বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কামিজে স্বাচ্ছন্দ্য

কামিজে স্বাচ্ছন্দ্য

► মডেল : শান্তা জাহান ► ছবি : রাফিয়া আহমেদ

পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কামিজের কোনো জুড়ি নেই, যে কোনো জিন্স বা পাল্লেজোর সঙ্গে পরিধান করা যায়। তবে তা হওয়া চাই ফ্যাশনের সঙ্গে মানানসই এবং আরামদায়ক।

 

ভ্যাপসা গরম, প্রচন্ড রোদের তাপ। যাই বোঝানো হোক, অনুভূতি কিন্তু একটাই- গরম। প্রকৃতি আরামদায়ক হলেও গরম কমেনি। এমন আবহাওয়া বা পরিবেশে কেমন পোশাক পরব? কী ধরনের পোশাক মানাবে? আর সাজটা কেমন হওয়া উচিত? প্রশ্নগুলো কিছুটা হলেও ভাবায়। হালকা রং, পাতলা কাপড়, আরামদায়ক কাট। একটু আরাম পেতে এসব বাঞ্ছনীয়। আর তাই ফ্যাশনপ্রিয়দের তালিকায় সিঙ্গেল কামিজ বেশ ভালোভাবেই জায়গা দখল করে নিয়েছে।

 

একটা সময় মেয়েরা সালোয়ার কামিজের সঙ্গে মিলিয়ে বানিয়ে পরতেন। তখন রেডিমেড কাপড় এতটা প্রচলিত ছিল না। সেই সঙ্গে সালোয়ার কামিজের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা বা তিন সদস্যের এই পোশাককে একসঙ্গে টিকিয়ে ব্যবহার করার বিষয়টিও কষ্টসাধ্য। দেখা যায়, কামিজ ঠিক আছে, ওড়নার হয়তো রং নষ্ট হয়ে গেছে। মূলত ফ্যাশন এবং অর্থ সাশ্রয়ের ব্যাপার মাথায় রেখেই মেয়েরা এটা করতেন। মধ্যে আবার বেশ চল ছিল থ্রি-পিসের। ফ্যাশন সদা পরিবর্তনশীল। এখন সিঙ্গেল কামিজ হয়ে উঠেছে মেয়েদের আরামদায়ক পোশাক। ফ্যাশনের তালিকায় এর স্থান অন্যান্য পোশাকের তুলনায় বেশ এগিয়ে। পাল্লেজো বা জিন্সের সঙ্গে চাইলেই পরে নেওয়া যাচ্ছে সিঙ্গেল কামিজ। মানিয়েও যায় বেশ।

 

পোশাক যেমন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ, তেমনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধেরও বিষয়। সিঙ্গেল কামিজ তেমনই একটি পোশাক। তবে পোশাকটির কাটছাঁট দেশীয় বা পাশ্চাত্য; যে দেশেই হোক না কেন, কাপড় হতে হবে পাতলা। ফ্যাশনের সঙ্গে সঙ্গে যেন আরামটাও পুরোপুরি পাওয়া যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শিফন, সুতি, ক্রেপ, জর্জেট, সিল্ক, মসলিন, তসর, নেট কিংবা জরজেটের সিঙ্গেল কামিজ। পছন্দসই কোনো জিন্স, জেগিংস, লেগিংস বা পাল্লেজোর সঙ্গে পরা যাবে এই কামিজগুলো। জিন্স কিংবা পাল্লেজো ছাড়াও সিঙ্গেল কামিজ পরা যাবে ধুতি-পায়জামার সঙ্গেও।

 

বেশ কিছুদিন ধরে খুব খাটো ঝুলের কামিজের রাজত্ব চলছে। তবে এখন এটি পরলে বেশ অদ্ভুতই দেখাবে। সঙ্গে ঢিলেঢালা কাটের সালোয়ারের চলও এখন নেই। কামিজে এখন লং ও সেমি লং ঝুলের চল এসেছে। আর সালোয়ার হয় পাতিয়ালা নয় চুড়িদার পরছেন সবাই। এ ছাড়া লেগিংস ও পাল্লেজোর জনপ্রিয়তা তো আছেই। মাঝখানে একটু কম ঘেরের কামিজের চল এসেছিল, এখন আর তা কেউ অনুসরণ করছেন না। বেশি ঘেরের কামিজই এখন ফ্যাশনেবল। এখনকার ট্রেন্ড অনুসরণ করলে ফ্রক ছাঁটের কামিজ।

 

কাজের ক্ষেত্রে সুতার কাজকে প্রাধান্য দিলে পোশাকটি ভারী বোধ হবে না। দিনের বেলার জন্য পিচ, লেবু, সাদা, প্যাস্টেল রংগুলো বেছে নিন। তবে অনেকেই উজ্জ্বলতার ছোঁয়া রাখতে চান পোশাকে। সে ক্ষেত্রে পোশাকের মূল রং হালকা রেখে নকশাগুলোকে একটু উজ্জ্বল রং দিতে পারেন। চাইলে নেটের ওপর অ্যাপ্লিকে করতে পারেন, তাতে ভালো লাগবে। ছাপা কাপড়ও বেছে নিতে পারেন। গরমের পোশাকে ছাপা নকশাই সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দেয় বলে মনে করেন ডিজাইনার রামিম রাজ। শিফন, ক্রেপ, সিল্ক, লিনেন সব ধরনের কাপড়ের ওপরই ফুল, জ্যামিতিক ছাপা নকশাসহ অনেক ধরনের নকশাই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। কাটটা একটু ভিন্ন ধরনের করতে পারেন। আর একসময় কামিজে লেইস ব্যবহারের যে হিড়িক পড়েছিল তা ধীরে ধীরে কমে এসেছে। এখন লেইস ব্যবহার করলেও পোশাকে তার প্রাধান্য থাকছে কম।

 

সময় এবং আবহাওয়া পরিবর্তনে বদলে যায় সাজও। শরতের এ সময় দিনের বেলা গরমে যেমন গাঢ় সাজ মানানসই নয়, তেমনি অন্যদের চোখেও তা দৃষ্টিকটু। তাই তো এ সময়ের সাজে স্নিগ্ধ ভাব থাকা চাই। এ আবহাওয়ায় হালকা মেকআপই ভালো। পরিবর্তন এসেছে অনুষঙ্গেও। এ যুগে কারও কাঁধে আর ছোট ব্যাগ ঝুলতে দেখা যাচ্ছে না। হাতের ক্লাচটিও আগের থেকে অনেক বড় আকৃতি ধারণ করেছে। কানের দুল বা মালার চেয়ে হাতে বড় আংটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে এখন। গলায় পেন্ডেন্টের স্থান দখল করে নিয়েছে বিব নেকলেস। বেল্টের ঘড়ি না পরে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন চেইনের হাতঘড়ি।

 

বিশ্বরঙ, রং বাংলাদেশ, অঞ্জন’স, কে ক্রাফট, দেশাল, আড়ং, নাগরদোলাসহ দেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাচ্ছে সিঙ্গেল কামিজ। দামও সাধ্যের মধ্যে। ব্যস্ততার জন্য এখন অনেকেরই সময় হয়ে ওঠে না মার্কেট ঘোরার। তাই ঘরে বসেও অর্ডার করা যাবে অনলাইনে।

 

লেখা : ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর