বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শীর্ষ ধনীদের বাড়ি

সাইফ ইমন

শীর্ষ ধনীদের বাড়ি

টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন এমন ব্যক্তিদের আমরা বলি ধনকুবের। আর পৃথিবীর শীর্ষ ধনকুবেরদের নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। শীর্ষ ধনকুবেরদের বাড়ি নিয়ে আজকের রকমারি-

   

৬৬০০০ বর্গফুটের বাড়ি

বিল গেটস

ওয়াশিংটনের মেডিনায় লেক ওয়াশিংটনের পাশে ৬৬ হাজার বর্গফুটের ওপর তৈরি হয়েছে বিল গেটসের বিলাসবহুল বাড়ি। এ বাড়ির দাম প্রায় ১৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার। এ বাড়ির দেয়ালে রয়েছে অত্যাধুনিক সেন্সর। যে কেউ নিজের পছন্দমতো ঘরের তাপমাত্রা বদলে ফেলতে পারেন। ৫০০ বছরের পুরনো বহু মূল্যবান ডগলাস ফার গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি এ বাড়ির বেশির ভাগ অংশ। বাড়ির সামনে রয়েছে ৬০ ফুট লম্বা সুইমিং পুল। অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত ২৪টি বাথরুম রয়েছে বাড়িটিতে। একসঙ্গে ২০০ জন অতিথি থাকতে পারেন অতিথিশালায়। মোট ছয়টি রান্নাঘর রয়েছে এখানে। ২ হাজার ১০০ বর্গফুটের লাইব্রেরিতে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন পান্ডুলিপিসহ গেটসের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি। এই বাড়িটির বর্তমান বাজারদর ১৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়াও আশপাশের এলাকা কিনে নিতে গেটসকে আরও ১৪ মিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়েছে। তিনি জায়গাটি কিনেছিলেন ১৯৯৮ সালে এবং পরবর্তীতে পুরো কাজ সম্পন্ন করতে ৭ বছর সময় লাগে। ১০০০০ স্কয়ার ফিটের ফায়ারপ্লেসসহ ডাইনিং রুমও আছে যেখানে একসঙ্গে ঘনিষ্ঠ ২৪৫ জন বসতে পারে এবং এর সঙ্গেই একটি ৩৯ ফিট বাই ২৩ ফিটের একটি কিচেন রয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে দামি

প্রিন্স সালমান

দুই বছর আগে বিক্রি হয়েছিল ফ্রান্সের শ্যাঁতু লুই ফোরটিন নামের একটি বিলাসবহুল প্রাসাদসম বাড়ি। ওই বাড়ি কিনেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ফরচুন ম্যাগাজিন তখন সেটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়ি বলে অভিহিত করেছে। মোট ৫৭ একর জায়গার ওপর তৈরি এই বাড়িটিতে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। সৌদি যুবরাজ খুব সতর্কতার সঙ্গে কিছু শেল কোম্পানির মাধ্যমে এই বিলাসবহুল বাড়িটি কিনেছিলেন। এখন এই বাড়ির মালিকানাও আছে এসব কোম্পানির হাতে। শেল কোম্পানি হলো একধরনের নিষ্ক্রিয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এগুলো মূলত ভবিষ্যতে ব্যতিক্রমী কোনো আর্থিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই বাড়িতে কী কী আছে তা নিয়ে এখনো রয়েছে নানা জল্পনা।

৭ মিলিয়ন ডলারের বাড়ি

মার্ক জুকারবার্গ

ফেসবুকের নির্বাহী প্রধান কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গের সিলিকন ভ্যালির বাড়িটি অনন্য। বাড়িটি তার আসন্ন মেনলো পার্ক ক্যাম্পাস অফিস থেকে মাত্র ১০ মিনিট ড্রাইভ দূরত্বে। বাড়িটি কেনার আগ পর্যন্ত একই এলাকায় জুকারবার্গ বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। স্যান মারকিউরি নিউজের মতে বাড়িটি তিনি ক্রয় করেছেন ৭ মিলিয়ন ডলার দিয়ে। বাড়িটিতে রয়েছে পাঁচটি বাথরুম, একটি সানরুম, একটি সুইপিং পোর্চ, সল্টওয়াটার পুল এবং প্রয়োজনীয় গোপনীয়তা। রিয়েল স্টেটের ওয়েবসাইট থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে সেখান থেকে জানা গেছে যদিও বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে ১৯০৩ সালে কিন্তু এরপর প্রচুর উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। যার মধ্যে একটি ইন্টারটেনমেন্ট প্যাভিলিয়ন এবং একটি আউটডোর ফায়ারপ্লে­স অন্যতম।

