বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের বেশির ভাগ কাউন্সিলর আত্মগোপনে রয়েছেন। কাউন্সিলররা ওয়ার্ড কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন, নাগরিক, চারিত্রিক, উত্তরাধিকারী (ওয়ারিশ), বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার সত্যায়িত সনদসহ ১৪ ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন করপোরেশন এলাকার নাগরিকরা।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা আত্মগোপনে চলে যান। এরপরই জনপ্রতিনিধি শূন্য হয়ে যায় সিটি করপোরেশন। সেবাবঞ্চিত হন নাগরিকরা। এ অবস্থায় গত ১৯ আগস্ট ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় সেবা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন সাধারণ মানুষ। মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকায় বর্জ্য অপসারণ, মশক নিধন, স্বাস্থ্যসেবা ও জন্ম-মৃত্যু সনদের কার্যক্রমসহ সব ক্ষেত্রে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। তবে প্রশাসক নিয়োগ হওয়ার পর সব কিছু সচল হলেও সেবা নিতে সমস্যায় পড়তে হয় বলে জানায় নগরবাসী। দুই সিটির অধিকাংশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বিভিন্ন কর্মকর্তারা এখনো আত্মগোপনে থাকায় সেই জায়গাগুলোতে কাজের গতি কমে গেছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১৭২ কাউন্সিলরের মধ্যে ১৮ জন ছাড়া অন্য কাউন্সিলররা অফিস করছেন না। বেশির ভাগ কাউন্সিলর অফিস না করার প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। কারণ, ঠিকমতো বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। কাজের মনিটরিংও হচ্ছে না। একইভাবে মশক নিধনের লোকদের দেখা নেই, মশার উৎপাত বেড়েছে, ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না। কিন্তু সেই অভিযোগ জানানোর জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরের দেখা মিলছে না।
নগরবাসীর অভিযোগ, এ মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। কিন্তু মেয়র-কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতিতে পূর্ব প্রস্তুতির কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া নাগরিক সনদ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ ১৭ ধরনের সনদ ইস্যু করার কাজ করা যাচ্ছে না। মেয়র-কাউন্সিলররা অনুপস্থিত থাকলেও নাগরিক সেবা ঠিক রাখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সড়ক বাতি, মশক নিধন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা জরুরি। প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে এ সমস্যা খুব একটা সমাধান হবে না বলে মনে করেন তারা।