বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনাকালে ভ্রমণ সতর্কতা

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু (নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ)

করোনাকালে ভ্রমণ সতর্কতা

করোনার ভ্যাকসিন চলে এলেও মহামারীর কাল শেষ হয়ে যায়নি। তবে এর ভিতরে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা মেনে চললে কিছুটা হলেও ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

 

জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে, শখে কিংবা মানসিক চাপ কমাতে মানুষকে ভ্রমণ করতে হয়। তবে করোনা মহামারীর মুহূর্তে বাস, বিমান, লঞ্চ, ট্রেন, গাড়ি কিংবা রিকশা যাতেই চড়েন না কেন অবশ্যই বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন। বিশেষত যাদের হৃদরোগ, অ্যাজমা, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ,  ক্যান্সার, ব্লাড ক্যান্সার, ডায়াবেটিক, কিডনি বা লিভার ডিসিজ আছে, বয়স ৫৫ বছরের ওপরে তাদের চিকিৎসা ও অত্যাবশকীয় কারণ ছাড়া ভ্রমণ করা অনুচিত।

ভ্রমণকালে জনবহুল/গণসমাগমস্থল যেমন সিনেমা হল, পার্ক, মেলা, প্রদর্শনী, জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুল ইত্যাদি স্থানে গমন করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত বাস, ট্রেন, লেগুনা, লঞ্চ, ফেরি, সিএনজি ব্যবহার যথাসম্ভব পরিহার করুন। মনে রাখবেন জনবহুল এলাকা, গণসমাগমস্থল ও গণপরিবহন, বার ও রেস্টুরেন্ট, মার্কেট ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান।

গণপরিবহনে চলার সময় যথাসম্ভব পরিবহনে হাতল, দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের ধরার জন্য ছাদ থেকে ঝুলানো লোহার হাতল ধরা পরিহার করুন। কারও সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় শারীরিক সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকুন।

সবসময় অন্যদের থেকে ৬ ফুট দূরে থাকবেন। টাকা ধরলে সাবান দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন, সম্ভব হলে মানিব্যাগ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। বাইরে থেকে এসে কোথাও না বসে সরাসরি বাথরুমে গিয়ে ব্যবহৃত কাপড় সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রাখুন।

ভ্রমণকালে অবশ্যই সবসময় মাস্ক ব্যবহার করুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ৬০% অ্যালকোহলযুক্ত ব্যবহার করতে হবে। হাঁচি-কাশি রুমাল বা টিস্যুতে দিতে হবে। যাত্রাকালে বিমান বা অন্য যানবাহনের অভ্যন্তরে বসার জায়গা, সিটের হাতল, টাচ স্ক্রিন জীবাণুনাশক কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন। এ ছাড়াও আপনি যে হোটেল বা আবাসনে থাকবেন তার দরজার হ্যান্ডেল, রিমোট পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখ, নাক ও মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

বিশেষ করে যারা বিদেশ ভ্রমণ করবেন তারা যে দেশে যাবেন সে দেশের স্বাস্থ্য বিধিমালা জেনে নিতে হবে; উচ্চ ঝুঁকির দেশ থেকে ফেরার পর নিজেকে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে।

ভ্রমণ যেমন মানসিক চাপ হ্রাস করে তেমনি সামাজিক দক্ষতা, ধৌর্যশীলতা, ইতিবাচক চিন্তা ও পারিবারিক সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটায়, তেমনি হতে পারে আপনার বিপদের কারণ। ভ্রমণ আমাদের জীবনের অংশ। কিন্তু ভ্রমণে নিজেকে নিরাপদ রাখুন।

মনে রাখবেন  সতর্কতা ও সচেতনতাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি।

সর্বশেষ খবর