বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

পুজোর পোশাক

পুজোর পোশাক

► মডেল : বৃষ্টি, কৃতি ও জাহিদ ► ছবি : মুন্তাকিম ► পোশাক : রঙ বাংলাদেশ

শরৎ মানে পুজো, আর পুজো মানে আনন্দ, হই-হুল্লোড়। শারদীয় উৎসবের রং লাল, সঙ্গে থাকে সাদা রঙের আধিক্য। পুজোর ধুমধাম, আনন্দের সঙ্গে এসব রঙের সখ্যই বেশি। পাশাপাশি বাহারি রঙের পোশাকে উৎসব জমে উঠবে ষষ্ঠী থেকে দশমীর দিনগুলোয়।

 

শারদ এলে আসে দুর্গোৎসব। বৃষ্টিভেজা সবুজ মাড়িয়ে প্রকৃতি সাজে এক অনন্য রূপে। মেঘের ভেলা ভিড় জমায় কাশবনে। চারপাশে থই থই করা জলে শাপলা-কমল করে জলকেলি। প্রকৃতি নিজেই সবাইকে ডাকে উৎসব আনন্দে মেতে উঠতে। মন্দিরে মন্দিরে পড়ে উলুধ্বনি। ঢাকঢোলে তাল তোলে ঢাকির হাতের কাঠি। এমন সময় মনকে নিশ্চয় বেঁধে রাখা যায় না। নিজেকে পরিচ্ছন্ন রূপে সাজিয়ে মাকে অঞ্জলি দানেই মিটে তৃপ্তি। মায়ের সামনে কীভাবে যাব, সাজ কেমন হবে তা নিয়ে থাকে হাজারটা প্রশ্ন।

 

আর অল্প বয়সীদের জন্য পুজো তো ফ্যাশন র‌্যাম্প। সারা বছর পত্রিকা ঘেঁটে জেনে রাখা ট্রেন্ডগুলো ট্রাই করার সুবর্ণ সময়। নিজের রুচি, পছন্দ মিলেই তো হবে নিজস্ব ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। তবে ফ্যাশন মানেই শুধু পোশাক নয়। ফ্যাশন বা সাজ একটা সাধ আর সাধ্যে সংমিশ্রণ। পোশাক, ব্যাগ, জুতো, এক্সেসরিজের তালমেল। তবেই না আপনার রুচির নিখুঁত পরিচয় পাওয়া যাবে।

 

যে কোনো উৎসব মানেই সাজ-পোশাকের একটা আলাদা মহিমা থাকে। ড্রেস কোডের এ যুগে পুজোর পোশাকেও বেশ স্বতন্ত্রতা চলে এসেছে। লালপেড়ে শাড়ি বা জামদানি শাড়ির সঙ্গে কীভাবে যেন গাঁটছড়া বেঁধে গেছে পুজোর দিনগুলোর। তবে মহামারীর কাল আমাদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবন-যাপনে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়েছে।

 

মহামারীর প্রাক্কালে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে রঙ বাংলাদেশ-এর কর্ণধার সৌমিক দাস বলেন, শারদীয় আয়োজনকে অনিন্দ্য সুন্দর করতে থিম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে আলপনা, শতরঞ্জি ও মানডালা। এবারের শারদ কালেকশন তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক কাপড়ে। মূলত তাঁতে বোনা সুতি কাপড়, লিলেন, কটন, হাফসিল্ক। এবার মূল রং হিসেবে বেছে নিয়েছে সাদা, অফ হোয়াইট, লাল, নীল, মেজেন্টা, গোল্ডেন, তামা ও অরেঞ্জ। পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, টাইডাই, মেশিন অ্যামব্রয়ডারি, হাতের কাজ দিয়ে।

 

দেবীর বোধনে পুজো শুরু হয় ষষ্ঠী দিয়ে। তবে পুজোর প্রথম দিন ধরা হয় সপ্তমীকে। আর তাই সপ্তমীর সকালে তাঁতের শাড়ির সঙ্গে বেছে নিন কোনো ডিজাইনার ব্লাউজ, যা আপনাকে করে তুলবে ট্রেন্ডি আর সবার থেকে আলাদা। সপ্তমীর রাতের জন্য বেছে রাখুন কোনো সিল্ক শাড়ি। হতে পারে তা ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্ক বা ইক্কত সিল্ক। সঙ্গে সোনা, রুপা বা ইমিটেশনের ভারী গয়না। হাতভর্তি চুড়ি।

 

অষ্টমীতে থাকে কুমারী পুজো। অষ্টমীর রাতের জন্য বেছে রাখুন একটু জমকালো শাড়ি। আমাদের ঐতিহ্যবাহী মিরপুরের বেনারসি বা কাঞ্জিভরম হতে পারে আপনার পছন্দ। জমকালো শাড়ির সঙ্গে একটু ভারী মেকআপ সঙ্গে মিলিয়ে জুয়েলারিতে আপনি হয়ে উঠবেন উৎসবের মতোই ঝলমলে।

 

এরপর নবমী, পুজোর তৃতীয় দিন। দিনের বেলায় বেছে নিন কাঁথাস্টিচ বা মধুবনি শাড়ি। শাড়ি হিসেবে বেনারসি, কাতান বেছে নিতে পারেন। আবার সিল্ক, মসলিনও বেছে নিতে পারেন। শাড়িজুড়ে সুতোয় বোনা গল্পের সঙ্গে একটু ফ্যাশনেবল গয়নায় আপনি সহজেই হয়ে যাবেন অন্য সবার মধ্যে অনন্যা। নবমীর রাতে বেছে নিন সালোয়ার কামিজ।

 

পুজোর শেষ দিন দশমী। দশমী মানেই সিঁদুর খেলা। আবহমান লালপেড়ে সাদা শাড়ির দিন। তবে লাল রঙের সিল্ক, সিল্ক কলমকারি বা গঙ্গা-যমুনা পাড়ের গাদোয়াল শাড়িতেও হয়ে উঠতে পারেন অন্যদের চেয়ে আলাদা। তবে যে শাড়িই পরুন না কেন মিলিয়ে ব্লাউজ আর গয়না পরতে পারেন। চাইলে লেহেঙ্গা, আনারকলি স্টাইলের ড্রেসও পরতে পারেন।

 

পুরুষের শারদীয় উৎসবে পাঞ্জাবিই সেরা। আর পুজোর সময় উত্তরীয়, ধুতি ঐতিহ্যবাহী এবং ফ্যাশনেবল। ছেলেরা ষষ্ঠীতে শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, সপ্তমীতে কুর্তা-পাজামা, নবমী এবং বিজয়া দশমীতে হয়তো ধুতি-পাঞ্জাবি, উত্তরীয় পরতে পারেন। রুচিশীল ডিজাইন, প্রতিটি পোশাক দৃষ্টিনন্দন ও সময়োপযোগী ফ্যাশনেবল করে তুলবে।

 

পুজো উপলক্ষে ফ্যাশন হাউসগুলো নিয়ে এসেছে অসাধারণ সব কালেকশন। কে-ক্রাফট, অঞ্জন’স, রঙ, বাংলার মেলা, দেশাল, সাদাকালো, আড়ং ও বিবিয়ানাসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে রয়েছে পুজোর বৈচিত্র্যময় পোশাকের সমারোহ। এ ছাড়া নিউমার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট ইত্যাদি তো আছেই।

 

লেখা : ফেরদৌস আরা

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর