শিরোনাম
বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

হালকা শীতে ফ্যাশনেবল

হালকা শীতে ফ্যাশনেবল

► মডেল : স্নিগ্ধা ► ছবি : মনজু আলম

শরৎ গেল, হেমন্ত এসে হাজির। শীতের রেশ ধরেই বর্তমান সময়টা কাটানো। সূর্যের তেজ কমতে শুরু করেছে। বাতাসটাও যেন হিমেল প্রকৃতির। খুব বেশি শীতল নয়। তারপরও শীতের আগমন বলে কথা। এমন সময় একটু উষ্ণতা পেলে মন্দ হতো না। শীতের আগের সময়টায় ঠিক এমনটাই মনে হয়। তবে শীতের জবুথবু হয়ে থাকার মতো পোশাকের প্রয়োজনও এখনো পড়েনি। পাতলা কাপড়ের তৈরি ফুলহাতা পোশাকে আসবে ফ্যাশনেবল লুক। আর শীতের লগ্নিক্ষণে এমন পোশাক দেবে বাড়তি আরাম।

 

এই সময়ে সবাই ঝুঁকেন সুতি, খাদি কিংবা ডেনিমের তৈরি হালকা পোশাকে। আজকালের তরুণ সমাজও বেশ সচেতন, তাদের ফ্যাশনে এসব পোশাকই চলছে পুরোদমে। তা ছাড়া হালকা শীতের পোশাকগুলো বেশ স্টাইলিশও বটে। তবে ট্রেন্ডও বদলে যাচ্ছে বছর বছর। বেশি শীতে সোয়েটারের বিকল্প আর কী হতে পারে। কিন্তু হালকা শীতে! চিন্তার কিছু নেই। তরুণ-তরুণীদের জন্য রেডি টু ওয়্যার আউটফিট হিসেবে এবার হালকা শীতে থাকছে জ্যাকেট, কটি, সোয়েটার, ডেনিম, ক্রেপ, শ্রাগ, ওয়েস্টকোট, ডেনিম শার্ট, জ্যাকেট, পাতলা শালসহ হরেক রকম পোশাক। লেয়ারিং ফ্যাশন ট্রেন্ডের আদলে শীত পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে রঙের বর্ণিলতা। হালকা শহুরে শীতে পরার উপযোগী নিট কাপড়ের ইনার পলো, শ্রাগ ও টি-শার্টও ফ্যাশনে ইন।

 

এখনো শীত কম, তবুও শীত পোশাকের বাহারে কমতি নেই। কম ঠান্ডায় পরার উপযোগী করেই বানানো হচ্ছে এ সময়ের পোশাক। চাইলে পুরো হাতার, লম্বা কাটের শ্রাগও পরতে পারেন। তবে পাতলা কাপড়ের তৈরি হলে পরে আরাম পাবেন। গেঞ্জি কাপড় অথবা দু-তিন ধরনের কাপড়ের মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে হালকা শীতের পোশাকগুলো। কামিজ কিংবা পাশ্চাত্য পোশাকের ওপর পরা যাবে অনায়াসে। পলিস্টার উলের তৈরি হাফহাতা টি-শার্ট। যারা পুরো হাতা পরতে চান না, তাদের জন্য আদর্শ। উলের পরশ থাকায় কিছুটা ওমও পাবেন। এমন সময় পাতলা সুতি দিয়ে তৈরি টি-শার্টও পরতে পারেন অনায়াসেই। এটিও এ সময়ের আদর্শ। এ ছাড়াও আঁটসাঁট জিন্স বা জেগিন্স পরার মোক্ষম সময় এখনই। আর যারা পাশ্চাত্য পোশাক পরেন একটু-আধটু, তাদের জন্য বাজারে এসেছে পঞ্চো। যারা শাল পরে আরাম পান না, তারা পঞ্চো পরতে পারেন। এটি শাল ও মাফলারের আদলেই তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু দেখে মনে হবে স্টাইলিশ টপ। কিন্তু যারা জিন্সের সঙ্গে টপ পরেই আরাম পায়, তাদের জন্য বাজারে এসেছে উলের টপ। এই ধরনের টপ বেশ হালকা হয়ে থাকে, কিন্তু কিছুটা ঢিলেঢালা ধরনের হয়।

 

তবে এখনো যেহেতু শীতের প্রকোপ কম, তাই এই সময় সঙ্গী হতে পারে হালকা কিন্তু ফ্যাশনেবল শীতের পোশাক। শ্রাগ, হুটি, লং কটি, পাতলা সোয়েটার বা ভারী ফ্লিশ নিটের রাউন্ডনেক আর ডেনিমই হতে পারে ফ্যাশনিস্তাদের সঠিক স্ট্রিটওয়্যার! আবার এ সময় ভারী পোশাকের পরিবর্তে পরতে পারেন ভারী কাপড়ের টপস, বিভিন্ন ডিজাইনের লং কার্ডিগান বা পাতলা সোয়েটারও। এ সময়ে লেয়ারিংয়ের হালকা ধাঁচের এসব পোশাকের মজা হলো, এতে ভিতরের পোশাকটিও তেমন ঢাকা পড়ছে না। অর্থাৎ সামনের অংশে খোলা কোনো সোয়েটার পরলে ভিতরে পছন্দের ইনার টি-শার্টটিও পরতে পারেন। প্রিয় টি-শার্ট বা টপগুলো গরমের জন্য তুলে রাখার তেমন প্রয়োজন নেই। জ্যাকেট আর শ্রাগের বেলায়ও তাই। সামনের অংশে বোতাম দেওয়া শীতের পোশাক এখন কমই দেখা যাচ্ছে। সোয়েটারের গলাও এখন বেশ বৈচিত্র্যতায় পূর্ণ। তরুণীদের জন্য অ্যাসিমেট্রিক বা অসমান কাটের সোয়েটারও এই শীতে বেশ দেখা যাবে। এক্ষেত্রে জিন্স বা লেগিংসের সঙ্গে লং সোয়েটার ভালোই মানাবে। এ ছাড়াও পরতে পারেন গেঞ্জি কাপড় বা ট্রাউজার কাপড়ের তৈরি হুডিও। এটি একদিকে যেমন হালকা শীতের জন্য আরামদায়ক, আবার হালকা শীতে পরার জন্য ব্লেজার বেশ জনপ্রিয়। যে কোনো পরিবেশে মানানসই। শাড়ি বা সালোয়ার যে কোনো পোশাকের ওপর অনায়াসেই পরা যায় ব্লেজার।

 

একদিকে স্টাইলিশও বটে। পাশাপাশি হালকা শীতে পরার জন্য বাজারেই পাওয়া যায় তিন বা চারটি উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের শেডের নকশার করা পোশাক। ডিজাইনাররা জানালেন, প্রকৃতির ধূসরতা কাটাতেই যেন পোশাকের রংঢঙে এত কারসাজি। এদিকে বছরের অন্য সময়ে যে গাঢ় রং একেবারেই পরা হয় না, সে রঙের পোশাকই শীতে দেবে উষ্ণতা- বললেন কে ক্রাফটের উদ্যোক্তা ও পরিচালক খালিদ মাহমুদ খান। শীতের কাপড়ে সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয় কালো, গাঢ় নীলের মতো জমকালো রং। তবে রাতের বিয়ে বা যে কোনো উৎসবে কালোর সঙ্গে উজ্জ্বল রং যেমন লাল, মেরুন, গোলাপি, ম্যাজেন্টা, নেভি ব্লু, গাঢ় সবুজ ইত্যাদি রঙের প্রিন্ট বা ভারী কাজ করা পোশাকও এনে দেবে দাওয়াতের অনুভব। এ ছাড়া এই সময়ে পোশাকে বিপরীত রঙের প্রাধান্যও বেশ দেখা যায়। কালো বা চকলেট রঙের জ্যাকেট, শ্রাগ বা শালের সঙ্গে গাঢ় সবুজ, নীল বা মেরুন রঙের পোশাক ভিন্নতা নিয়ে আসবে।

 

দেশীয় পোশাক ব্র্যান্ড যেমন নিত্য উপহার, বিশ্বরঙ, কে ক্রাফট, লা-রিভ, জেড অ্যান্ড জেড কালেকশসহ অন্যান্য হাউসেও এসব পোশাক মিলবে। তাছাড়া বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশান পিংক সিটি, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, বঙ্গবাজার, মিরপুরের মার্কেটগুলোতে মিলবে হালকা শীতের এসব বর্ণিল পোশাক।

 

লেখা : ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর