শিরোনাম
শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভয়াবহ যত অগ্নিকাণ্ড

তানভীর আহমেদ

ভয়াবহ যত অগ্নিকাণ্ড

১৬৬৬ সালে আগুনে পুড়েছিল গোটা লন্ডন। থমাস ফেরিনোর বেকারি থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হয়। চিত্রকরের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বামে পুড়ে ছাই লন্ডন ব্রিজ, ডানে টাওয়ার অব লন্ডন। কিছুটা দূরে সেন্ট পলস ক্যাথেড্রালে তখনো আগুনের শিখা, দাউদাউ করে জ্বলছে লন্ডন।

তিন দিনে ছাই গোটা লন্ডন

১৬৬৬ সালের অগ্নি দুর্ঘটনায় লন্ডন জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পুডিং লেনের ফেরিনোর বেকারি থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হয় এখন। এক সময় অনেকে অভিযোগ করতেন এই আগুনের পেছনে ডাচ কিংবা ফরাসি দুর্বৃত্তদের হাত থাকতে পারে। পরে অবশ্য এ অভিযোগের পেছনে শক্ত প্রমাণ মেলেনি। ফেরিনোর বেকারিতে আগুন লাগে মধ্যরাতে। শুরুর দিকে আগুন বেকারি জ্বালিয়ে রাস্তায় এগিয়ে যায়। তখনো কেউ ভাবতে পারেনি আগুন হুট করেই গোটা শহরে ছড়িয়ে যাবে। ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। এর পেছনে বড় কারণ ছিল, আগুনের ব্যপ্তি ক্ষণে ক্ষণেই দানবাকৃতি নিতে থাকে। মধ্য রাতে যে আগুন দেখতে মানুষ ভিড় করেছিল শেষ রাতে সেই মানুষেরাই শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। আগুন রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। পুড়তে শুরু করে ঘরবাড়ি, দোকানপাট সব। আগুনের ফুলকি বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আকাশ ছুঁতে চাইছিলÑ এমনটাই বলেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, শহর থেকে পালিয়ে যাওয়া মানুষের অনেকেই বলেছেন আগুন একের পর এক দালান গিলে ফেলতে শুরু করে এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে আগুনের তাপ আর হিংস্রতা কমার বদলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তেই থাকে। যারা শহরেই থেকে গিয়েছিলেন তারা রাজার  সেনাবাহিনীর সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু ভুলটা হয়েছিল গোড়াতেই। আগুনের ব্যপ্তি বুঝতে না পারার মাশুল দিতে হয় ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসকে। সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল পুড়ে যাওয়াই প্রমাণ করে রাজার সিদ্ধান্তহীনতা আর আগুন নেভানোরা কাজে লোকদের অদক্ষতাই লন্ডনের মহাঅগ্নিকাণ্ডকে এত ভয়ঙ্কর করে তোলে। এত বড় অগ্নিকাণ্ডে মাত্র আটজনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও আসল সংখ্যাটা হয়তো কখনোই জানা যাবে না।

সম্রাট নিরোর চোখের সামনে পুড়ল রোম

রোমান সাম্রাজ্যের প্রতাপ ও অহংকার কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার নয়। ইতিহাস ও সভ্যতার যাত্রাপথে এক সময় রোম সাম্রাজ্য ছিল সেরাদের সেরা। গোটা দুনিয়া শাসন করেছেন রোম সম্রাটরা। কেবল সম্রাট নিরোর বেলাতেই লেগেছে কালিমা। পরাক্রমশালী শাসকের রাজধানী রোমই কিনা আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছিল। ৬৪ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে রোমের অগ্নিকাণ্ড ছিল ভয়াবহ এক ঘটনা। এই আগুনে রোম নগরীর  বেশিরভাগ এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল এ নিয়ে সন্দেহ  ও বিতর্ক হয়েছে। ইতিহাসবেত্তা টাসিটাসের মতে, এই আগুন লাগিয়েছিল খ্রিস্টানরা। তবে অনেক রোমান মনে করত নিরোর ইশারাতেই এই আগুন লাগানো হয়েছিল। এই তর্কের সমাধান নেই। কিন্তু আগুন যে  ধ্বংসলীলা রেখে গেছে তা পৃথিবীর মানুষ আজও ভোলেনি। ভুলবেও না। রোম শহর এই ভয়ঙ্কর অগ্রিকাণ্ডে পুড়েছিল টানা ছয় দিন। ছয় দিনে গোটা শহর এক আগুনের কূপে পরিণত হয়েছিল। আগুন একে একে গিলে খায় প্রাচীন  রোমের চৌদ্দটি জেলার মধ্যে দশটি জেলা। মাত্র চারটি জেলা আগুনের   ধ্বংসলীলা থেকে বেঁচেছিল। তিনটি জেলা পুরোপুরি ছাই হয়ে যায়। বাকি সাতটিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। একটি চিঠির পাঠোদ্ধার করে পরে জানা যায়, ১৩০টি ঘর এবং চারটি ব্লক ছয় দিনের মধ্যে পুড়েছিল। রোমের আগুন নিয়ে যত কথা শোনা যায় তার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো, রোম যখন পুড়ছিল নিরো তখন বাঁশি (বা বেহালা) বাজাচ্ছিলেন। ক্যাসিয়াস দিও বলেছেন, নিরো বিশ্রামাগারে গান গাচ্ছিলেন। তাকে যখন আগুনের খবর দেওয়া হয় তিনি সেটা বিশ্বাস করেননি। যদিও এর ভিত্তি নেই। বরং জানা যায়, নিরো অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই রোমে ফিরে আসেন এবং দ্রুত আগুন নেভানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। ত্রাণও পাঠিয়েছিলেন। হয়তো যে সময় আগুন লেগেছিল, তখন তিনি গান শুনছিলেন বা গাইছিলেন।

চীনে ২৮ তলা ভবনে আগুন

ঘড়িতে দুপুর সোয়া ২টা বাজে। চীনের সাংহাইয়ের ২৮ তলা ভবনের ১০ তলায় আগুন আর ধোঁয়া দেখতে পেয়ে সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। নির্মাণকাজের সময়ই আগুন লেগে যাওয়ার কথা জানা যায়। চীনের প্রধান সংবাদপত্রগুলো খবরে এসেছিল, ওয়েল্ডিং করার সময় আগুনের ফুলকি থেকে শুরু হয় দুর্ঘটনার। সেই আগুন মিনিটে মিনিটে বাড়তে শুরু করে। একের পর এক তলায় আগুন ছড়িয়ে যায়। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে সুবিধা করতে পারছিলেন না। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এত উঁচু ভবনে আগুনের ভয়াবহতা দেখা যায়নি। একপর্যায়ে সাংহাইয়ের ২৮ তলা দালানের পুরোটাই আগুনে জ্বলতে থাকে। ৮০টি ফায়ার ইঞ্জিন এনে আগুন নেভানোর কাজ চালানো হয়, কিন্তু ততক্ষণে আগুন পুরো ভবনকে গ্রাস করে ফেলে। ৫৮ জন মারা যান এ অগ্নিকাণ্ডে, আহত হন ৭০ জন। হতাহতের সংখ্যা যাই হোক, উঁচু ভবনে আগুন লাগার এ উদাহরণ বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দিয়েছিল। বিশ্বের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলো এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সরাসরি সম্প্রচার করে। চীন এ অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত করে এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় হতাহতদের।

আমেরিকা ভুলবে না সেই দাবানল

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দাবানল লেগেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। দাবানলের আকার ও ভয়াবহতা সবার কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ১৮৭১ সালে এই দাবানল ঘটে উইসকনসিনের পেশটিগো অঞ্চলে। দাবানলে পুড়ে যায় ১২০ লাখ একর বন ও শহর। আগুন কত বড় আকার ধারণ করেছিল তা নিশ্চয়ই অনুমান করা যাচ্ছে। একই দিনে ‘গ্রেট শিকাগো ফায়ার’ দুর্ঘটনা ঘটায় অনেকেই মনে করেন, পেশটিগো দাবানল বুঝি তারই অংশ। আসলে উল্টো ঘটনা। পেশটিগো দাবানল শিকাগোর দাবানলের অংশ ছিল না। শিকাগোর আগুন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল তখন। কিন্তু পেশটিগো দাবানাল ছিল উইসকনসিনের আলাদা বনে। যে কারণে এ অগ্নিকাণ্ডের কথা অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। একই দিনে মিশিগান লেক ধরেও দাবানল ছড়িয়ে পড়েছিল। গরম আবহাওয়ায় রুক্ষ বন লোহার কারখানার চুল্লির রূপ নেয়। বনের ধারেই রেল লাইন বসানোর কাজ চলছিল। পাশেই ছিল বন। কৃষকও ছিলেন ফসলি খেতে। রেললাইন বসানোর কাজ করার সময় আগুন লেগে যায়। ছোট এ দুর্ঘটনা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রূপ নিতে সময় নিয়েছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা। অনেকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই গরম বাতাসে অল্প আগুন থেকে দাবানল লেগেছিল। ফসলি মাঠ, তারপর বন। বাতাস গরম থাকায় আগুন কুণ্ডলী পাকিয়ে বনের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। বাতাসের ঝড়ো ঝাপটায় আগুন উড়তে শুরু করে। মুহূর্তেই শত শত একর বনে আগুন ছড়িয়ে যায়। জ্বলতে শুরু করে দাউদাউ করে। বনে আগুন লেগে যাওয়ার পর আর কিছু করার ছিল না। আগুনের ঢেউ বনের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে থাকায় প্রতি সেকেন্ডেই দাবানল পোড়াতে শুরু করে চলার পথে যা পায় তাই। বনের আগুন শহর, মানুষ, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বন্যপ্রাণী কিছুই ছাড়েনি। প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এ দাবানলে প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ায় পুড়েছিল ১১ লাখ একর বন

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া। ২০০৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। ছিল শনিবার। ভোর ৫টা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের কাছে ফোন আসে বনে আগুন লেগেছে। বুনো ঝোপের আগুনগুলোকে বলা হয় বুশফায়ার। এ ধরনের আগুন ফসলি মাঠ, বন সব গিলতে শুরু করে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আকাশ ঢেকে ফেলে। সেটাই হলো। ভোর ৫টায় যে আগুনের খবর তাদের কাছে আসে সেই আগুন রাত ১০টায় গোটা শহর পুড়িয়ে দেয়। এরপর শহর থেকে শহর, বন থেকে বনে। প্রথম দিন পেড়িয়ে যেতেই অস্ট্রেলিয়া টের পায় ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে যাচ্ছে তারা। শুকনো খরখরে আবহাওয়ায় আগুন আরও ক্ষেপে ওঠে। এই আগুন লাগার সপ্তাহখানেক আগেই সবাই বলাবলি করছিল, যেভাবে গরম বাড়ছে তাতে না দাবানল লেগে যায়। জানুয়ারির শেষ দিকে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেললে আগুন লাগতে পারে, এ নিয়ে সতর্ক ছিল ফায়ার সার্ভিসের লোকজন। কিন্তু আগুন যেভাবে বনের ভিতর ছড়িয়ে পড়ছিল তাতে খুব বেশি কিছু আর করার ছিল না। ১৭৩ জন মারা যান সরাসরি আগুনে পুড়ে। যেদিন আগুনের ভয়াবহতার খবর কানে আসে, মানে ৭ ফেব্রুয়ারি, সেদিন অন্তত ৪০০ জায়গায় আগুন লেগেছিল বলে ধারণা করা হয়। যে কারণে সব ধরনের প্রস্তুতি ও কল্পনাকেও হার মানায়। এ আগুনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার দালান পুড়ে যায়। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮০ জনে। অস্ট্রেলিয়ায় বুশফায়ারে এত ক্ষয়ক্ষতি আর কখনো হয়নি। পরে তদন্ত করে দেখা যায়, এ দাবানলের সঙ্গে আরও ১৩টি বড় অগ্নিকাণ্ড একই সঙ্গে ঘটে। প্রায় ৩৫ দিন জ্বলছিল এ আগুন। ১১ লাখ একর বন পুরো ছাই হয়ে যায়। শনিবারে শুরু হওয়া এই অগ্নিকাণ্ড অস্ট্রেলিয়াবাসী মনে রেখেছে ব্ল্যাক স্যাটারডে নামে।

জ্বলে-পুড়ে ছারখার শিকাগো

১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর। দুই দিনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয় শিকাগো। শিকাগোর দক্ষিণ-পশ্চিমের এক ছোট শহরে প্রথম আগুন লাগে। সিটি সেন্টারে লাগা আগুন শহরে ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয় মাত্র কয়েক ঘণ্টা। সময়টাও ছিল গরম। তাপমাত্রা বেশি, সঙ্গে গরম হাওয়া। যে কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। কাঠের বাড়ি-দোকানপাট আগুন শহরজুড়ে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিল। আগুনের ঢেউ খেলে যায় শিকাগো নদী এবং নদীর কূল ধরে। শহরের মাঝ বরাবর আগুন পৌঁছায় পরদিন। ধীরে ধীরে শহরের উত্তরেও আগুন পৌঁছে যায়। দ্বিতীয় দিনের মাথায় পুরোদমে জ্বলতে শুরু করে গোটা শিকাগো। দুই দিনের আগুনে শহরের কোনো দালানই বাদ যায়নি। আগুন লাগার পরপরই শিকাগো মেয়র উঁচু ভবন থেকে বিপদ সংকেত দিয়ে শহরবাসীকে শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বন্দিদের। মানুষজন আতঙ্কে শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। মেয়র আশপাশের মেয়র ও মানুষদের কাছে সাহায্য চান এ আগুন নেভানোর জন্য। কিন্তু আগুনের আকার এতই বড় ছিল যে পুরো শহর জ্বলে নিজে থেকে আগুন নিভে যাওয়ার অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই যেন করার ছিল না। আগুন নিভে যাওয়ার পর দেখা যায়, শিকাগোর প্রতিটি দালান, প্রতিটি রাস্তা জ্বলে-পুড়ে গেছে। কিছুই অক্ষত নেই। এই অগ্নিকাণ্ডে ৩ হাজার মানুষ মারা যান। পুড়ে যায় সাড়ে ১৭ হাজার বাড়ি।

২ হাজার মাইল দূর থেকে দেখা গিয়েছিল যে আগুন

কেউ বলেন, বিগ বার্ন। কেউ বলেন, ডেভিলস বুম। ১৯১০ সালে মহাঅগ্নিকাণ্ডের এমনই সব ভয়াবহ নাম। আগুনের ভয়াবহতা এই নামের চেয়ে বেশি কিছুই ছিল। বনে লাগা এই আগুন পুড়িয়ে ফেলে ৩০ লাখ একর জমি। ২ হাজার মাইল দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল ধোঁয়া, দাবানল। উত্তর ইদাহো আর পশ্চিম মনটানা শহরকে কেন্দ্র করে এই আগুন ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হলেও, আগুন গ্রাস করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব ব্রিটিশ কলম্বিয়া, পূর্ব ওয়াশিংটন ও কানাডার কিছু অংশ। প্রায় দুই দিন ধরে জ্বলেছিল এই আগুন। আগুনের সূত্র খুব সামান্য কিছু থেকেই হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে দাবানলের রূপ নেয় গরম আবহাওয়ার জন্য। অন্তত কয়েকশ ছোটখাটো প্রাকৃতিক আগুনের ফলাফল ছিল এই ভয়াবহ দাবানল। আগুন বনে প্রবেশ করতেই বাতাস আরও গরম হয়ে ঘূর্ণি সৃষ্টি করে। যে কারণে আগুন চোখের পলকে বন জ্বালিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিসের দক্ষ কর্মীদের জন্য বহু মানুষ প্রাণে বেঁচে যায়। আগুনে মারা যাওয়া ৮৭ জনের  বেশির ভাগই ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। এ দাবানল শহরের ভিতর ঢুকে পড়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। মানুষের দালান-দোকান সবই জ্বালিয়ে দিয়ে যায়। ৩০ লাখ একর জমির বড় অংশই ছিল বন। তবে এসব বনের আশপাশে থাকা কয়েকটি শহরও পুরোপুরি ছাই বানিয়ে দিয়ে যায় এ আগুন। এ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বন বিভাগের কর্মপরিধি ও কর্মপরিকল্পনায় বড়সড় পরির্তন আনে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর