটি মশা উৎপন্ন হচ্ছে।

বর্তমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর মশার অত্যাচার থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে উদ্যোগ নেন। প্রথমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একটি গবেষক দল নগরের ৯৯টি এলাকার ৫৭টি স্পট থেকে মশার লার্ভার নমুনা সংগ্রহ করে। গবেষণায় ১৫টি স্পটে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত করা হয়। ফুলের টব, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের পাত্র, দোকানের ব্যাটারির সেল ও টায়ার এবং রাস্তার ধারে পাইপে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। তাছাড়া ছিটানো ওষুধও অকার্যকর বলে প্রতীয়মান হয় চসিকের কাছে। পরে ঢাকা সিটি করপোরেশন কী ওষুধ ব্যবহার করে তা দেখা এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য যান দুই কর্মকর্তা। এত উদ্যোগের পরও নগরের মশার উৎপাত কমেনি।

অন্যদিকে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। এর আওতায় নগরের ৩৬টি খাল সংস্কার করা হলেও বাকি ২১টি খাল সংস্কারের বাইরে ছিল। সম্প্রতি চসিক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২১টি খাল পরিষ্কার করছে। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, সংস্কার কাজ চলা খালগুলোতে নেই পানি চলাচল। কিছু খাল পরিষ্কার করা হলেও অনেক খাল এখনো আবর্জনায় ভরা। মহেশ খাল, চাক্তাই খালের কিছু অংশ, নাছির খাল, বিবি মরিয়ম খাল, কলাবাগিচাসহ অনেক খাল দিয়েই আবর্জনার কারণে পানি প্রবাহিত হয় না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর