বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

অপরিমিত খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচরণ এই নীরব ঘাতক ব্যাধির অন্যতম মূল কারণ। ঠিক একইভাবে পরিকল্পিত খাদ্য-ব্যবস্থাপনা এবং সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই পারে একজন ডায়াবেটিস রোগীকে সুস্থ রাখতে।

 

বর্তমান বিশ্বে ঘাতক ব্যাধিগুলোর মধ্যে অন্যতম ডায়াবেটিস। যা নীরবে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। অপরিমিত খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনাচারণ এই নীরব ঘাতক ব্যাধির মূল কারণ। ঠিক একইভাবে পরিকল্পিত খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও সুনিয়ন্ত্রিত জীবনাচরণ একজন ডায়াবেটিস রোগীকে সুস্থ রাখতে পারে বছরের পর বছর।

 

আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং পানির সমন্বয় থাকা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবারগুলো যেভাবে কম পরিমাণে থাকতে হবে তেমনি থাকতে হবে আঁশ ও আঁশযুক্ত খাবার, সুদীর্ঘ সময় ধরে যারা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা অনেক ক্ষেত্রেই হৃদরোগ, স্ট্রোক অথবা কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন এবং সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই এই রোগগুলোর লক্ষণ সুপ্ত থাকে। এক্ষেত্রে খুব সহজেই আমরা বুঝতে পারছি একজন ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। চিনি, গুড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি মিষ্টান্ন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। মিষ্টি ফল, আম, কলা, লিচু, আঙ্গুর, আনার, বেল ইত্যাদি সীমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে। এড়িয়ে চলতে হবে মাটির নিচের সবজি আলু, মুলা, গাজর, কচু, কচুর মুখী ইত্যাদি। পরিহার করতে হবে কোমল পানীয়। এ ছাড়াও যাদের কিছুটা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস তারা কর্নফ্লাওয়ার, কাস্টার্ড পাউডার, শুকনো খাবার যেমন- মুড়ি, চিঁড়া, খই, চানাচুর, খেজুর ইত্যাদি সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি এড়িয়ে চলতে হবে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার। ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিদিন একটি শাক বা পাতাজাতীয় সবজি থাকা বাঞ্ছনীয়।

প্রতিদিন ৩০-৫০ মিনিট শরীরচর্চার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। দিনের বাকি সময়ও হালকা শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখা জরুরি। প্রতিটি ডায়াবেটিস রোগীর ওজন, উচ্চতা, বয়স, শারীরিক পরিশ্রমের হার এবং রক্তের সুগার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্যারামিটারের ওপর ভিত্তি করে খাদ্যতালিকা নির্ণয় করা প্রয়োজন। একজন সুদক্ষ পুষ্টিবিদই পারেন এই খাদ্য পরিকল্পনাটি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে। অন্তত প্রতি ৩ মাসে একবার পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হয়ে একজন ডায়াবেটিস রোগীকে তার দৈনন্দিন খাদ্য-ব্যবস্থাপনার রূপরেখা তৈরি করে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

লেখক :

চৌধুরী তাসনীম হাসিন,

প্রধান পুষ্টিবিদ, ইউনাইটেড হসপিটাল, ঢাকা।

 

সর্বশেষ খবর