বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিশ্বসেরা বিমানবন্দর

তানিয়া তুষ্টি

বিশ্বসেরা বিমানবন্দর

আকাশপথে নিরাপদ ও দ্রুত ভ্রমণ, মালামাল পরিবহনে বিমানের ব্যবহার বাড়ছে। কোটি কোটি যাত্রীর কথা বিবেচনা করে দেশে দেশে উন্নত করা হচ্ছে বিমানবন্দরগুলো। কার্গো সার্ভিসের পাশাপাশি বরাবর গুরুত্ব পাচ্ছে যাত্রী সুবিধা ও নিরাপত্তা। আধুনিক বিমানবন্দরগুলোতে মিলছে অল্প সময়ে যাত্রী ও তার লাগেজ বিমানে তুলে দেওয়া এবং নামিয়ে আনার সুবিধা। আরও রয়েছে, টয়লেট, বিশ্রাম কক্ষ, খাবার, কেনাকাটা, বিনোদন কক্ষ, ইন্টারনেটসহ নানা সুবিধা। হাসিমুখে যাত্রীদের সার্বিক সহায়তা প্রদানে আন্তরিক বিমানকর্মীরা এই বিমানবন্দর গুলোকে করেছে বিশ্বসেরা।

 

লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর

লন্ডনের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর হিথ্রো। যাত্রী পরিবহনের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর এটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে এটি সর্বাধিক ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে পরিগণিত হয়। বিএএ লিমিটেড এই বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ। বিএমআই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারওয়েজ হিথ্রো বিমানবন্দরকে প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। সেন্ট্রাল লন্ডন থেকে হিথ্রো বিমানবন্দর ১২ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। এই বিমানবন্দরের পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত দুটি সমান্তরাল রানওয়ে ও চারটি টার্মিনাল আছে। এগুলো মোট ১২২৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এয়ারপোর্টটি হিথ্রো এয়ারপোর্ট হোল্ডিংসের মালিকানাধীন পরিচালিত হয়। প্রায় ৯০টি এয়ারলাইন্স লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে চলাচল করে। এসব এয়ারলাইন্স বিশ্বের প্রায় ১৭০টি শহরের সঙ্গে যুক্তরাজ্যকে সংযুক্ত করেছে। বছরে প্রায় ৮০ মিলিয়ন যাত্রী এই বিমানবন্দর দিয়ে চলাচল করে। এখানে বাচ্চাদের জন্য খেলা করার আলাদা লাউঞ্জ আছে। সেখানে আপনি একটি বিশেষজ্ঞ লাউঞ্জ, একটি গেম জোন, শিশুদের শান্ত করার কক্ষ এবং বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য অনেক স্লাইড পাবেন। সাশ্রয়ী মূল্যে গিফট শপ থেকে পছন্দের উপহার ও সুভেনিয়র কিনতে পারবেন। আপনার পছন্দমতো খাবার পেয়ে যাবেন এখানকার রেস্টুরেন্ট থেকে। বিমানবন্দর থেকে খুব সহজে ভাড়ায় চালিত ক্যাব ও ট্যাক্সি পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। এমনকি আপনার পছন্দমতো হোটেলে বুকিং দিতে চাইলে তাও মিলে যাবে এখান থেকেই। বিমানবন্দরের স্পেশাল অ্যাপ সার্ভিস আপনাকে প্রয়োজনীয় লোকেশানের সন্ধান দেবে। এমনকি হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সেন্ট্রাল লন্ডনে যাওয়ার দ্রুত এবং সহজ উপায় হিসেবে রাখা হয়েছে হিথ্রো এক্সপ্রেস।

 

সেন্ট্রাল জাপান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

জাপানের কৃত্রিম দ্বীপ ‘সি বে’। এখানেই গড়ে তোলা হয়েছে সেন্ট্রাল জাপান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিশ্বের সেরা বিমানবন্দরের তালিকায় এর নাম রয়েছে। স্থানীয়রা চুবু এয়ারপোর্ট নামেই চেনে একে। জাপানের কেন্দ্রীয় শহর থেকে দক্ষিণে অবস্থিত নাগোয়ার দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। এই শহরের কাছে আইস উপসাগরের এক কৃত্রিম দ্বীপে নির্মিত চুবু বিমানবন্দরটির আয়তন ৫৮০ হেক্টর, রানওয়ের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩ হাজার মিটার। এখানে বিমান ওঠানামা করার জন্য ২৫টি রুট ব্যবহার করা হয়। বিমানের প্রধান টার্মিনালের আকৃতি ইংরেজি অক্ষর ‘ঞ’ এর মতো। এই নকশা চেক-ইন থেকে ৩০০ মিটার দূরত্ব তৈরি করে। বছরে প্রায় ৯.৮ মিলিয়ন যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে থাকে। বিমান বন্দরের উত্তরাংশ ব্যবহার করা হয় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য আর দক্ষিণাংশ ব্যবহার করা হয় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য। জাপান এয়ারলাইন্স ও এএনএ-এর ঘর এটি। এই বিমানবন্দরে রয়েছে ১ হাজার ফুট দীর্ঘ স্কাইডেক। এখানে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা নাগোয়া পোর্টের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। জাপানের ঐতিহ্যবাহী বাথহাউসও রয়েছে এখানে। উঁচু ছাদে দাঁড়িয়ে সমুদ্রে সূর্যাস্তের রূপ দেখতে অনেকেই ছুটে আসেন এই বিমানবন্দরে। এই বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা ঈর্ষণীয়। যাত্রীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিমানবন্দরের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে পারেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও কঠোর। যাত্রীদের বিনোদন ও বিশ্রামের জন্য রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেলের মতোই সব আয়োজন। বিমানবন্দরটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রীয় অঞ্চলের শিল্প ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। এ ছাড়াও বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা ছিল এই বিমানবন্দর নির্মাণের অন্যতম উদ্দেশ্য।

 

সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ছবিতে দেখা যাচ্ছে সিঙ্গাপুর চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি খণ্ডচিত্র। বিলাসবহুল তো বটেই, যাত্রীসেবা প্রদানেও সেরা এটি। বিশ্বের ১৩তম ব্যস্ত এই বিমানবন্দর দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ট্রানজিট পয়েন্ট। প্রতি সপ্তাহে এখান থেকে কমপক্ষে ২০০ ঠিকানায় উড়ে যায় বিমান। অন্তত ৫ হাজার বিমান নামে এই বিমানবন্দরে। ৮০টি আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন  কোম্পানি এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে। এ তো গেল হিসাব-নিকাশ। চাঙ্গি বিমানবন্দর আধুনিক প্রযুক্তি সহায়তা ও নির্মাণশৈলীতে সবাইকে ছাড়িয়ে। বিমানবন্দরের আধুনিকায়নে সবচেয়ে ভালো উদাহরণ এটি। এই বিমানবন্দরকে বলা হয়, বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল বিমানবন্দর। এখানে যাত্রীদের জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা থিয়েটার, মাল্টিমিডিয়া এন্টারটেইনমেন্ট হল। স্পা সেন্টার, বিশ্রামাগার। ঘুমানোর জন্য রয়েছে আরামদায়ক কাউচ। স্থাপত্যশৈলীতেও অনন্য এটি। এর ভিতরে রয়েছে ‘জুয়েল মাউন্টেইন ফলস’। রাতের বিমানবন্দর যে কারও চোখ ধাঁধিয়ে দেবে। দূর থেকে এই বিমানবন্দরের কাচের দেয়াল ঝলমল করে। ভিতরের ছাদ যেন তারায় মোড়ানো। আর তাদের যাত্রীসেবা? উত্তরটা হলো, চাঙ্গি বিমানবন্দর অপ্রতিদ্বন্দ্বী!

 

জুরিখ বিমানবন্দর

ভিআইপিদের বিশেষ সেবা প্রদানে এগিয়ে থাকা বিমানবন্দরের কথা উঠলে জুরিখ বিমানবন্দরের নাম আনতেই হবে। এটি সুইজারল্যান্ডের বাণিজ্যিক নগরী জুরিখের অদূরে অবস্থিত। এই বিমানবন্দর সুইস এয়ারের কেন্দ্রীয় ঘাঁটি। সাধারণ যাত্রীরা প্রথম ভ্রমণে এসে ধাক্কা খেতে পারেন। তাদের যাত্রীসেবা দেখে মনে হবে, আপনি নিজেই শুধু ভিআইপি সুবিধা ভোগ করছেন। অথচ আপনার জানা থাকা দরকার এই সুবিধা তারা প্রতিটি যাত্রীর জন্যই বরাদ্দ রাখেন। সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর এটি। প্রতি বছর ২৪.৯ মিলিয়ন যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ঘর বলে খ্যাত এই বিমানবন্দরের ভিতরেই পাঁচতারকা হোটেলের মতো প্রায় সব সুবিধাই ভোগ করতে পারেন যাত্রীরা। সাইকেল চালিয়ে ঘুরে আসতে পারেন গোটা বিমানবন্দর। চাইলে স্কেটিংও করতে পারেন। বিমানবন্দরের ভিতরে রয়েছে সুইস জাদুঘর। এই বিমানবন্দরের লাগেজ সার্ভিস অসাধারণ। পানাহার, প্রসাধন, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়, হোটেল রিজারভেশনসহ শিশুদের খেলার জায়গা রয়েছে বিস্তৃত। মিলবে মিনি থিয়েটারও। ইন্টারনেটসহ যাত্রীসেবার অনেক আয়োজনই আছে এখানে।

 

মিউনিখ বিমানবন্দর

জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দর বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর তো বটেই, যাত্রীসেবা প্রদানে সেরার তালিকায় এটি উপরের দিকেই রয়েছে। ইউরোপের এই সপ্তম ব্যস্ত বিমানবন্দরটি প্রতি বছর ব্যবহার করেন ৩৮.৭ মিলিয়ন মানুষ। মিউনিখ বিমানবন্দরের চমৎকার একটি দিক হলো, এই বিমানবন্দরের সঙ্গে গোটা শহরের যোগাযোগ রয়েছে। চারদিকে ছুটে যাওয়া যায় সহজেই। স্থাপত্যশৈলীতে যাত্রীদের চমকে দিতে পারে সহজেই। রঙিন কাচে মোড়ানো গোটা এয়ারপোর্ট এতটাই বিশাল যে, হাতে সময় থাকলে বিমানবন্দরটি ঘুরে আসার জন্য আলাদা ট্যুর প্যাকেজ নিতে পারেন! ফাস্ট ফুড ও ড্রিংকের জন্য চমৎকার জায়গা এটি। সস্তা বলে, যাত্রীরা এই বিমানবন্দর থেকে দুহাত ভরে কেনাকাটা করেন। ১৫০টি বড় রিটেইল শপ, ৫০টি ছড়ানো রেস্টুরেন্টে বসে আয়েশ করে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিতে পারেন। মিউনিখ বিমানবন্দরকে অনেকে ছোট একটি শহর বলেই মানেন। ফার্মেসি থেকে শুরু করে জিম সেন্টার, চাইল্ড কেয়ার সেন্টার, সার্ফিং, সিনেমা থিয়েটার, মিনি পার্ক, গলফ কোর্স... কী নেই এতে! সার্ভিস সেন্টারের ছড়াছড়ি এখানে। লন্ড্রি হোক আর ফ্যাক্স পাঠানো- সব পাবেন হাতের কাছেই। মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ভাঙিয়ে নিন, চলে যান টেরেসে।

 

ইনচেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর ইনচেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রতি বছর ৪১.৭ মিলিয়ন যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে থাকেন। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী ঘেঁষেই একটি দ্বীপে বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়। ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করা এই বিমানবন্দরটি বিশ্বের ২৪তম ব্যস্ত বিমানবন্দর। যাত্রীসেবা প্রদানে ইনচেন বিমানবন্দরে সর্বাধুনিক বিনোদন ব্যবস্থা করেছে। এখানে রয়েছে যাত্রীদের জন্য আলাদা ঘুমানোর কক্ষ। চাইলে আইস স্কেটিং (বরফে স্কেটিং করার খেলা) রিংক পাবেন। ছোটখাটো গলফ কোর্স থাকায় সময় কাটাতে চলে যেতে পারেন সেখানে। স্পা সেন্টারে শরীর ম্যাসাজ করাতে পারেন, ঘুমিয়ে নিতে পারেন সেখানেই। বিমানবন্দরের ভিতরে বিশাল পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন গাছের সারির মাঝে বসে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য চেয়ার রয়েছে। কোরিয়ান সংস্কৃতি সম্পর্কে যারা আগ্রহী তারা ঢুঁ মেরে আসতে পারেন বিমানবন্দরের ভিতরে থাকা জাদুঘর থেকে। যাত্রীদের জন্য এত বিনোদন ব্যবস্থা থাকার পরও অনেকের জিজ্ঞাসা থাকতে পারে, এ বিমানবন্দর পেরোতে কতক্ষণ লাগে? শুনে অবাক হবেন মাত্র ১৯ মিনিটেই আপনি সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিমানে চড়তে পারেন অথবা বিমান থেকে নেমে ট্যাক্সি ধরে ফিরতে পারেন গন্তব্যে। তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ১২ মিনিটের মধ্যেই আপনাকে অফিসিয়ালভাবে বিমানে চড়া বা বিমান থেকে এয়ারপোর্ট ছাড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। ডিউটি ফ্রি কেনাকাটার জন্য স্বর্গ বলা যায় একে। পর্যটকরা বলেন, ইনচেন থেকে খালি হাতে ফেরে বোকারা!

 

টোকিও হানেদা

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বিশ্বের চতুর্থ ব্যস্ত বিমানবন্দর টোকিও হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ব্যবসায়ীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানবন্দরটি। প্রতি বছর এটি ৬৮.৯ মিলিয়ন যাত্রী ব্যবহার করে। ব্যবসায়ী ছাড়াও এই বিমানবন্দরের যাত্রী তালিকায় পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখ করার মতো। তা ছাড়া টোকিওগামী বা টোকিও থেকে যাত্রা করা প্রায় সব অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল এই বিমানবন্দর দিয়েই সম্পন্ন হয়। জাপানের বৃহত্তম দুটি এয়ারলাইন্স জাপান এয়ারলাইন্স ও অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ এই বিমানবন্দরকে প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। জাপানের ব্যবসা ও পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে হানেদা বিমানবন্দরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এই বিমানবন্দর দ্রুততম সময়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা বেষ্টনী, ইমিগ্রেশন ও লাগেজ চেকিং শেষ করে। আর তাই বিমানবন্দরটি যাত্রীবান্ধব বলে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। যাত্রীসেবা প্রদানে বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মীদের আচরণ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। তারা সাহায্যপরায়ণ ও নিবেদিত। পরিচ্ছন্ন ও ছিমছাম বিমানবন্দর হিসেবেও এর সুনাম রয়েছে। ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের আকর্ষণ করে এই বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপিং সেন্টারগুলো। বিমানবন্দরের ভিতরেই রয়েছে পার্ক, খেলার জায়গা, ঘুমানোর ঘর, হোটেল, সিনেমা হল ইত্যাদি। জাপানের অন্যতম প্রধান এই বিমানবন্দরটি টোকিওর ওটাতে অবস্থিত। টোকিও স্টেশন থেকে এই বিমানবন্দর ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।

 

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

প্রতি বছর হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করেন ৫৯.৬ মিলিয়ন যাত্রী। এত বিশাল অঙ্কের যাত্রীকে অল্প সময়ে বিমানবন্দর ত্যাগ ও বিভিন্ন সেবা প্রদানে এগিয়ে বলেই এটি বিশ্বের শীর্ষ বিমানবন্দরের একটি। যাত্রীদের অত্যন্ত পছন্দের বিমানবন্দরও এটি। ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করে বিমানবন্দরটি। এয়ারপোর্ট অথরিটি হংকং এটি পরিচালনা করে। এশিয়ার ব্যস্ততম বিমানবন্দর ব্যবহার করে ক্যাথি প্যাসিফিক, হংকং এয়ারলাইন্স এবং ড্রাগোনিয়ার। হংকং জনপ্রিয় স্কাইসিটি নামে সে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই বিমানবন্দরও। যাত্রীসেবায় নিয়োজিত আছে ৬৫ হাজার কর্মী। ১০০টি এয়ারলাইন্স এখান থেকে ১৮০টি গন্তব্যে উড়ে যায়। বলা যায়, সারা বিশ্বের সঙ্গেই এর যোগাযোগ রয়েছে। এখানে রয়েছে এয়ারপোর্ট অ্যাম্বাসেডর; যাত্রীদের টার্মিনাল চিনিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সাহায্য করার জন্য এরা হাসিমুখে প্রস্তুত। রয়েছে শিশুদের খেলার মাঠ, হাসপাতাল, বিশ্রামঘর। দেশটির চেক ল্যাপ কক দ্বীপে অবস্থিত হওয়ায় বিমানবন্দরটি চেক ল্যাপ কক এয়ারপোর্ট নামেও পরিচিত।

 

হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

কাতারের রাজধানী দোহায় রয়েছে হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কাতার এয়ারওয়েজের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর এটি। উন্নত যাত্রীসেবা প্রদানে এগিয়ে থাকা বিমানবন্দরগুলোর এটি একটি। বিলাসবহুল বিমানবন্দর হিসেবেও এর নাম এসেছে বারবার। ২০০৯ সালে চালু হওয়ার কথা থাকলেও ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে। এই বিমানবন্দরটি একেবারেই নতুন, ঝকঝকে-তকতকে। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৫ সালে। উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি, অল্প সময়ে ইমিগ্রেশন পেরোনো, লাগেজ আউটের জন্যও এটি যাত্রীদের কাছে সমাদৃত। হামাদ বিমানবন্দর বিশ্বের ফাইভ স্টার এয়ারপোর্টগুলোর একটি। ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে এই বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এই বিমানবন্দরে রয়েছে বিনোদন কক্ষ, বিশ্রাম কক্ষ, শিশুদের খেলার জায়গাসহ বহু যাত্রীসুবিধা। দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিবর্তে এটি কাতারের প্রধান বিমানবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর