রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

অদ্ভুত যতো খেলা

অদ্ভুত যতো খেলা

টমেটো ছোড়াছুড়ির উৎসব

টমেটো ছোড়াছুড়ির উৎসব লা টমেটিনা। স্পেনের এই উৎসব বিশ্বের অন্যতম মজার খেলায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনে টমেটো দিয়ে বন্ধুকে ডুবিয়ে দেওয়ার উৎসবে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। হার-জিত না থাকলেও স্পেনের গণ্ডি পেরিয়ে অদ্ভুত খেলা হিসেবে এটি পড়ছে বিশ্বব্যাপী। ভূত উৎসব ‘হ্যালোইন’-এর আদলে ‘লা টমেটিনা’ পালন করতে শুরু করেছেন অনেকেই। স্পেনের বুনোল শহরে মহাসমারোহে এই উৎসব পালন করা হয়। ১৯৪৪ সালের দিকে টমেটো যুদ্ধ নিষিদ্ধও করা হয়েছিল। তবে এর জনপ্রিয়তাকে আটকে রাখা যায়নি। এখন ট্রাক ভরে ভরে টমেটো আসে। গত বছর ১ লাখ ২০ হাজার টমেটো ছোড়া হয় স্পেনের লা টমেটিনাতে! প্রতিপক্ষ হোক, বা উৎসবসঙ্গী তাকে টমেটো ছুড়ে ধরাশায়ী করাটাই এই উৎসব-খেলার প্রধান আকর্ষণ।

 

 

 

বউ দৌড়

বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে যে সংসার বাঁধা হয় তাদের বন্ধর অটুট রাখতে মজার এই খেলাটি বেশ জনপ্রিয় বিশ্বজুড়েই। এই খেলাটি সারা বিশ্বেই ওয়াইফ ক্যারিং নামে সুপরিচিত। এই খেলায় স্ত্রীকে কোলে তুলে দৌড়ে সীমানা ছুঁতে হয়। খেলাটি নিয়ম কানুন খুবই সহজ। যেখানে পুরুষ প্রতিযোগীরা তাদের দলের একজন মহিলা সাথীকে বা স্ত্রীকে তাদের পিঠে বেঁধে একটি নির্দিষ্ট পথে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হয়। অনেক সময়ই খেলাটি আনন্দ প্রদানের জন্য খেলা হয় বলে হার-জিত নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না কেউ। এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হলো—পুরুষরা তাদের স্ত্রীকে পিঠে করে একটি দুর্গম পথে কয়েক স্থানে বাধার সম্মুখীন হয়ে দ্রুততম সময়ে সবার আগে গন্তব্যে পৌঁছানো। যে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে বা সবার আগে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন তিনি হন ওই প্রতিযোগিতায় জয়ী ব্যক্তি। বিজয়ী পুরুষ স্বামী হিসেবে সবচেয়ে মজবুত বন্ধনে স্ত্রী আবদ্ধ করেন বলেই ঘোষিত হয়।

 

বিছানা দৌড়

অবসন্ন দেহে মানুষ বিছানায় গা এলিয়ে বিশ্রাম নেয়। ঘুমানোর জন্য বিছানার কথা না বললেই নয়। কিন্তু বিছানায় ঘুমানোর পাশাপাশি মজার একটি খেলাও আছে। খেলাটিকে ইংরেজিতে বলা হয় বেড রেসিং, মানে বিছানা দৌড়। অদ্ভুত এই খেলাটি বেশ পুরনো। অনেকেই বলে থাকেন, খেলাটি প্রথম নারসবোরো অঞ্চলের উত্তর ইয়র্কশায়ার শহরের লোকজনের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৬৫ সালে এই খেলাটি শুধু সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও আমেরিকার নৌবাহিনীর জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু এখন প্রতিযোগিতা সকলের জন্য উন্মুক্ত। এই অদ্ভুত খেলাটির মূল বৈচিত্র্য হলো বিছানায় দৌড় দেওয়া। খেলাটির ধরনও তাই একটু আলাদা। এই খেলায় এক দলে মোট ছয় জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন যাদের মধ্যে একজন থাকেন একটি বিছানার ওপর।  দুই দলেরই নির্দিষ্ট বছরের প্রতিযোগিতার লক্ষ্য তাদের বিছানায় লেখা থাকে।

 

বালিশ যুদ্ধ

বালিশ যুদ্ধ মূলত মেয়েদের খেলা হলেও এখন পুরুষরাও এ খেলা আয়োজন করে থাকে। প্রথম দিকে শুধু বালিশ যুদ্ধ নামে খেলাটির প্রচলন ছিল। এই খেলায় বালিশ কারিগরদের তৈরি বালিশের গুণমান যাচাইয়ের রীতি থাকলেও পরবর্তীতে স্থান আঁকড়ে থাকার খেলায় এটি পরিণত হয়। খেলার নিয়মানুযায়ী দুজন লোক যার যার স্থানে বসে থেকে বালিশ দিয়ে একজন অন্যজনকে আঘাত করতে থাকে। বালিশের আঘাতে যে প্রথমে স্থানচূত হয় সে হেরে যায়। খেলাটিকে উত্তেজনাপূর্ণ করতে অনেক সময় অল্প পানি বা কাদার ওপর বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোলবালিশ যুদ্ধ খেলা হয়ে থাকে। ফিলিপাইনে এই খেলাটি নব বিবাহিত দম্পতিদের খেলতে দেওয়া হয়। এখন এই খেলার প্রচলন কমে গেলেও ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি বাংলাদেশেও একসময় প্রচলিত ছিল।

 

মোরগ লড়াই

মোরগে মোরগে লড়াই মেক্সিকো, স্পেনসহ বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয় একটি খেলা। মেক্সিকো রীতিমতো জুয়া খেলা জমে যায় মোরগ লড়াই খেলা নিয়ে। বাজি ধরে এই খেলাটিকে করা হয় কোটি টাকা বিনিময়ের খেলা। স্পেনেও বাজি ধরা হয়ে থাকে মোরগ লড়াই খেলাতে। এই খেলাতে দুপক্ষের দুটি মোরগ মারামারিতে লিপ্ত হয়।

যা পক্ষের মোরগ প্রতিপক্ষের মোরগকে ঘায়েল করতে পারে সে পক্ষই বিজয়ী ঘোষিত। মেক্সিকো ও স্পেনে পশু চিকিৎসকরাও খেলার আয়োজন কমিটির সঙ্গে থাকেন। তাই পশু চিকিৎসকদের রায় মেনে নিয়ে খেলার মাঝখানেও ফলাফল ঘোষণা রীতি চালু হয়েছে। বাংলাদেশসহ এই উপমহাদেশে মোরগ লড়াই শিরোনামে শিশুদের মাঝে হাঁটু লড়াইয়ের আয়োজন হয়ে থাকে। এ খেলায় এক পা ভাঁজ করে হাঁটু দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হয়।

 

বিচিত্র কাপড় ইস্ত্রি খেলা

কাপড়ে ভাঁজ সরাতে ও সুতার গঠন মজবুত রাখতেই সাধারণত কাপড়ে আয়রন বা ইস্ত্রি করা। কিন্তু অদ্ভুত খেলার তালিকাতে কাপড় ইস্ত্রি করার খেলাও রয়েছে। কাপড় ইস্ত্রি করার দক্ষতা রয়েছেই তার পাশাপাশি কে কত দ্রুত কাপড় ইস্ত্রি করতে পারল সেটাও এই প্রতিযোগিতামূলক খেলায় দেখা হয়। খেলাটি অনেকের কাছে এক্সট্রিম আয়রনিং নামেও পরিচিত।  এই খেলার প্রতিযোগীরা দূরবর্তী একটি স্থানে যান এবং সেখানে তাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া কাপড় আয়রন করেন। এই খেলার প্রতিযোগীরা তাদের সঙ্গে আয়রনিং বোর্ড, আনপ্লাগড আয়রন ও কিছু ভাঁজপড়া কাপড় নিয়ে দূরবর্তী কোনো দুর্গম এলাকায় পৌঁছান। এরপর সেখানে তারা ওই ভাঁজপড়া কাপড়গুলো ইস্ত্রি করতে থাকেন। দুর্গম ওই জায়গাগুলোর মাঝে আছে—খুবই উচ্চতর স্থান যেমন পাহাড়ের শীর্ষ, পানির তলদেশ, পাহাড়ের শীর্ষ হতে ঝুলে থেকে ইস্ত্রি করা অথবা কোনো চলন্ত গাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে কাজটি করতে হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর