বুধবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

হৃদরোগীদের শ্বাসকষ্ট

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

হৃদরোগীদের শ্বাসকষ্ট

হৃৎপিন্ড দুর্বল হওয়ায় শারীরিক প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে শারীরিক কর্মকান্ডের সময়ে রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে।

 

আমাদের দেশে অনেক ব্যক্তিই হৃদরোগে ভুগছেন, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা। কেউ উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ, কেউবা ডায়াবেটিসজনিত হৃদরোগ, কেউ হয়তোবা করোনারি আর্টারি ব্লকজনিত হৃদরোগ, আবার কেউ কেউ রিং অথবা বাইপাস-পরবর্তী হৃদরোগে ভুগছেন। এসব ছাড়া আরও অনেক ধরনের হৃদরোগ যেমন- কার্ডিওমাইওপ্যাথি, হার্টের ভাল্বের সমস্যা, থাইরয়েড হরমোনজনিত হৃদরোগ, মাতৃত্বকালীন হৃদরোগ, বাতব্যথা থেকে হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাক-পরবর্তী হৃদরোগ ইত্যাদি।

আপনি যে ধরনের হৃদরোগেই ভুগেন না কেন সব ধরনের হৃদরোগের উপসর্গ প্রায় একই রকম, বিশেষ করে যখন রোগ পুরনো ও জটিল অবস্থায় পর্যবসিত হয়। চিকিৎসার মাধ্যমে হৃদরোগ একটা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। হৃদরোগ চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো রোগীকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে সক্ষমতা দান করা, রোগের উপসর্গ থেকে রোগীকে মুক্তি দান করা, রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করা এবং সর্বোপরি রোগীকে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে দূরে রাখা।

আপনি যদি কোনোরূপ হৃদরোগে ভুগতে থাকেন তার মানে এই নয় যে, আপনি সামাজিক কর্মকান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে ঘরে বসে বিশ্রামে থাকবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন। বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হলো যে, হৃদরোগীরা প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন, তারাও সামাজিক সব ধরনের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, যেমন চাকরি অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশোনা করতে পারবেন, প্রায় সব ধরনের খাদ্যবস্তু পরিমিত মাত্রায় খেতে পারবেন, তবে কিছু কিছু বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন- উত্তেজিত হওয়া, অত্যধিক মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টিকারী কাজকর্ম, বিশ্রাম গ্রহণ না করে দীর্ঘ সময় ধরে একটানা কাজ করা ইত্যাদি। খাবারের মধ্যে চর্বিজাতীয় খাবার বিশেষ করে পশুর চর্বি বর্জন করতে হবে। তবে চর্বি বহীন গরু-ছাগলের মাংসও একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় খাওয়া যাবে এবং খেতে হবে চর্বিবিহীন হাঁস-মুরগির মাংস। প্রায় সব ধরনের মাছ খেতে পারবেন। সপ্তাহে দুই-একটা ডিম ও কেজিখানেক দুধও খাওয়া যাবে। এছাড়াও প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফলমূল খেতে হবে।

 যারা হৃদরোগে ভুগছেন তাদের মধ্যে প্রায় সবাই কোনো না কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধপত্র গ্রহণ করছেন, এটাই স্বাভাবিক। তাদের মধ্যে অনেককেই দেখা যায় যে, ওষুধপত্র গ্রহণ করার পরও হৃদরোগের বিভিন্ন উপসর্গে ভুগতে থাকেন। এক্ষেত্রে বলা যায় যে, আপনার চিকিৎসা সঠিক মাত্রায় হচ্ছে না, এর জন্য আপনাকে আবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যদি আপনার ঘনঘন শ্বাসকষ্ট হতে থাকে, সামান্য চলাফেরা বা হাঁটাহাঁটিতে শ্বাসকষ্ট হয়, সিঁড়ি বেয়ে দুই-তিন তলায় উঠতে গেলে আপনি প্রচন্ডভাবে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর