মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

যাত্রাবাড়ীর নবীনগরে পানির সংকট

শামছুল হক রাসেল

যাত্রাবাড়ীর নবীনগরে পানির সংকট

নবীনগরে ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা

ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে ‘মুসল্লি ভাইয়েরা, মসজিদে পানি নেই, রিজার্ভ ট্যাংকও খালি। আপনারা যার যার বাসা থেকে অজু করে আসবেন।’ বলছি, রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকার কথা। স্থানীয় বায়তুল আমান ঈদগাহ জামে মসজিদ থেকে এ রকম ঘোষণাই কানে বাজছিল। গত কয়েকদিন ধরে প্রায়ই আজানের আগে এ রকম ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে মসজিদটিতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই অত্র এলাকায় পানির সংকট চরমে পৌঁছেছে। শুধু নবীনগর নয় পার্শ্ববর্তী শহীদ ফারুক রোড, চন্দন কোঠা, শেখপাড়া সংলগ্ন আশপাশের এলাকায়ও পানির জন্য ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা এখানে। খুব সকালে কিছুক্ষণের জন্য লাইনে পানির চাপ থাকলেও দুপুরের পর আবার নেই হয়ে যায়। সেই পানি আবার আসে রাত ১১টার পর। এর মধ্যে যে পানি পাওয়া যায় তার বেশির ভাগই ঘোলা ও দুর্গন্ধযুক্ত। এখন গরম তার ওপর রমজান মাস, তাই সংকট চরমে অত্র এলাকায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রোজার প্রথম দিন থেকে এ সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সবমিলিয়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পানি সরবরাহ ঠিক থাকে। যা পাওয়া যায় তাও দুর্গন্ধযুক্ত। এমনিতেই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এর ওপর এ রকম পানি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতো। সংকট কাটাতে মাঝে মাঝে ঢাকা ওয়াসার গাড়ি অত্র এলাকায় পানি সরবরাহ করছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল।

স্থানীয় অধিবাসী আলহাজ মো. নুরুল হক বলেন, ‘মিডিয়ায় প্রতিদিন দেখছি পানির সংকট বাড়ছে। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকার পানি নাকি দুর্গন্ধ। আর আমরা তো এখানে প্রাকটিক্যাল দেখছি। এমনিতেই ঠিকমতো পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তার ওপর যা পাচ্ছি সেটা দুর্গন্ধযুক্ত। এতে বাচ্চাদের জন্য বেশি শঙ্কা বাড়ছে। কারণ ডায়রিয়া ও চর্মরোগ এরকম পানির কারণে বেশি হয়।’  আরেক অধিবাসী ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম তারেক বলেন, ‘যাদের রিজার্ভ ট্যাংক  বড় না তারা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। কারণ পানি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু সময় আসছে। ওয়াসার লাইনে টানা পানি থাকছে না। সকালে পানির চাপ থাকলেও দুপুরের পর থাকছে না। যাও পাচ্ছি সেটা দুর্গন্ধযুক্ত।’

জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর আলহাজ মো. মাসুম মোল্লা গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পানির এই সংকট শুধু নবীনগর নয়, অত্র ৫০ নং ওয়ার্ডের সব জায়গায় বিরাজমান। তবে এটাও ঠিক সংকট এখন অনেকটাই কেটে গেছে বলে মনে করি। গত কয়েকদিন পানির সংকট তীব্র ছিল। সে সময় ওয়াসার মাধ্যমে আমার ওয়ার্ডে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ট্যাংকের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করেছি। চেষ্টা করেছি রমজানের এই সময়টাতে মানুষের কষ্ট লাঘব করতে। আশা করছি আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে পানির এই সমস্যা পুরোপুরি কেটে যাবে।'

সর্বশেষ খবর