মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পথে পথে পানির ‘ফোয়ারা’

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম 

পথে পথে পানির ‘ফোয়ারা’

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির অন্যতম উৎস কাপ্তাই লেকে দেখা দেয় পানি স্বল্পতা। হালদা নদীর পানিতে দেখা দেয় অস্বাভাবিক মাত্রায় লবণাক্ততা। ফলে কমেছে ওয়াসার পানি উৎপাদন। বিঘ্ন ঘটে পানি সরবরাহে। কিন্তু পানির এমন সংকটেও নগরের বিভিন্ন জায়গায় ওয়াসার পাইপ ফেটে ভল্ব জ্যাম হয়ে বিরতিহীনভাবে বের হচ্ছে পানি। যেন পথে পথে বসানো হয়েছে পানির ফোয়ারা। এসব পাইপ দিয়ে অনবরত পানি বের হয়ে নষ্ট হচ্ছে প্রচুর পানি।  

নগরবাসীর অভিযোগ, তীব্র গরমে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। অনেক এলাকায় পানির সংকট এবং অনেক এলাকার পানি লবণাক্ত। অথচ এমন সময়ে ওয়াসার পাইপ ফেটে অনবরত পানি বের হচ্ছে। অপচয় হচ্ছে পানি। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ফলে পাইপ ফেটে পানি নষ্ট হচ্ছে। গত এক মাসে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পাইপ ফেটে পানি বের হওয়ার অনেক ঘটনা ঘটে। গত ২১ মে নগরের বহদ্দারহাট হাজী চাঁন মিয়া সড়কে ওয়াসার পাইপলাইন ফেটে ভেসে যায় সড়ক। পাইপটি ফেটে হঠাৎ ৭ ফুট উচ্চতায় পানি উঠে যায়। পরে তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। গত ৩০ মে নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে ওয়াসার পাইপ ফেটে প্রধান সড়কসহ আশপাশের এলাকা পানিতে ভেসে যায়।

দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র বেগে পানি বের হওয়ায় সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি হয়। এর ১৫ দিন আগে নগরের নন্দনকানে ডিসি হিলের সামনে প্রধান সড়কে পাইপলাইন ফেটে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়। ১ জুন নগরের মুরাদপুর মোড়ে পাইপ ফেটে তীব্র বেগে বের হয় পানি। গত ২৫ মে দামপাড়া নার্সারি মোড়ে বের হয় পানি। এভাবে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পাইপ ফেটে পানি অপচয় হচ্ছে। 

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, সব জায়গায় পাইপ ফাটেনি। কিছু জায়গায় ভাল্ব জ্যাম হয়ে পানি বের হয়েছে। এখন বিষয়গুলো মনিটরিং করে ঠিক করা হচ্ছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে ওয়াসার ১ হাজার ১০২ কিলোমিটার পাইপলাইন আছে। এর মধ্যে ৭০০ কিলোমিটার লাইন নতুন করে পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকিগুলো পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি এ সমস্যা আর হবে না। 

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। বর্তমানে নগরে দৈনিক পানির চাহিদা ৪৬ থেকে ৪৮ কোটি লিটার। ওয়াসা চারটি পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক প্রায় ৪৭ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার ইউনিট-১ ও ইউনিট-২ থেকে দৈনিক ২৮ কোটি লিটার পানি। মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার এবং মোহরা পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর