শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তুরস্কের একজন কামাল আতাতুর্ক

সাইফ ইমন

তুরস্কের একজন কামাল আতাতুর্ক

তুরস্কের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল তুর্কি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন একাধারে সামরিক ব্যক্তিত্ব, লেখক, বিপ্ল­বী ও জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রনেতা। তার নেতৃত্বে খেলাফত শাসনের অবসান ঘটিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ এক আধুনিক তুরস্কের যাত্রা।

তিনি আধুনিক তুরস্কের জনক। তুর্কি ভাষায় ‘আতা’ মানে জনক। ‘তুর্ক’ তো তুরস্ক। তাই তিনি আতাতুর্ক।

 

রাষ্ট্র আধুনিকায়নের এক অগ্রদূত

কামাল আতাতুর্ক উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম সংগ্রামের নেতা, ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার অগ্রপথিক। ১৯৮১ সালকে ‘আতাতুর্ক বর্ষ’ ঘোষণা করে জাতিসংঘ ও ইউনেস্কো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কামাল আতাতুর্কের আবির্ভাব ঘটে একজন সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পরাজয়ের পর তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি তুর্কি জাতীয় আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। আঙ্কারায় একটি অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে তিনি মিত্রশক্তির  প্রেরিত বাহিনীকে পরাজিত করেন। তার সামরিক অভিযানের ফলে তুরস্ক স্বাধীনতা লাভ করে। আতাতুর্ক এরপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেন। সাবেক উসমানীয় সাম্রাজ্যকে একটি আধুনিক, পশ্চিমা ও ধর্মনিরপেক্ষ জাতিরাষ্ট্রে রূপান্তর এই সংস্কারের উদ্দেশ্য ছিল। আতাতুর্কের সংস্কার আন্দোলনের মূলনীতির ওপর আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠিত। তার মতবাদ কামালবাদ নামে পরিচিত। ১২ বছর বয়সেই তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মিলিটারি একাডেমিতে ভর্তি হন। ১৯০৫ সালে তিনি স্নাতক শেষ করেন। তরুণ বয়সেই তিনি ‘ইয়াং তর্ক’ এর সদস্য হন। এটি ছিল তুরস্কের বুদ্ধিজীবীদের একটি আন্দোলন। ১৯০৮ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ইয়াং তর্ক বিপ্লবে অংশ নেন। এই বিপ্ল­বের ফলে সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদের পতন ঘটে। ১৯০৯ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত তিনি অটোমান  সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ১৯১১ সালের ইতালি-তুর্কিযুদ্ধে ও ১৯১২-১৩ সালে বলকানযুদ্ধে তুরস্কের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুরস্ক ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। ১৯১৫ সালের গালিপলি যুদ্ধে অটোমান তুরস্ক জয়লাভ করে। এ যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় তিনি বেশ খ্যাতি অর্জন করেন। পরে যুদ্ধে অটোমানরা পরাজিত হলে তাদের সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। এ সময় তুরস্ককে ভাগ না করতে তুর্কি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন কামাল আতাতুর্ক। তিনি আঙ্কারায় প্রাদেশিক সরকার গঠন করেন, যা বর্তমানে তুরস্কের রাজধানী। অটোমান সাম্রাজ্য বিলুপ্ত করে ১৯২৩ সালে তুর্কি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। একটি আধুনিক, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ জাতিরাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কামাল আতাতুর্ক বেশ কিছু রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেন। উসমানীয় রক্ষণশীল আমলে নারী পুরুষের সামাজিক মেলামেশা নিরুৎসাহিত করা হতো। ছিল আইনি বাধাও। ক্ষমতায় এসে সামাজিক সংস্কার কার্যক্রম খুব দ্রুত শুরু করেন। নারীদের পর্দাপ্রথা ও বাইরের জগতের সঙ্গে তাদের মেলামেশার বিষয়ে দৃষ্টিপাত করেন। কামাল আতাতুর্কের সংস্কার নিয়ে ১৯১৫ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত একটি জার্নালে পাওয়া যায় যেখানে তিনি দাবি করছেন সামাজিক পরিবর্তনের উপায় হলো (১) মা’দের শিক্ষিত করা; (২) নারীদের স্বাধীনতা প্রদান; (৩) একজন পুরুষ তার নীতি, চিন্তা ও অনুভূতি নারীদের সঙ্গে একই জীবনযাপনের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে পারে। যেহেতু তাদের ভিতর জন্মগতভাবে আকর্ষণ বিদ্যমান। নারীদের স্বাধীনতা প্রদানের জন্য মোস্তফা কামালের নতুন কিছু আইনের প্রয়োজন ছিল। কামাল আতাতুর্কের প্রথম পদক্ষেপ ছিল নারীশিক্ষা আইনে হস্তক্ষেপ। ১৯২৬ সালের ৪ অক্টোবর তুরস্কের সিভিল  কোড পাস হয়। নতুন আইনের অধীনে নারীরা উত্তরাধীকার ও তালাকের মতো বিষয়গুলোতে পুরুষের সমান ক্ষমতা পায়। কামাল আতাতুর্কের মতে নারী ও পুরুষের একতার মাধ্যমে সমাজ তার উদ্দেশ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে উসমানীয় যুগের মতো নারী পুরুষের পৃথকীকরণ থাকলে আকাক্সিক্ষত প্রগতি অর্জন করা যাবে না। কামাল আতাতুর্ক নারীদের প্রতি বলেন, আমাদের জন্য শিক্ষার যুদ্ধ জয়লাভ কর তবে তুমি তোমার দেশের জন্য আমাদের চেয়েও বেশি কিছু করতে পারবে। আমি তোমাদেরই বলছি। আর পুরুষদের প্রতি বলেন, নারীরা যদি জাতির সামাজিক জীবনে অংশগ্রহণ না করে তবে আমরা কখনোই আমাদের সামগ্রিক উন্নতি অর্জন করতে পারব না। এর ফলে আমাদের পশ্চাৎপদ হয়ে থাকতে হবে এবং পাশ্চাত্য সভ্যতার সঙ্গে তাল মেলানো অসম্ভব করে তুলবে। ১৯২৮ সালে তিনি তুর্কি শিক্ষা সংস্থা ও ১৯৩১ সালে তুর্কি ভাষা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি হাজার হাজার নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করেন। তিনি আঙ্কারা বিশ্ববিদালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ল্যাটিন ভিত্তিক আধুনিক তুর্কি বর্ণমালার প্রচলনসহ তুর্কি ভাষায় পবিত্র কোরআন শরিফ অনুবাদে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সবার জন্য রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন।

 

আতাতুর্কের শিক্ষাজীবন

শৈশবে কামাল আতাতুর্কের মা তাকে ধর্মীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের জন্য উৎসাহিত করেন। পরবর্তীতে তিনি তার পিতার নির্দেশে শেমসি এফেন্দি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। এটি ছিল একটি ব্যক্তিগত বিদ্যালয়। এর পাঠ্যক্রম তুলনামূলকভাবে অধিক ধর্মনিরপেক্ষ ছিল। তার পিতামাতা তাকে মুক্ত চিন্তার অধিকারী করতে চেয়েছিলেন। তারা চেয়েছিলেন কামাল আতাতুর্ক বাণিজ্য শিক্ষা লাভ করুক। কিন্তু কামাল আতাতুর্কের ইচ্ছা ছিল ভিন্ন। কাউকে না জানিয়ে মোস্তফা কামাল সেলোনিকা সামরিক বিদ্যালয়ে ১৮৯৩ সালে ভর্তি পরীক্ষা দেন। ১৮৯৬ সালে তিনি মোনাস্তির সামরিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর ১৮৯৯ সালে তিনি উসমানীয় মিলিটারি একাডেমিতে ভর্তি হন এবং ১৯০২ সালে স্নাতক হন। পরবর্তীতে তিনি কন্সটান্টিনোপলের উসমানীয় মিলিটারি কলেজ থেকে ১১ জানুয়ারি ১৯০৫ সালে স্নাতক হন। কামাল আতাতুর্কের পিতা তার খুব ছোট বয়সেই মারা যান কিন্তু তা সত্ত্বেও পুত্রের ব্যক্তিত্ব গঠনে বেশ প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন। অনেকে দাবি করেন আলী রিজা পুত্রের দোলনার ওপর নিজের তলোয়ার ঝুলিয়ে রেখেছিলেন এবং সামরিক বাহিনীতে তাকে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। এমনকি মোস্তফা যেন তার শিক্ষাজীবন আধুনিক ও ধর্মনিরপেক্ষ কোনো স্কুলে শুরু করে সে ব্যাপারটাও তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যদিও তার স্ত্রী জুবাইদা চেয়েছিলেন পুত্রকে ধর্মীয় স্কুলে পড়াতে। এভাবেই শৈশবকালেই কামাল আতাতুর্কের আধুনিকায়নের পথে হাঁটা শুরু।

