বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভোট গ্রহণের সময়সীমা নিয়ে আছে উৎকণ্ঠা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ভোটের সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে সব ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। কারণ প্রতিটি পদে ভোট দিতে হলে একজন ভোটারের ৩ থেকে ৪ মিনিট লাগবে।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১১ মার্চ। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। ভোট প্রদানের সময়সীমা নিয়ে ইতিমধ্যে অনেকে নানা আশঙ্কা করছেন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর হতে যাওয়া এই নির্বাচনের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ উভয়টির ভোট গ্রহণ হলগুলোতেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে নির্বাচনে অংশ  নেওয়া বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে স্থাপনের দাবি জানালেও প্রশাসন তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় ভোটকেন্দ্র হলের ভিতরে রেখেই গঠনতন্ত্রের সংশোধন আনা হয়।

ভোট গ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকেই ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা ভোটারকে  কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদের জন্য আলাদা দুটি ব্যালট পেপার সরবরাহ করবেন। ব্যালট পেপারে প্রার্থীদের নাম ও ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকবে। ভোটাররা নিজের পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে রিটার্নিং অফিস কর্তৃক নির্ধারিত সংকেত ব্যবহার করে চিহ্নিত করবেন।  প্রত্যেক ভোটার কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৩টি করে মোট ৩৮টি ভোট দিতে পারবেন। ভোট প্রদান শেষে ব্যালট পেপার ভাঁজ করে ব্যালট বাক্সে ফেলতে হবে। এরপর কোনো ভোটার ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করবেন। নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট, রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে চিফ রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ছবি তুলতে পারবেন। তবে ভোটকেন্দ্রের বুথসমূহে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের লাইভ সম্প্রচারসহ ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো কাজ করা নিষিদ্ধ থাকবে। কেন্দ্রে প্রবেশের পর ভোটারদের মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সব মাধ্যম বন্ধ রাখতে হবে। বুথের অভ্যন্তরে কোনো ডিভাইস ব্যবহার বা ছবি তোলা যাবে না। উভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং হল রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এদিকে, ভোট গ্রহণের মোট ছয় ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সব ভোটারের ভোট প্রদান নিশ্চিত করা যাবে কিনা এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ভোটের সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে সব ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। কারণ প্রতিটি পদে ভোট দিতে হলে একজন ভোটারের ৩ থেকে ৪ মিনিট লাগবে। তাই দুপুরের মধ্যে সব ভোটার ভোট দিতে পারবেন না। ভোট গ্রহণের সময় বাড়াতে আমি লিখিতভাবে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি। ভোটের সময় বাড়ানোর দাবি রয়েছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে অধ্যয়নরত হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী মুক্তাদির মেহেদী বলেন, প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের বাইরে থাকেন। তাই হলের বাইরে রয়েছে বড় ভোটব্যাংক। কিন্তু ভোটের সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। এ সময়ে বাইরে থেকে এসে নিবন্ধিত সব ভোটার ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানোর দাবি জানান মুক্তাদির মেহেদী। তবে ভোট প্রদান নিশ্চিতের জন্য  ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত বুথ রাখা হবে বলে বিভিন্ন হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এদিকে ছাত্র সংগঠনগুলো ভোট গ্রহণের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।

সর্বশেষ খবর