মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বিজয় দিবসেই মেট্রোরেলের শুরু

মানিক মুনতাসির

বিজয় দিবসেই মেট্রোরেলের শুরু

দেশের প্রথম মেট্রোরেলে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী চলাচল শুরু হবে আগামী বিজয় দিবসে। রেলপথের উত্তরা থেকে মিরপুর অংশে প্রায় প্রতিদিনই ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হচ্ছে -রোহেত রাজীব

অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তির দিন শেষ হতে চলছে ঢাকাবাসীর। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস থেকেই স্বপ্নের মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবেন নগরবাসী। চলতি বছরের শেষে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের লক্ষ্য স্থির করেই এগিয়ে চলছে এ প্রকল্পের কাজ। তবে মিরপুর, শ্যাওড়া পাড়া ও কাজী পাড়ার অংশে স্থাপিত মেট্রোরেলের ল্যান্ডিং স্টেশনের একটা বড় অংশ ঢেকে দেবে মিরপুরের ফুটপাথ। এমনিতেই নগরীর ফুটপাথ বেদখল। এরপর যেটুকু রয়েছে তার ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে মেট্রোরেলের ল্যান্ডিং স্টেশনের একাংশ। এতে পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্য পারাপারের সুবিধা বিঘ্নিত হবে বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

অবশ্য এ নিয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের দেনদরবারও চলছে। অবশ্য মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলছে, খুবই দ্রুতই তা কেটে যাবে এবং নির্ধারিত সময় ডিসেম্বরের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী চলাচল শুরু করবে মেট্রোরেল। বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হচ্ছে উত্তরা থেকে মিরপুর অংশে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ জানায়, মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের কাজ প্রায় শেষ। এ প্রকল্পের লাইন-৬ এর উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের হলঘরের ছাদ, প্ল্যাটফরমের ছাদ, ইস্পাতের ছাদ ও আইকনিক স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত ৯৩ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন,  মেট্রোরেল ঢাকাবাসীর জন্য ‘একটি স্বপ্নের গণপরিবহন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ গতিতে নির্মাণকাজ অব্যাহত থাকলে চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতে পারব। উত্তরা সেক্টর-৩ ও মতিঝিলের মধ্যে এ এলিভেটেড রেললাইন নির্মাণও প্রায় শেষদিকে। অবশ্য লাইন-৬ এর বর্ধিত অংশ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তার কাজও চলছে।

সূত্র জানায়, উত্তরা থেকে মতিঝিল-কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত মোট ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার মেট্রোরেলের এলিভেটেড অংশের নির্মাণকাজও প্রায় শেষ হয়েছে। এ অংশের কাজ এগিয়েছে প্রায় ৭৯ ভাগ। অন্যদিকে উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের মধ্যবর্তী রেললাইনের ৯২ দশমিক শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন-৬ এর কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ ভাগ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের ৭৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ অংশে নয়টি স্টেশনের প্রবেশ ও এক্সিট পথের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ছয়টি স্টেশনের প্রবেশ ও (এক্সিট) বের হওয়ার পথের নির্মাণকাজও প্রায় শেষের দিকে। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য এমআরটি-৬-এর প্রতিটি স্টেশনের উভয় পাশে এলিভেটর, এস্কেলেটর ও সিঁড়ি বসানোর কাজ চলছে।

জানা গেছে, এপ্রিল পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন-৬ এর কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ শতাংশ। এ অংশের দূরত্ব ৪ দশমিক ৯২২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও চারটি স্টেশনের (শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল) নির্মাণকাজ কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ সিপি-০৬ এর নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত ২০১৮ সালের ১ আগস্ট থেকে শুরু করে। বর্তমানে এই কাজের সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে। মেট্রোরেলের মাধ্যমে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। উত্তরা থেকে মতিঝিল যাত্রার দুই ঘণ্টার সময় কমিয়ে আনবে ৪০ মিনিটে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অন্তত ১ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর