শিরোনাম
শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

সোনার খাঁচায় কুঁড়েঘরের মোজাফফর

সোনার খাঁচায় কুঁড়েঘরের মোজাফফর

ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ- তিন যুগের শাসনামলের প্রত্যক্ষদর্শী, কিংবদন্তি রাজনীতিক, অভিভাবক এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একমাত্র জীবিত সদস্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। রাজনীতির এ প্রবাদপুরুষ সম্প্রতি বারিধারায় তার কন্যার বাসায় বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর সঙ্গে কথা বলেন। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তার বর্ণাঢ্য জীবনসংগ্রাম এবং দেশের সমকালীন রাজনীতির নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক- বাদল নূর, শেখ মেহেদী হাসান ও জিন্নাতুন নূর

 

মোজাফফর আহমদ সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন ১৯৫৪ সালে। তিনি বলেন, 'রাজনীতিতে আমার নেতা ছিলেন রাশিয়ার নভোস্কি।' দেশের নেতাদের মধ্যে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী, যতীন মণ্ডলসহ অনেকেই তার পছন্দের তালিকায় রয়েছেন। শেরেবাংলার সঙ্গে কাটানো সময় স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'একবার এক জনসভায় গিয়েছিলাম শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে। গোটা এলাকা লোকে-লোকারণ্য। মঞ্চে অন্য নেতাদের বক্তব্য চলছে। তার কাছে জানতে চাওয়া হলো, তার বক্তৃতার জন্য কত সময় বরাদ্দ থাকবে। তিনি বললেন, পাঁচ থেকে ১০ মিনিট। আমরা আধা ঘণ্টা রাখলাম। তিনি বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতেন। বক্তৃতার সময় তিনি জনগণের কাছে প্রশ্ন রাখলেন, 'কওছেন আমার নাম কি?' জনগণ উত্তর দিল, শেরেবাংলা ফজলুল হক। তিনি বললেন, না আমি আপনাদের 'ফজলুল হইক্যা'। এরপর তিনি বললেন, 'তোমরা কি আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাও, না নুরুল্লা [নূরুল আমিন] চোরারে চাও? যদি আমারে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাও তবে মোজাফফরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিবা। তাহলেই আমি প্রধানমন্ত্রী হব। তার কথা শুনে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। পরে আমার বেশ ভালো লেগেছিল। তিনি তো বেশি কথা বলতেন না। কম কথাতেই জনগণের মনের ভেতরে ঢুকে পড়তেন।'

উপমহাদেশের রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ওই সময় উপমহাদেশের রাজনীতিতে শেরেবাংলা অপরিহার্য হয়ে উঠেছিলেন। মহাত্দা গান্ধী ব্যারিস্টার ছিলেন। ওদিকে জওহর লাল নেহরু ছিলেন পণ্ডিত মানুষ। তাদের বিচক্ষণতার পরও করমচাঁদ গান্ধীকে ষড়যন্ত্রের রাজনীতির শিকার হতে হলো। মওলানা ভাসানীকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। তিনি একবার যশোরে এক প্রচারণায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলে বসলেন, ওই নুরু [নূরুল আমিন] তুই আমার লুঙ্গিটা খুইলা নিয়ে যা। তার বক্তৃতা শেষে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি এসব কী বলেন? তিনি বললেন, আমার ভাষণ স্যু পরা ভদ্রলোকদের জন্য না, সাধারণ গরিব মানুষের জন্য। পরে ভাবলাম ভাসানী সাহেব যা কইছেন, ঠিক।' বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'মুজিব শিক্ষিত ছিলেন। তিনি গুছিয়ে কথা বলতেন।' নিজের রাজনৈতিক আদর্শ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমি যে রাজনীতি করি। তা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি নয়। এটি সরল রাজনীতি। আমি ষড়যন্ত্রের মধ্যে নেই। ড. কামাল হোসেন কিছু দিন আগে আমার কাছে এসেছিল জাতীয় সরকারের রূপরেখা নিয়ে। আমার কাছে দোয়া চেয়েছিল। কিন্তু আমি ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মধ্যে নেই। আমি রাজি হইনি। আমার রাজনীতির অর্থ হচ্ছে সত্য কথা বলা, সড়ক দিয়ে হাঁটা এবং ডাল দিয়ে ভাত খাওয়া।"

দেশের সমকালীন রাজনীতি প্রসঙ্গে মোজাফফর আহমদ বলেন, "বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চলছে। বর্তমান সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপরতলার লোক বা বিদেশি শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। অর্থাৎ বহিরাগতরা তাকে 'ডিকটেড' বা দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। দেশ চালাতে গিয়ে শেখ হাসিনাকেও বিভিন্ন পক্ষের কথা শুনতে হচ্ছে। কিন্তু এক পক্ষের মন রক্ষা করতে গিয়ে অন্য পক্ষকে অসন্তুষ্ট করলে তার খেসারত প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হতে পারে।" তার মতে, শেখ হাসিনা হুমকির মুখে আছেন। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, 'হাসিনা ক্যান বি মার্ডার এনি টাইম।' এর ব্যাখায় তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা যে পক্ষের মন রক্ষা করতে পারবে না তারাই এ অঘটন ঘটাতে পারে। হতে পারে তা কোনো বহিরাগত শক্তি। যে শক্তি জনগণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরই তারা ক্ষমতায় নিয়ে আসতে চায়।'

প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোজাফফর আহমদ বলেন, "বহিরাগত শক্তি এক সময় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের স্ত্রী জোহরা তাজউদ্দীনকে নেতৃত্বে আনার জন্য আগ্রহী ছিলেন। এরপর তাদের আগ্রহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে। 'পরিবারতন্ত্র' বিষয়টি এখানে কাজ করেছে। আমার কন্যাকেও অনেকে রাজনীতিতে আসার জন্য বলেছে! আমার স্ত্রী আমেনা বেগম সরকারের একজন জনপ্রতিনিধি। কিন্তু সেও কিছু জানে না। তাকে যা বোঝানো হয় সে তাই বোঝে। তার সঙ্গে নেত্রীর দেখা হয়। তিনি তো চাচি বলতে অজ্ঞান। শেখ হাসিনাকে যদি কিছু বলা হয় তাহলে বলবে, চাচা তো সব জানেন। কথায় আছে না, 'সুতার টানে পুতুল নাচে/ পুতুলের আর দোষ কি?' তবে সুতা বেশি টানলে কাইট্যা যাইব।"

আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে মোজাফফর আহমদ বলেন, 'দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। তারা এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা করতে চাচ্ছেন যা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। আর সে কারণেই নির্বাচনের আগে সেই শক্তি জনগণকে বোঝাতে কোনো আইন করা যায় কিনা তার চেষ্টা করছে। তা না হলে জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। আসলে বিদেশি শক্তি সব কিছুই করছে পরিকল্পনামতো। সে শক্তি গণতন্ত্রের 'শো' দেখাতে চাচ্ছে এবং ১৪ দলকে ক্ষমতায় আনারও চেষ্টা করবে। তারা চায় যে, শেখ হাসিনা আরেকবার ক্ষমতায় আসুক। ১৪ দলকে অনেকটা মন্দের ভালো হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে রাজাকারদের নয়। তবে বহিরাগতদের মধ্যে যারা ষড়যন্ত্র করার পাঁয়তারা করছে তাদের মধ্যেই কেউ কেউ আমার বন্ধু। আগামী দিনে কি হতে যাচ্ছে এ প্রসঙ্গে তাদের কারও কারও সঙ্গে আলোচনাও করেছি। কিন্তু এ ব্যাপারে তারা নিজেরাও কিছু জানে না বলে মন্তব্য করেছে। আমার মনে হয়, জনগণ কোনো ভুল সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। আর ষড়যন্ত্রকারীরা জনগণের মনের কথাও বুঝতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা কি করবে তাও প্রশ্নবিদ্ধ। অর্থাৎ অবস্থা এখন এমন যে, 'একদিকে সরকার আরেক দিকে গোপাট।' তিনি আরও বলেন, 'উপরতলার লোকেরা সবাই সুবিধাভোগী। যেখানে সুবিধা পায় তারা সেখানে যায়। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য ভালো, তবে তাকে সহযোগিতা করার মতো মানুষ নেই। প্রধানমন্ত্রীর পাশে যারা আছেন তারা আমলা। দু-চারজন যোগ্য হলেও অধিকাংশ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নতুন। এদের দিয়ে দেশ ও জনগণের সমস্যা সমাধান হবে না। জনগণ বিকল্প চায় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দুর্নীতিমুক্ত আদর্শভিত্তিক রাজনীতিকদের মাধ্যমে পরিবর্তন হতে হবে। বাঙালি যেহেতু হুজুগে জাতি, তারা কখন কি করবে তা নিজেরাও জানে না। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার করছে। সরকার নুরুল ইসলাম নাহিদকে শিক্ষামন্ত্রী বানিয়েছেন। নাহিদ এক সময় আমার দলের কর্মী ছিল। সে অন্যদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভালো মানুষ। বর্তমান সরকার কোনো কোনো ব্যক্তির কেবল যোগ্যতা দেখে নিয়োগ দেননি বরং যোগ্যতার পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত সৎ মানুষদের বিভিন্ন কাজে লাগিয়েছেন।'

মোজাফফর আহমদ বলেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যদি আবার ফিরে আসে তাহলে ড. কামাল হোসেন ও ড. মুহম্মদ ইউনূসের সরকার প্রধান হিসেবে ইলেকটেড হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে কারণে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। আর এ কারণেই সরকার এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে, যেন তত্ত্ববধায়ক ব্যবস্থা আসতে না পারে। ড. মুহম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যত দূর বুঝি ইউনূসকে আওয়ামী লীগের লোকজন নেতা বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন তারাই বলছে ইউনূসের কারণে তাদের সতীত্ব গেছে! দেশে 'নব্য রাজাকার'-এর সৃষ্টি হয়েছে।" আর এই নব্য রাজাকার বলতে তিনি যারা দেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তাদের বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন, "বর্তমান রাজনীতিবিদরা মানুষের মনের কথা বোঝেন না। বর্তমান সরকারের অবস্থা হয়েছে অনেকটা 'গরিবের ঘোড়া রোগ'-এর মতো।"

দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কী? এ ব্যাপারে ন্যাপ সভাপতি বলেন, "আমি এ অবস্থা দেখে হতাশ নই। দেশ এবং রাজনীতি কলুষমুক্ত করতে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। যুবকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে পাকিস্তানিরা পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিল। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আতাউর রহমান, কফিলউদ্দিন, সালাম খানের মতো অসাধারণ নেতার প্রয়োজন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং নেতৃত্ব সংকট দেখা দিয়েছে। দেশ চালাতে হলে মন্ত্রিসভা, বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগ শক্তিশালী করতে হবে।"

প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বর্তমানে বারিধারায় তার কন্যার বাসায় আছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এখানে আসার ব্যাপারে আত্দীয়স্বজনরা আমাকে নিষেধ করেছিল। কারণ আমি বারিধারার মতো এত বিলাসবহুল এলাকার বিলাসবহুল বাড়িতে থাকছি এটি হয়তো জনগণ সন্দেহের চোখে দেখতে পারে। বারিধারাতেই সরকারের জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ থাকেন। আর সে এলাকায় কিনা আমি থাকছি! তবে মজার বিষয় এই যে, আমাকে এ অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। এ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান আমাকে নিয়ে তারই পত্রিকায় প্রকাশিত এক লেখায় [কুঁড়েঘরের মোজাফফর বারিধারায় কেন?] আমার বারিধারায় থাকার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছে। এর মাধ্যমে হয়তো আমার বারিধারায় থাকার বিষয়ে জনগণের মনে থাকা সন্দেহ দূর হবে।

আমি লেখাটির বেশ কয়েকটি ফটোকপি করেছি। আমার রাজনৈতিক কর্মী ও পরিচিতদের আমি লেখাটি পড়তে দেই। তাতে আমার খরচ পড়ে সাড়ে চার টাকা [তিন টাকা খাম আর দেড় কাটার ফটোকপি]। লেখাটির মাধ্যমে পীর হাবিবুর রহমান আমার লাখ টাকারও বেশি কাজ করেছে।

এই রাজনীতিবিদ বলেন, "বাংলাদেশে মোজাফফর আহমেদ নামের দুজন অধ্যাপক। তাই আমার কথা যখন বলা হয় লোকে তখন বলে 'কুঁড়েঘর মোজাফফর'। আমি কুমিল্লার ছেলে। আমার রসবোধও বেশি।" সদালাপী এই নেতা পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করেন। তিনি জানান, 'আমার সাম্প্রতিক সময়ের লেখা ও গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারগুলো সাধারণ মানুষ পছন্দ করেন। যারা আমার সাক্ষাৎকার নিতে আসেন তারা আমার পছন্দের না হলে আমি সহজে সাক্ষাৎকার দিই না। উল্টো তাদের কথার ফাঁদে ফেলে দেই। একবার এক বেসরকারি টিভি চ্যানেল থেকে আমার সাক্ষাৎকার নিতে

এসেছিল; আমি তাদের আমার অনুমতি নিয়েছিল কিনা তা জানতে চাই। একপর্যায়ে তারা জোরাজুরি করলে সাংবাদিকদের সঙ্গে রসিকতা করে বলি, ঠিক আছে সাক্ষাৎকার দেব, কিন্তু আমাকে সম্মানী দিতে হবে। নাছোড়বান্দা ওই সাংবাদিক তখন আমাকে পাঁচ হাজার টাকা সম্মানী দিয়ে সাক্ষাৎকার নেয়। আমি সে সম্মানীর কিছু অংশ দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করাই।'

বর্তমানে কিভাবে সময় কাটে জানতে চাইলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, 'আমি একটি সোনার খাঁচায় আবদ্ধ। বিলাসবহুল এ বাড়িতে সবই আছে। কিন্তু মানসিকভাবে আমি ভালো নেই। কেউ আসে না আমার সঙ্গে দেখা করতে। যদি কেউ আসেও তবে তার উদ্দেশ্য থাকে। তারা আমার খোঁজখবর নিতে বা শুধু গল্প করতে এ বাড়িতে আসে না। আমার নিজের ভেতরের কথাগুলো অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে ইচ্ছে হয়! অথচ কাকরাইলের বাসায় থাকতে আশপাশের অনেকের সঙ্গেই আমার আলাপ হতো।

বারিধারার বাসায় জীবনের প্রয়োজনীয় সবই আছে কিন্তু পরিচিতদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বারিধারা অনেক দূর হওয়ায় এমনটি হয়েছে। তবে আমার মেয়ে-জামাই অনেক আন্তরিক। আমার সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ রাখে। কোথাও যেতে চাইলে গাড়ি প্রস্তুত রাখে। তারপরও বলব, সবই ঠিক আছে তবে মানসিকভাবে আমি স্বস্তি পাচ্ছি না। আমার অবস্থা অনেকটা বর্তমান সরকারের মতো। অর্থাৎ 'গরিবের ঘোড়া রোগের মতো।' অবসরে এ ন্যাপ

নেতা বাসার ছাদে

বসে মেডিটেশন, শরীরচর্চা ও হাঁটাহাঁটি করেন।

এ ছাড়া পত্রপত্রিকা পড়েন, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তার কলাম বা লেখাগুলো কেটে সংগ্রহ করেন। সেগুলো তার দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন।

 

 

সর্বশেষ খবর