বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বয়স ধরে রাখে কোলাজেন!

হালের ডায়েট ট্রেন্ডে বিশেষভাবে উচ্চারিত হচ্ছে কোলাজেন শব্দটি। নাম জানা থাকলেও অনেকেরই এ সম্পর্কে স্বচ্ছ কোনো ধারণা নেই। রইল বিস্তারিত...

বয়স ধরে রাখে কোলাজেন!

♦ মডেল : মৌ ♦ ছবি : আর্কাইভ

জাপান, কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশগুলোর রমণীদের তারুণ্যোজ্জ্বল ত্বক সমগ্র বিশ্বের মানুষকে খানিকটা হলেও ভাবায়। আর সেই রহস্যের মূলে রয়েছে কোলাজেন ডায়েট। দৈনন্দিন খাবারে তারা এমন খাবার রাখে, যা শরীরে কোলাজেন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ জন্যই অন্যান্য দেশের তুলনায় এসব দেশের নাগরিকদের বয়সের চেয়ে অনেক বেশি তরুণ দেখায়।

 

কোলাজেন কী?

কোলাজেন হলো মানবশরীরের সৃষ্ট প্রাকৃতিক প্রোটিন। যা মানবশরীরের হাড়, পেশি, অস্থিসন্ধি, চুল, নখ ও ত্বকের গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। রক্তনালি, চোখের মণি এমনকি দাঁতেও কোলাজেন থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের স্বাভাবিক উৎপাদনক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। এ জন্য বয়স্ক মানুষের হাড়, পেশি ও অস্থিসন্ধি দুর্বল হতে থাকে। ত্বকে ভাঁজ পড়তে থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে কোলাজেনের কোনো বিকল্প নেই। আর তা মিলবে আমাদের আশপাশে থাকা খাবার থেকেই। স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে প্রাকৃতিকভাবে কোলাজেন বাড়ানোর উপায় জেনে নিন।

 

নিয়মিত ত্বক ম্যাসাজ

ত্বকের ম্যাসাজ কোলাজেন সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখে ও উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এ ছাড়াও নিয়মিত ম্যাসাজ পেশিকে করে সুগঠিত। বিশেষত মুখের ত্বকে তারুণ্য ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং কোষে পুষ্টি সরবরাহ করতে ভূমিকা পালন করে।

 

সঠিক খাদ্যাভ্যাস

আমাদের শরীরে কোলাজেন প্রোকোলাজেন হিসেবে শুরু হয়। গ্লাইসিন ও প্রোলিন- এই দুই অ্যামাইনো অ্যাসিড মিলে শরীরে প্রোকোলাজেন তৈরি হয়। আর সব প্রক্রিয়ায় প্রভাবক হিসেবে থাকে ভিটামিন সি এবং কপার। তাই কোলাজেন ডায়েটে এই চার পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার রাখতেই হবে।

 

গ্লাইসিন : গ্লাইসিন পাওয়া যায় জেলাটিন, হাড়ের ব্রথ বা স্টক, মুরগি, হাঁস বা টার্কির চামড়ায়। এ ছাড়া অন্যান্য প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারেও মেলে গ্লাইসিন।

প্রোলিন : ডিমের সাদা অংশ, দুগ্ধজাত পণ্য এবং কিছু শাকসবজি, যেমন- বাঁধাকপি, ব্রকোলি, বাঁশকোরল, মাশরুম, সামুদ্রিক শেওলা, পাটশাক, পালংশাক প্রোলিনের উৎকৃষ্ট উৎস।

 

এ ছাড়া বলা হয়, সামদ্রিক কোলাজেন শরীরে দ্রুত শোষিত হয়। তাই খাবারে মাছও যোগ করুন। মনে রাখবেন, মাছের মাথা ও চোখে বেশি কোলাজেন থাকে।

 

♦  ডিমের সাদা অংশ প্রোলিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা কোলাজেন তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে কাজ করে।

♦  প্রোটিন সমৃদ্ধ মোটর ধরনের খাবার অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং কপার সমৃদ্ধ যা কোলাজেন সংশ্লেষণে সহায়তা করে।

♦  প্রাথমিক কোলাজেন হিসেবে ক্লোরোফিল পরিচিত। তাই খাবারে গাঢ় সবুজ ও শাক-জাতীয় খাবার যোগ করুন।

♦  ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- টক ফল, বেরি, আনারস, আম, কিউই, পেয়ারা ও মরিচ খাবার তালিকায় যোগ করুন।

♦  সালফার সমৃদ্ধ খাবার যেমন- রসুন কোলাজেন সৃষ্টিকারী খনিজ হিসেবে ও ‘ব্রেকডাউন’ প্রতিরোধক হিসেবে পরিচিত। তাই খাবারে সালফারজাতীয় উপাদান যোগ করুন।

 

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন

♦  অতিরিক্ত চিনি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট প্রদাহ বাড়ায়। যা শরীরের কোলাজেন নষ্ট করে দেয়।

♦  অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের কোলাজেন নষ্ট করে ও ভেঙে যায়। এতে অস্বাভাবিক ইলাস্টিন গঠন করে বলিরেখার সৃষ্টি করে। মনে রাখবেন, বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। এতে ত্বক সুরক্ষিত থাকবে। 

♦  ধূমপান কোলাজেন নষ্ট করে ও নিকোটিন রক্তের নালিতে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহকে ব্যাহত করে।

♦  ত্বক পরিচর্চায় সঠিক প্রসাধনী ব্যবহার করা প্রয়োজন।

♦  নিয়মিত শরীরচর্চা করা বয়সের ছাপ কমায়, কোলেজেন সুরক্ষিত রাখে। হাড়, হাড়ের সংযোগস্থল ও পেশি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

 

তথ্যসূত্র : নিউট্রিশন ডেটা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর