বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কেন হাঁটবেন?

কেন হাঁটবেন?

হাঁটা মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষ যত কাজ করে তার মধ্যে হাঁটা নিঃসন্দেহে প্রধান কাজ। তাই কেউ যদি হাঁটা বন্ধ করে দেয় তবে তার শারীরিক কর্মকা- উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। ফলশ্রুতিতে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

 

হাঁটার জন্য প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। শুধু দরকার শারীরিক যোগ্যতা। সুস্থ্য সবল ব্যক্তির হাঁটার যোগ্যতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কেউ যদি দীর্ঘসময় হাঁটা থেকে বিরত থাকেন তবে তার ওজন বৃদ্ধি পাবে, পায়ের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়বে, পায়ের অস্থিমজ্জা বা জোড়ার বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে হাঁটার যোগ্যতা কমে যাবে। ফলে রক্তে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যক্তি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হবে। রক্তনালি ও হৃৎপিন্ডে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে এর সঙ্গে  ডায়াবেটিস ও চর্বির মাত্রা বৃদ্ধি হয়ে ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই শারীরিক যোগ্যতা থাকতে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন, তা না হলে প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

 

হাঁটা এমন একটি শারীরিক কর্মকা- যার প্রভাবে শরীরের মাংসপেশি সচল থাকে। মাংসপেশি সচল হওয়ার ফলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, রক্তনালির সংকোচন ও প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ফলে হার্ট অধিক রক্তপাম্প করতে পারে। রক্তনালির সংকোচন ও প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটিয়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে। হাঁটার জন্য যে শক্তি ব্যয় হয় তার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায় না, অর্থাৎ স্বাভাবিক ওজন বজায় থাকে। অধিক শক্তি ব্যয় হওয়ায় রক্তে চর্বি ও সুগারের পরিমাণ ঠিক থাকে। হাঁটার মতো পরিশ্রমের ফলে মানুষের খাদ্য গ্রহণে অরুচি, অনিদ্রা দূরীভূত হয়।

 

হাঁটা যেমন রোগ প্রতিরোধ করে তেমনি এটা পাশর্^প্রতিক্রিয়ামুক্ত। হাঁটা একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি যার কোনো বিকল্প নেই। তবে যারা এসব উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের হাঁটার যোগ্যতা কমে যায়। তাই শারীরিক যোগ্যতা বজায় থাকা অবস্থায় হাঁটা শুরু করুন। অন্যথায় পরবর্তীতে হাঁটতে না পারায় এসব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে। যারা হৃদরোগে আক্রান্ত তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাঁটতে হবে, না হলে হাঁটতে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি হৃদরোগে আক্রান্ত না হন তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত শারীরিক দক্ষতা বুঝে হাঁটতে পারবেন। তবে যাদের দীর্ঘদিন হাঁটার অভ্যাস নেই তারা প্রাথমিক অবস্থায় ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করুন। এতে হাঁটার যোগ্যতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত হাঁটার ফলে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে জটিলতা কমবে এবং শারীরিক যোগ্যতা বৃদ্ধির ফলে বাতব্যথা, অস্থিক্ষয়, আর্থ্রাইটিস, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, অরুচি, যৌন অক্ষমতা প্রতিরোধ হবে।

 

লেখক : ডা. এম শমশের আলী, (কার্ডিওলজিস্ট), সিনিয়র কনসালট্যান্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর