বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

ঘর পালানো ছেলেটা

ফ্রাঙ্কলিনের বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প যে কাউকে মুগ্ধ করবে। তার জীবনের পরতে পরতে মিশে আছে রোমাঞ্চ। মুগ্ধ করা তার প্রতিভা আরও উজ্জ্বল হয়েছে নানা সাহসী কর্মযজ্ঞে। লেখক হয়ে ওঠা, পত্রিকা প্রকাশ করা, আবিষ্কারের নেশায় মত্ত থাকা সৃষ্টিশীল এই মানুষটির ছেলেবেলাটা সাধারণ নয়। ১৭ বছর বয়সেই ঘর থেকে পালিয়ে ফিলাডেলফিয়ায় চলে আসেন বেঞ্জামিন। নতুন শহরে নতুন করে শুরু করেন নিজের জীবন। জীবিকা নির্বাহের জন্য এসময় ছাপাখানায় কাজ করতে শুরু করেন তিনি।

কিন্তু অনেক পরিশ্রমের পরও মনটা ফাঁকা রয়ে যেত বেনের। কোনো কাজেই যেন সন্তুষ্টি মিলত না। কিছু মাস বাদেই পেনসিলভেনিয়ার গভর্নর স্যার উইলিয়াম কেইথের আশ্বাসে নতুন করে ফিলাডেলফিয়াতে খবরের কাগজ প্রকাশ করার স্বপ্ন নিয়ে যন্ত্রপাতি কিনতে লন্ডনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন বেন। তবে সেসব পরিকল্পনার কোনোটাই শেষ অব্দি সফল হয়নি। লন্ডনের স্মিথফিল্ড এলাকার চার্চ অব সেইন্ট ব্রথমেলোউ দ্য গ্রেটের কাছেই একটি ছাপাখানায় কাজ করা শুরু করেন বেন। পরবর্তীতে ১৭২৬ সালে থমাস ডেনহাম নামের এক ব্যবসায়ীর সহযোগিতায় আবার ফিলাডেলফিয়ায় ফিরে আসেন ফ্রাঙ্কলিন। ডেনহাম তাকে নিজের ব্যবসার কর্মচারী, বুককিপার ও দোকানদার হিসেবে নিয়োগ দেন। ১৭২৭ সালে ২১ বছর বয়সে জান্টো নামে একটি দল দাঁড় করান ফ্রাঙ্কলিন।

দলটির কাজ ছিল প্রতিদিনকার ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে কাজ করা। এটি ছিল অনেকটা ইংরেজদের কফিশপের অনুকরণ, যেখান থেকে ধীরে ধীরে ব্রিটেনের নতুন যুগের চিন্তাচেতনার শুরু হতে থাকে। জান্টোর অন্যতম কাজ ছিল বই পড়াকে উদ্বুদ্ধ করা। এ জন্য প্রচুর বইয়ের দরকার ছিল। যা কিনা তখন ছিল দুর্লভ আর ব্যয়বহুল। আর সেই টাকা তুলতেই ফ্রাঙ্কলিন প্রথম পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন যেখান থেকে সদস্যমূল্য দেওয়ার মাধ্যমে কিছুদিনের জন্য যে কেউ বই নিয়ে গিয়ে পড়তে পারত। আর এই ছোট ছোট অর্থই জমা করে কেনা হতো আরও বই। শুধু তাই নয়, এসময়ই আমেরিকার প্রথম গ্রন্থাগারিককে নিয়োগ দেন ফ্রাঙ্কলিন তার পাঠাগারে।

সর্বশেষ খবর