মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রেলস্টেশনে কমেছে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য

রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ এবং বের হওয়ার ফটক একটিই। ফলে থানার ভিতর দিয়ে লোকজনের চলাচলের সুযোগ নেই। এতে রেলওয়ে স্টেশন এবং থানার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রেলস্টেশনে কমেছে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য

সন্ধ্যা নামলেই রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনজুড়ে অপরাধীদের ব্যাপক তৎপরতা ছিল। মাদকসেবী ও কারবারিদের দখলে ছিল পুরো এলাকা। ছিঁচকে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত অহরহ। বর্তমানে রেলওয়ে থানা পুলিশ স্টেশন ও প্ল্যাটফরম এলাকায় অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এতে কমেছে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য।

২০১৩ সালের ২ মার্চ গভীর রাতে যাত্রীবেশে একদল যুবক ঢুকে পড়েন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে। তারা প্ল্যাটফরমে দাঁড়ানো সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান। নাশকতার আগুনে পুড়ে যায় ট্রেনের তিনটি কোচ। ওই আগুনে রেলের ক্ষতি হয় প্রায় ৩ কোটি টাকা। সময় যতই গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। পুলিশ বলছে, সবার আগে যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি সম্পদ রক্ষার দায়-দায়িত্বও তাদের কাঁধে। এখন রাজনৈতিক নাশকতার শঙ্কা না থাকলেও সার্বিক বিষয় মাথায় রেখেই নিরাপত্তায় সজাগ রেলওয়ে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে রাজশাহী স্টেশন এলাকায় অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।

রেলওয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনের গেট দিয়ে সাধারণ মানুষের বেশে স্টেশন এলাকায় ঢুকতেন অপরাধীরা। অপকর্ম ঘটিয়ে সার গুদামের পূর্ব পাশের পকেট গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতেন। থানার সামনে দিয়েও অনায়াসে ঢুকে পড়তেন প্ল্যাটফরমে। অপকর্ম করে এই পথ দিয়ে চলে যেতেন নির্বিঘ্নে। তবে স্টেশনে আসা-যাওয়ার এসব ফটকে এখন তালা ঝুলছে। এখন আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে প্রধান ফটক দিয়ে।

রাজশাহী রেলওয়ে থানা পুলিশ জানিয়েছে, স্টেশনে অপরাধ নির্মূলেও খগড়হস্ত তারা। গত ৩ আগস্ট থেকে স্টেশনজুড়ে চিরুনি অভিযান চলেছে। গ্রেফতার হয়েছেন ২০ জন। চুরি, দস্যুতার চেষ্টা, মাদকসেবন ও বিক্রি, টিকিট কালোবাজারিসহ নানা অপকর্মে সাতটি মামলাও হয়েছে। পুলিশের কঠোরতায় অপরাধীরা এলাকাছাড়া। গত ২৮ অক্টোবর দলবল নিয়ে থানায় চড়াও হন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রাজা। অপরাধীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বন্ধ দরজাগুলো খুলে দেওয়ার দাবি তার। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি পুলিশ। সেদিনই পশ্চিম রেলের জিএম সেখানে যান। তিনি পুলিশকে আরও কঠোর হওয়ার তাগিদ দেন।

প্রতিদিন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তনগর, বিরতিহীন, কমিউটার ও মালবাহীসহ ৪০টি ট্রেন চলাচল করে। রাজশাহী থেকে হাজারো যাত্রী পাড়ি দেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। পাকশী রেলওয়ে পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন জানান, দেশের যে কটি রি-মডেলিং স্টেশন আছে তার মধ্যে রাজশাহী একটি। এসব রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ এবং বের হওয়ার ফটক একটিই। ফলে থানার ভিতর দিয়ে লোকজনের চলাচলের সুযোগ নেই। এতে রেলওয়ে স্টেশন এবং থানার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়।

সর্বশেষ খবর