 

ক্ষমতা দখল

কামাল স্বাধীনতা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন তার উদ্দেশ্য ছিল বৈদেশিক শক্তির দখল থেকে তুরস্ক ভাষাভাষী অঞ্চলগুলোর মুক্তি এবং এই অঞ্চলগুলোর অন্তর্বর্তী ভেদাভেদ দূর করা। তৎকালীন সুলতানের সরকার তাকে এবসেনশিয়ায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেয়। কিন্তু কোনোভাবেই কামাল আতাতুর্ককে থামানো সম্ভব হয়নি। কামাল আতাতুর্ক ঠিকই সেনাবাহিনী এবং সাধারণ জনগণের মনে তার জন্য সমর্থন নিশ্চিত করতে সক্ষম হন। সোভিয়েত রাশিয়ার কাছ থেকে আর্থিক ও অস্ত্রের দিক থেকে সাহায্য পেয়ে তার সৈন্য দল পূর্ব দিকে আর্মেনিয়ানদের চূর্ণ করে দেয় এবং দক্ষিণ থেকে ফ্রান্স ও ইতালিকে পিছু হটতে বাধ্য করে। এরপর তিনি নজর দেন গ্রিসের দিকে। ১৯২১ সালের সেপ্টেম্বরে কামাল আতাতুর্ককে সেনাবাহিনীর প্রধান করে তার সৈন্যরা সাকারিয়ার যুদ্ধে গ্রিসকে প্রতিহত করে। এরপর আঙ্কারার জাতীয় সংসদ ঘোষণা দেয় যে সুলতানের সরকারের পতন হয়ে গেছে অনেক আগেই। এরপরই ১৯২৩ সালের জুলাইয়ে একটি নতুন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যেটাতে তুরস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ওই বছরের অক্টোবরেই আঙ্কারার মহান জাতীয় সংসদ তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেয় এবং কামাল আতাতুর্ককে তাদের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে।

 

মিলিটারি ক্যারিয়ার

কামাল আতাতুর্ক একজন দক্ষ সামরিক অধিনায়ক হিসেবে তুরস্কে সম্মানিত ছিলেন, তিনি সে সম্মান আধুনিক তুরস্ক গঠনের কাজে লাগান এবং ১৯৩৮ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কার কাজ চালিয়ে যান। তিনি তুরস্ককে অতীতের কার্যক্রম থেকে বের করে একটি আধুনিক, গণতন্ত্রী ও ধর্মনিরপেক্ষ জাতিতে পরিণত করেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি দামেস্কে পঞ্চম বাহিনীর আলী ফুজাত ও লুতফু মুফিতের কোম্পানিতে স্টাফ ক্যাপ্টেন হিসেবে নিয়োগ পান। মোস্তফা এলভানের নেতৃত্বাধীন সংস্কারবাদী কর্মকর্তাদের গোপন বিপ্লবী সংঘ ভাতান ভে হুরিয়াতে তিনি যোগ দেন। ১৯০৭ এর ২০ জুন সিনিয়র ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি পান এবং ১৯০৭ এর ১৩ অক্টোবর মানাসতিরে তৃতীয় বাহিনীর সদর দফতরে নিয়োগ পান। ১৯১০ সালে তিনি কসোভোতে আলবেনিয়ান বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।   ইতালি ১৯১১ সালের সেপ্টেম্বরে অটোমান লিবিয়ায় ১৫০,০০০-এর বেশি সৈন্যবাহিনী গঠন করে। কামাল আতাতুর্ক ছিলেন শুধুমাত্র অটোমান কমান্ডারদের একজন। যারা মাত্র ৮,০০০ জন নিয়ে নিয়মিত বাহিনী, ২০,০০০ নিয়ে স্থানীয় আরব এবং বেদুইন মিলিশিয়াদের সদস্য ছিল। কামাল আতাতুর্ক টরকাউলের যুদ্ধে ১৯১১ সালের অটোমান বিজয়ের চাবিকাঠি ছিলেন। ১৯১৬ সালে কামাল আতাতুর্ককে রাশিয়ান সম্মুখে পাঠানো হয় যেখানে গিয়ে তিনি জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং তাকে পাশা নামকরণ করা হয়। কেননা তিনিই ছিলেন প্রথম তুরস্ক জেনারেল যে রাশিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিলেন। এর কিছুদিন পর তিনি দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ার দখল নেন এবং সেখানে কামাল আতাতুর্কের পরিচয় হয় কর্নেল ইস্মাতের সঙ্গে যিনি পরবর্তীতে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র গঠনে তার অনেক বড় একজন মিত্র ছিলেন।

 

বিস্তর ভাস্কর্য

ইউরোপ ও এশিয়ার সঙ্গমস্থলে অবস্থিত বলে তুরস্কের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিবর্তনে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়েছে। গোটা মানব সভ্যতার ইতিহাসজুড়েই তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপের মানুষের চলাচলের সেতু হিসেবে কাজ করেছে। তারপরও স্থাপত্য, চারুকলা, সংগীত ও সাহিত্যে তুরস্ক নিজস্ব পরিচয়ের সৃষ্টি করতে পেরেছে। সারা তুরস্কের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্কের রয়েছে অনেক মূর্তি। একেকটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যে একেক রকমভাবে আতাতুর্ক এবং তুরস্কের ইতিহাস, ঐতিহ্য বিবৃত করা হয়েছে। কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য ছাড়াও তুরস্কেও উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো মর্মর সাগর তীরে পোতাশ্রয়ে অপূর্ব মর্মর মূর্তি, আঙ্কারাতে ইন্ডিপেনডেন্স টাওয়ারের পাদদেশে তুরস্কের জাতীয় সংস্কৃতির ধারক তিন নারী মূর্তিসহ ইত্যাদি।

 

প্রথম প্রেসিডেন্ট

আধুনিক মানের তুরস্কের প্রথম প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্কের শাসনামলে তুরস্কে ব্যাপক শিল্পায়ন সাধিত হয়। তিনিই দেশটিতে প্রথম ইউরোপীয় আদলে আইন প্রণয়ন করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন আধুনিকায়নের পথে তাদের সাহায্য লাগবে। ১৯২৬ সালে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘সভ্য দুনিয়া থেকে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে। তাই তাদের ধরা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’ এর আট বছর পর তিনি তুরস্কের সবার জন্য নামের সঙ্গে পদবি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করেন। ওই সময় তুরস্ক সরকার লিগ অব ন্যাশনে যোগ দেয় এবং সাক্ষরতার হার বাড়ায় ও নারীদের ভোটাধিকার দেয়। যদিও তুরস্কে তখন একদল কেন্দ্রিক সরকারই ছিল। এ ছাড়াও তিনি বিরোধী সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন, বামপন্থি সব সংগঠন বন্ধ করে দেন এবং কুর্দিস্তানের স্বায়ত্তশাসিত করার সব চেষ্টা মূলেই ধ্বংস করে দেন। ১৯৩৮ সালের ১০ নভেম্বর নিঃসন্তান কামাল আতাতুর্ক ইস্তাম্বুলে নিজ শয়নকক্ষে মৃত্যুবরণ করেন।

সর্বশেষ খবর