বৃহস্পতিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

জীবনযুদ্ধে জয়ী মহিউদ্দিন

জীবনযুদ্ধে জয়ী মহিউদ্দিন

মাদারীপুর জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান হিসেবে কাজ করতেন মহিউদ্দিন। অদৃষ্টের এমনই পরিহাস দায়িত্ব পালনের সময়-ইলেকট্রিক পোলে কাজ করতে গিয়ে এই বিদ্যুৎকর্মী মহিউদ্দিন ভয়ঙ্করভাবে তড়িতাহত হন। প্রাণে বেঁচে গেলেও বিসর্জন দিতে হয় তার দুটি হাত, দুটি পা। কৃত্রিম পা এবং হাতের অবশিষ্ট অংশ নিয়ে সংগ্রাম করে গেছেন প্রতিনিয়ত। মহিউদ্দিন বিবাহিত। একটি সন্তানও রয়েছে তার। চাকরি গেছে তাতে কি? কৃত্রিম পা লাগিয়ে প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে আসেন তার ছোট্ট ওষুধের দোকানে। স্বল্প পুঁজিতে করা ছোট্ট একটি দোকানে ওষুধ বিক্রি করেন মহিউদ্দিন। ওষুধ সরবরাহ, মোড়ক বা প্যাকেট খোলা, বন্ধ করা এসবই এমনই দক্ষতার সঙ্গে করেন যা দেখে অনেক স্বাভাবিক হাত-পা সম্পন্ন মানুষও অবাক হয়ে যান। আরও অবাক হতে হয় মোবাইল ফোনে তার মেসেজ টাইপ করা বা ফ্লেক্সিলােড করার ক্ষিপ্রতা দেখে। হাত নেই, আঙ্গুল নেই শুধু কনুইয়ের একটি হাড়ের সাহায্যে করা এসব কর্মতৎপরতা বিস্মিত করে যে কাউকে। এই হাত দিয়েই মহিউদ্দিন চমৎকারভাবে লিখতেও পারেন। শুধু তাই নয় এ অবস্থায় তিনি রপ্ত করেছেন কম্পিউটারও। এভাবে কাজ করে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা পেতেন মহিউদ্দিন। আর এভাবেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বহু কষ্টে চলছিল মহিউদ্দিনের জীবন সংগ্রাম। মহিউদ্দিনের দুঃখ যাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার হাত-পা হারাতে হয়েছে- দুর্ঘটনার দিন থেকেই তারাই তার চাকরিটি কেড়ে নিল। মহিউদ্দিনের পুরো ঘটনাটি ইত্যাদিতে তুলে ধরা হয় ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর। অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিনের চাকরিটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয় এবং এক লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে দুর্ঘটনা কবলিত ১৪ জন কর্মচারীকে চাকরিতে পুনঃনিয়োগ এবং মৃত্যুবরণকারী লাইনম্যানদের ৬ জন পোষ্যকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরি প্রদান করা হয়েছে।

 

 

 

সর্বশেষ খবর