 

দৃষ্টিনন্দন বাড়ি

কার্লোস স্লিম

কার্লোস স্লিম নিছক এক সাদামাটা অবস্থা থেকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। ২০১০-১৩ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর বিশ্বের সেরা ধনী হন তিনি। ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের ধনসম্পদ রয়েছে এই ধনকুবেরের। এমন ব্যক্তিদের নিয়েই বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস প্রতি বছর বিশ্ব ধনীদের এই তালিকা তৈরি করে থাকে। সিøমের মূল ব্যবসা টেলিফোনের। মেক্সিকোর টেলিযোগাযোগ বাজারে ফিক্সড-লাইন ফোনের ৮০ শতাংশ এবং মোবাইল ফোনের ৭০ শতাংশই রয়েছে যথাক্রমে তার টেলমেক্স ও আমেরিকা মোবাইলের দখলে। মার্বেল পাথর ব্যবহার করেই এই ধনকুবেরের বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। এতে ১২টি বেডরুম, একটি বলরুম, বিলাসবহুল গোসলখানা, পুল, ১৫টি গাড়ি রাখার জায়গা ছাড়াও আধুনিকতার বহু আয়োজন রয়েছে।

 

প্রাসাদ আন্তিলা

মুকেশ আম্বানি

ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির বাড়ি ‘আন্তিলা’ অবস্থিত মুম্বাইয়ে। আন্তিলার দাম প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অত্যাধুনিক এই বাড়িটি ৪০ হাজার স্কয়ার ফুটের ২৭ তলা উঁচু একটি টাওয়ার। এটি ৫৭০ ফুট লম্বা। পার্কিংয়ের জন্য ছয় তলা রাখা হয়েছে। কারণ সেখানে আম্বানির ১৬৮টি গাড়ি থাকে মহাসাড়ম্বরে। নয়টি এলিভেটর ও প্রতি তলায় ব্যক্তিগত জিমনেসিয়াম আছে। বাড়িটিতে ৬০০ চাকর আছে। আটলান্টিক মহাসাগরের কল্পিত একটি দ্বীপের নামের সঙ্গে মিল রেখে বাড়িটির নাম রাখা হয়েছে। ভারতের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানির জন্যই নির্মিত এই বাড়ি। বাড়িটি নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। বাড়িটিতে হেলিপ্যাড (হেলিকপ্টার অবতরণের স্থান), সুবিশাল পাঠাগার, বিরাট খাবার ঘর, দুর্লভ মার্বেল পাথরের মেঝে, এমনকি স্নো-রুমও রয়েছে।

 

সাদাসিধা বাড়ি

ওয়ারেন বাফেট

ওয়ারেন বাফেট বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন। অথচ সত্যিকার অর্থেই অত্যন্ত সাধারণ মানের জীবনযাপন করেন বাফেট। ৫০ বছর আগে বিয়ের পর ৩ বেডরুমের যে বাড়িটি কিনেছিলেন এখনো সেখানেই বাস করেন। এমনকি বাড়িটির চারপাশে নেই কোনো আলাদা প্রাচীর। তিনি বলেন, আমার যা কিছু দরকার তার সবই আছে এখানে। বিশ্বের এত বড় ধনী, তার বাসার চারদিকে নেই কোনো সীমানা প্রাচীর। এ বিষয়ে তার পরামর্শ হলো প্রকৃতপক্ষে আপনার যতটুকু দরকার তার বেশি কিছু কিনবেন না। আপনার সন্তানদেরও এমনটা ভাবতে ও করতে শেখান। নিজের গাড়ি তিনি নিজেই চালান। তার আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেট কোম্পানি। কিন্তু ভ্রমণ করেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে ইকোনমিক ক্লাসে। অনেকেই ভাবতে পারেন, এটা অসম্ভব। কিন্তু তিনি তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর