মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

যাত্রাবাড়ীর নবীনগরে গ্যাসের সংকট চরমে

দিনের বেশির ভাগ সময় গ্যাস থাকে না। যখন থাকে চাপও থাকে খুব কম

শামছুল হক রাসেল

যাত্রাবাড়ীর নবীনগরে গ্যাসের সংকট চরমে

রাজধানীর গুলশানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকার বাসিন্দা ওবায়দুল হক সোহেল। আগে নিয়মিত সকালে বাসা থেকে নাস্তা করে অফিসে যেতেন। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এখন আর সেই সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। বর্তমানে তাকে বাইরে কোথাও নাস্তা করে অফিসে যেতে হচ্ছে। এতে তার দৈনন্দিন খরচও অনেকটা বেড়ে গেছে। এখন বাইরে নাস্তা করার কারণ হলো তার বাসায় সকালে গ্যাস থাকে না বললেই চলে। কখনো আসে দুপুরে, আবার অনেক সময় মধ্যরাতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর অনেক এলাকায় এখন নিয়মিত গ্যাস থাকে না। দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকায়ও একই অবস্থা।

একই কথা বললেন নবীনগরের গৃহিণী উম্মে সালমা পপি। প্রায় দুই মাস ধরে গ্যাস সংকটের কারণে তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি করলেন। পপি বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে রান্নাবান্নার সময়েও পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছি। আগে প্রতিদিন সকালে নাস্তা তৈরির পরপরই দুপুরের খাবার রান্না করতাম। কিন্তু গ্যাস না থাকার কারণে গত দুই-তিন মাস ধরে রাত ১১টার পর পরের দিনের দুপুরের খাবার তৈরি করি। এতে করে বাসার গৃহকর্মীর আসা-যাওয়ার সময়েও পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছি।

এ বিষয়ে অত্র এলাকার (ডিসিসির ৫০ নম্বর ওয়ার্ড) কাউন্সিলর আলহাজ মো. মাসুম মোল্লা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গ্যাস সংকটের বিষয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত অভিযোগ পাচ্ছি। এ সংকট এখন চরমে। রান্নাবান্না করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। আমি নিজেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি।

জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রায় ১৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। তার বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহ করতে পারছে ১৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। অর্থাৎ ঘাটতি থাকছে ৩০ কোটি ঘনফুট। মূলত এ কারণেই এমন সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর নবীনগর নয়, শনিরআখড়া, মানিকনগর, অভয়দাস লেন, টিকাটুলী, গোপীবাগ, কমলাপুর, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, মুগদা, মান্ডাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সংকট চলছে প্রতিদিনই। দিনের বেশিরভাগ সময় গ্যাস থাকে না এসব এলাকায়। এমনটাই বলছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া যেসব এলাকায় গ্যাস রয়েছে, সেখানেও স্বল্প চাপ বিরাজ করছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। সম্প্রতি গ্যাস সংকটের সমাধান চেয়ে  কয়েকটি এলাকায় মানববন্ধনও করেছেন ভুক্তভোগীরা।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ শাখা-দক্ষিণ) প্রকৌশলী মো. শবিউল আওয়াল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গ্যাস সংকট এখন জাতীয় সমস্যা। স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ায় গত তিন মাস সরকার এলএনজি কেনা বন্ধ রেখেছে। এ কারণে গ্যাসের চাপ কম। আমরা যা পাচ্ছি, সেটাই বিতরণ করছি। কবে নাগাদ সমাধান হবে তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর