বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্যস্ত বিমানবন্দর এখন জনশূন্য

আবদুল কাদের

ব্যস্ত বিমানবন্দর এখন জনশূন্য

করোনাভাইরাস আতঙ্ক যেন বেড়েই চলছে। সামাজিক দূরত্ব আর লকডাউনেও থামানো যাচ্ছে না কভিড-১৯-কে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ বিচ্ছিন্ন করেছে তাদের বিমান পরিষেবা। গত দুই মাসে বিশ্বজুড়ে আড়াই লাখেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার মতে, করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯-এর প্রভাবে বিশ্বের বিমান সংস্থাগুলোকে ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত লোকসানের মাশুল গুনতে হতে পারে।

 

 

এশিয়া অঞ্চল

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রীর সংখ্যা : ৬৮.৫ মিলিয়ন

এটি বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর। চেক ল্যাপ কক এয়ারপোর্ট নামেও পরিচিত বিমানবন্দরটি। কিন্তু করোনা মহামারী আকার ধারণ করায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে বন্দরটি। পরিচালক সংস্থা এয়ারপোড্রট অথরিটি হংকং কভিড-১৯ প্রতিরোধে গ্রহণ করেছে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ। বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের টারম্যাকের ওপর নামার পরপরই নিয়ে যাওয়া হয় পৃথক স্থানে। সেখানে করা হয় যাত্রীদের একাধিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা। প্রত্যেক যাত্রীকে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ে তাপমাত্রা যাচাই এবং কারও মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পাশাপাশি সব যাত্রীকে পালন করতে হচ্ছে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন। প্রতিদিন দুবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয় কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রীদের। যদিও ইতিমধ্যে দেশটির জাতীয় বিমানবন্দরটির প্রায় ৭০ শতাংশ যাত্রী কমেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘অধিকাংশ যাত্রী তাদের টিকিট বাতিল করেছে’।

 

সিঙ্গাপুর চাঙ্গি বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রীর সংখ্যা : ৭০ মিলিয়ন

করোনাভাইরাস সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ায় চাঙ্গি এয়ারপোর্ট গ্রুপও এই বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের জন্য গ্রহণ করেছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। বিশেষত সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং স্পেন থেকে আসা যাত্রীদের সিঙ্গাপুরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। যারা সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা এবং গত ১৪ দিনের মধ্যে যারা সেসব দেশে এসেছে তাদের ‘স্টে হোম নোটিস’ জারি করেছে। এমনকি সিঙ্গাপুর ভ্রমণের ওপর দেশটির সরকার কড়াকড়ি নির্দেশ জারি করেছে। বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাব পড়েছে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরেও। করোনা আতঙ্কে যাত্রী হারাতে শুরু করেছে বিমানবন্দরটি। ব্যস্ততম টার্মিনালগুলো এখন যাত্রীশূন্য হয়ে পড়েছে। চাঙ্গি এয়ারপোর্ট গ্রুপ জানায়, ‘বহির্বিশ্বের মতো এখানেও যাত্রীর সংখ্যা কমেছে ব্যাপকহারে। মাত্র ৩০-৩৫ শতাংশ যাত্রী এখন প্রয়োজেন যাতায়াত করছে’।

 

থাইল্যান্ড বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ১২৫ মিলিয়ন

পর্যটনশিল্প দেশটির জাতীয় আয়ের উৎস। এখানে বেশির ভাগ ভ্রমণকারী আসেন পাশের রাষ্ট্র চীন থেকে। পরিসংখ্যান মতে, গত বছর পর্যটকদের মধ্যে ১ কোটিরও বেশি ছিল চীনা নাগরিক। সম্প্রতি কভিড-১৯-এর কারণে চীন সরকার উহান শহরকে দেশটির অন্যান্য শহর থেকে আলাদা করার পর থাই অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ে। জনসমাগম কমতে শুরু করে শপিং মল, পর্যটন কেন্দ্রগুলোয়। বিমানবন্দরেও যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। বিপর্যয়ের মুখে পড়ে থাই এয়ারওয়েজ। দেশটির সুবর্ণভূমি জাতীয় বিমানবন্দর গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ যাত্রী তাদের টিকিট বাতিল করেছে। আর এখনো যেসব পর্যটক থাইল্যান্ডে আসছেন তাদের বিমানবন্দরে পরীক্ষা করা হচ্ছে’।

 

ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ৪০ মিলিয়ন

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো করোনার প্রভাব ভারতে পড়ায় সরকার লকডাউন করে দিয়েছে দেশটির সবকটি রাজ্য। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে ভারত। করোনাভাইরাসের কারণে নিষেধাজ্ঞা ও যাত্রী সংকটে ভারতে বিভিন্ন এয়ারলাইনস কোম্পানিও ফ্লাইট বাতিল ও স্থগিত করেছে। সেই তালিকায় আছে ভারতের প্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরটিও। তবে যারা মার্চের ১৫ তারিখের আগে এসেছেন তাদের থার্মাল স্ক্রিনিং করে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশটি ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানির নাগরিকদের ভিসা প্রদান স্থগিত করেছিল। এর আগে এই সীমাবদ্ধতা চীন, ইতালি, ইরান, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের জন্য কার্যকর ছিল। ভারত সরকার ইতিমধ্যে অধিকাংশ ভিসা স্থগিত করেছে।

 

কাতার এয়ারওয়েজ

বার্ষিক যাত্রী : ৩৮.৭ মিলিয়ন

বহির্বিশ্বের মতো প্রাণঘাতী করোনার প্রভাব পড়েছে ধনী রাষ্ট্র কাতারেও। কাতার সরকার গত ১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সব ধরনের কার্গো এবং বিদেশি ফ্লাইট ব্যতীত অভ্যন্তরীণ বিমানগুলো নিষিদ্ধ করেছে। যার সুবাদে কাতারজুড়ে গত কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তবে সরকার কাতারি নাগরিকদের দেশে প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি  করেনি।

মহামারীজনিত কারণে আটকা পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বিমান সংস্থা পুরো ফ্লাইট শিডিউল পরিচালনা করছে।

কাতার বিমান সংস্থার প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক অনুরোধ পেয়েছি, কিছু কিছু দেশে আমাদের দূতাবাসগুলো, কাতার এয়ারওয়েজ বন্ধ না করার অনুরোধ জানিয়েছি।’

তবে যারা বিদেশ থেকে সদ্য আগত কাতারি নাগরিকদের পাঁচতারকা হোটেলে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া গেলে সেই এলাকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।

 

দক্ষিণ কোরিয়ান এয়ারলাইনস

বার্ষিক যাত্রী : ৫৭ মিলিয়ন

দক্ষিণ কোরিয়ান এয়ারলাইনস কোং করোনা আতঙ্কে ইতিমধ্যে বিমানের ক্রুদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ করেছে। যে বিমানগুলো বন্দরে নামছে সেগুলোকে জীবাণুমুক্ত রাখার সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কোরীয় সরকার। যদিও দেশটির গুয়াংজু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জনমানবশূন্য ভুতুড়ে জায়গায় পরিণত হয়েছে। বেশ কিছুদিন আগেও বিমাবন্দরটিতে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক যাত্রীর সমাগম হতো। করোনা আতঙ্কে বদলে গেছে চিরচেনা সে দৃশ্য। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোয় যাত্রীসংখ্যা খুবই সীমিত। সেখানে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা- বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে বিমান থেকে নামার পরপরই মেডিকেল টিম নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখছে।

 

জাকার্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ৬০ মিলিয়ন

ইন্দোনেশিয়া দ্বীপপুঞ্জে কভিড-১৯ মারাত্মক বিস্তার রোধে এক মাসের জন্য ভিসা স্থগিত করবে এমন ঘোষণার পরই  দেশটির বড় জাকার্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। এতে পর্যটনশিল্প সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবুও দেশটির সরকার ইতিমধ্যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে জানুয়ারিতে যখন চীনে প্রথম করোনাভাইরাস প্রকাশ পায়, তখন বালির নাগুরাহ রাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশির সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়েছিল। কিন্তু করোনা আতঙ্ক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরগুলোয় পর্যটকের সংখ্যা কমতে থাকে। জাকার্তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনা আতঙ্কে দেশটির বিমান সংস্থায় ২০ শতাংশ যাত্রী কমে। তবুও করোনা প্রতিরোধে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

 

ইউরোপ অঞ্চল

হিথ্রো বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ৮০ মিলিয়ন

যুক্তরাজ্যের বড় বিমানবন্দরগুলো এখন প্রায় ফাঁকা। কারণ বিশ্বব্যাপী করোনা প্রাদুর্ভাবের পর বিমান ভ্রমণের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। করোনা বিস্তার রোধে যুক্তরাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে এয়ারলাইনসগুলো তাদের সব ফ্লাইট পিছিয়েছে। কোনো কোনো ফ্লাইট আবার বাতিলও করা হয়েছে। কিছু কিছু এয়ারলাইনস ইতিমধ্যে তাদের গ্রাহকদের বুকিং করা  টাকাও ফেরত দিয়েছে। করোনা আতঙ্কে যুক্তরাজ্যের অনেক বিমানবন্দরের টার্মিনাল বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি ইজিজেট বলেছে যে টার্মিনালগুলোর পুরো বহরটি গ্রাউন্ডিং করবে এবং পূর্ব লন্ডনের অ্যান্ড এইচ নাইট অ্যাঙ্গেল হাসপাতালে কাজ করার জন্য তাদের কর্মীদের উৎসাহিত করবে। আঞ্চলিক বিমান সংস্থার প্রধান জোহান বলেন, করোনার প্রভাবে যুক্তরাজ্যের বিমানের টিকিট  বুকিং ৭৫% কমে গেছে। যদিও হিথ্রো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ৬৩ মিলিয়ন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটির জনগণ এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। এতে মানুষের জীবনযাত্রাও বদলে গেছে রাতারাতি। জার্মানি ইতিমধ্যে করোনা প্রতিরোধে বন্ধ করেছে তাদের সব বিমানবন্দর। যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের নাগরিক তাদের জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে যারা ফ্রাঙ্কফুর্টে আটকে গেছেন তাদের যেখান থেকে যাত্রা করেছেন সেই বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে নিজ নিজ এয়ারলাইনস। তবে জার্মান নাগরিক ও তাদের পরিবার এখনো বিনা বাধায় দেশে ফিরতে পারবেন। মূলত পর্যটক বা ব্যবসার কাজে স্বল্পসময়ের ভিসা নিয়ে আসা ব্যক্তিদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে ট্রানজিট যাত্রীদের বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। শর্ত একটাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নির্দিষ্ট স্থানে থাকতে হবে।

 

রোম বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ৪৯.৪ মিলিয়ন

করোনাভাইরাস মহামারীতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালি। গেল ১২ মার্চ থেকে একটি বড় লকডাউন শুরু করে দেশটির সরকার, যা ২৫ মার্চ থেকে আবার বাড়ানো হয়। রোম বিশ্ব থেকে আলাদা হয়ে আছে। ইতালি সরকার কভিড-১৯ কমিয়ে আনতে রোমের দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শহরের প্রধান বিমানবন্দর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি-ফিমাইসিনো বিমানবন্দর গত মাস থেকে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অ্যারোপার্টি দ্য রোমা। যদিও বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনাল খোলা রেখেছিল প্রয়োজনীয় বিমান পরিষেবার জন্য। পরবর্তীতে ১৪ মার্চ থেকে রোমের সিয়াম্পিনো বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়।

প্যারিস এয়ারপোর্ট

বার্ষিক যাত্রী : ৭৯ মিলিয়ন

প্রাণঘাতী কভিড-১৯ ভাইরাসের প্রভাবে থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। ১৪ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্রান্সের বৃহত্তম দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আংশিক এলাকা যাত্রী সাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এয়ারলাইনসগুলো তাদের ফ্লাইট বাতিল  ঘোষণার কারণে এয়ারপোর্ট অনেকটা যাত্রীবিহীন ফাঁকা হয়ে পড়েছে।

যাত্রীদের পরীক্ষায় ভাইরাস আক্রান্তদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পর্যটকবিহীন ফ্রান্সের প্রায় প্রতিটি শহর এখন জনমানবহীন ভৌতিক নগরে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে ফ্রান্স।

আমেরিকা অঞ্চল

আমেরিকান এয়ারলাইনস

বার্ষিক যাত্রী : ২০০ মিলিয়ন

জানুয়ারি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সান ফ্রান্সিসকো, নিউইয়র্ক, জন এফ কেনেডি এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের বিমানবন্দরগুলোয় আগতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালেও বর্তমানে দেশটির অবস্থা ভয়াবহ। সময় যত গড়াচ্ছে, করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইতিমধ্যে ভ্রমণকারী সব বিদেশি নাগরিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। মার্কিন নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা, যারা কিনা উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন তাদের অবশ্যই ১৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এসব বিমানবন্দরে উন্নতমানের থার্মাল স্ক্রিনিং ব্যবহার করে করোনা আক্রান্ত চিহ্নিত করা হচ্ছে। যাদের শনাক্ত করা হচ্ছে তাদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। আর সব বিমান যাত্রীকে সরকারের পক্ষ থেকে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও ইউরোপের বিমান চলাচলের ট্র্যাককারী এনওয়াইএসই আরকা এয়ারলাইনস ইনডেক্স থেকে জানা যায়, আমেরিকান এয়ারলাইনসের  শেয়ার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ পড়ে গেছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ডেলটার  শেয়ার ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইনস গত মাসের ফ্লাইট পরিবর্তনের জন্য ফি মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, করোনা মোকাবিলায় সব নাগরিককে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

কানাডা বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ১৫০ মিলিয়ন

মার্চের শুরু থেকেই কানাডা ঘোষণা করেছে যে, কানাডার নাগরিক বা বিমানের ক্রু সদস্য, কূটনীতিক এবং স্থায়ী বাসিন্দা নয় এমন কেউই কানাডায় প্রবেশ করতে পারবে না। বিশেষত সীমান্তের পাশাপাশি দেশটির সরকার বহির্বিশ্বের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা কানাডিয়ানদের পরবর্তী নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত কানাডার বাইরে সব অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দিচ্ছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে, পরবর্তীতে দেশের বাইরে যাওয়া যাত্রীরা ফিরে আসতে অসুবিধা বা কানাডায় ফিরে নাও আসতে পারে। দেশটির সরকার অভ্যন্তরীণ বিমান পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়। এর পরিবর্তে স্থায়ী বাসিন্দা বা যাত্রীর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য স্থল, রেল ও সমুদ্রপথে কানাডায় প্রবেশ করতে পারবে। তবে বহিরাগত নাগরিক হলে অবশ্যই হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য সংস্থা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান। প্রয়োজনে নাগরিকদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবেন বলেও আশ্বাস দেন।

 

সাও পাওলো বিমানবন্দর

বার্ষিক যাত্রী : ৪২ মিলিয়ন

করোনা আতঙ্কে ব্রাজিল সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ব্রাজিলের নাগরিক এবং আশপাশের দেশের নাগরিক বাদে কোনো বিদেশি দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে না বলে ঘোষণা দেয় সরকার। যদিও এখন পর্যন্ত দেশটি তাদের কোনো বিমানবন্দর অভ্যন্তরীণ এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেনি। বিশ্ব মহামারীর এমন মুহূর্তে সাও পাওলো বিমানবন্দরে যাত্রীরা করোনা আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করছেন। প্রেসিডেন্ট ট্র্যাকসিয়ো ফ্রেইটাস বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিমানবন্দর বন্ধ হবে না। তিনি আরও বলেন, ‘ব্রাজিলের বিমানবন্দর এবং বাস স্টেশনগুলোতে ভাইরাস বিস্তার রোধে প্রয়োজনে যাত্রীদের চলাচল সীমিত করা হবে।

সর্বশেষ খবর