রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

কুইন মেরি

কুইন মেরি

ভুতুড়ে জাহাজ হিসেবে খ্যাতি আর আলোচনার শীর্ষে পেঁৗছালেও এমন সব কাণ্ডকীর্তির আগ থেকেই বিলাসবহুল জাহাজ হিসেবে আলাদা নাম করেছিল বৃহৎ জলযান কুইন মেরি। সুবিশাল অ্যাটল্যান্টিক পাড়ি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত জাহাজটি ১৯৩৬ সাল থেকে সমুদ্রের বুকে চলাচল শুরু করে। আর যাত্রা শুরুর অল্পদিনের মধ্যেই এটি ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে বড় সমুদ্র রুটে সবচেয়ে বেশি চলাচলের খেতার অর্জন করে। এই জাহাজটি একদিকে যেমন বৃহৎ, আধুনিক এবং বিলাসবহুল ছিল, ঠিক তেমনি এটি তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগামী জাহাজ ছিল। কুইন মেরি জাহাজটি মাত্র পাঁচ দিনে সুবিশাল অ্যাটল্যান্টিক পাড়ি দিতে পারত। যে জাহাজের প্রাপ্তির খাতায় এত সব অর্জন, সেটি কিন্তু আস্তে আস্তে প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু করে। কারণ যাত্রা শুরুর একেবারে প্রথম দিন থেকেই জাহাজটিতে অদ্ভুত অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটতে শুরু করে।

যাত্রার প্রথম দিনেই জাহাজটির ক্রু, যাত্রীসহ প্রত্যেকেই এর ভেতরে রহস্যময় ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন বলে দাবি করেন।

কিন্তু শুরুর দিকে এদের কথা কেউ সেভাবে পাত্তা দেয়নি। কুইন মেরির এই রহস্যময় আচরণের কথা সর্বপ্রথম বড় পরিসরে তুলে ধরেন কুইন মেরিতে চাকরিরত ১৭ বছরের এক যুবক। কুইন মেরির ইঞ্জিন রুমে কয়লা সরবরাহ করা ছিল তার কাজ। সে জানায়, জাহাজটির করিডরে একটি অস্পষ্ট ছায়াকে ব্যাগ পাইপ নামক বাঁশি বাজাতে বেশ কয়েকবার দেখা গেছে। এরপর অনেকেই নড়েচড়ে বসেন। সবার সতর্ক দৃষ্টি থাকল কুইন মেরির দিকে। তাই বলে এদের যাত্রা কিন্তু বন্ধ হয়নি। এ ছাড়াও সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার সময় অনেক যাত্রীই সাদা পোশাকধারী একজন নারী এবং আট থেকে নয় বছরের একটি মেয়েকে ডেকের ওপর দিয়ে ভেসে ভেসে চলতে দেখেছেন। জাহাজটির কেবিনে প্রেতাত্দা দেখা ও রহস্যময় শব্দ শুনেছেন বলেও দাবি করেন অনেকেই।

কুইন মেরিকে ঘিরে এমন রহস্যময় প্রশ্ন আর অভিজ্ঞতার পাল্লা দিনের পর দিন কেবল ভারীই হতে থাকল কিন্তু কেউই এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

তবে দিনের পর দিন জাহাজ বিষয়ে এমন অভিজ্ঞতার পাল্লা ভারী হওয়ায় আস্তে আস্তে সারা বিশ্বেই কুইন মেরির এই রহস্যময়তার গল্প ছড়িয়ে পড়ে।

রহস্যময় এ জাহাজটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে একে সৈন্যদের জাহাজে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ কিউরা কেরার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একবার কুইন মেরির প্রায় ৩০০ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছিল।

ধারণা করা হয়, এসব মৃত ব্যক্তির আত্দাই জাহাজটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে দ্য সিটি অফ লং বিচ নামক একটি প্রতিষ্ঠান কুইন মেরিকে কিনে নেয় এবং জাহাজটিকে একটি ভাসমান হোটেল হিসেবে গড়ে তোলা হয়। কিন্তু হোটেল হওবার পরও এখানে রহস্যময় এ ঘটনাগুলো বারবার ঘটতে থাকে।

 

 

সর্বশেষ খবর