রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

Forbes এর দৃষ্টিতে সর্বকনিষ্ঠ ধনকুবের ২০২০

সাইফ ইমন

Forbes এর দৃষ্টিতে সর্বকনিষ্ঠ ধনকুবের ২০২০

কাইলি জেনার

বয়স : ২২ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  এক বিলিয়ন ডলার

কাইলি ক্রিস্টেন জেনার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৯৭ সালের ১০ আগস্ট। এই সর্বকনিষ্ঠ বিলিওনিয়ার একজন মার্কিন মডেল, অভিনেত্রী, উদ্যোক্তা, সামাজিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। কাইলি মাত্র ৯ বছর বয়স থেকেই টেলিভিশন সিরিজ কিপিং আপ উইথ দ্য কারদেশিয়ান্সে অভিনয় করে আলোচিত। এর বাইরেও তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে এখন বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত কাইলি জেনার। তার নিজস্ব ব্র্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ২০১২ সালে পোশাকের ব্র্যান্ড পেকসান এবং তার পাশাপাশি তার বোন কেন্দ্র্রালকে সঙ্গে নিয়ে একটি নতুন ধরনের ওয়্যার ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু করেন। নাম দেওয়া হয় ‘কেন্দ্রাল এবং কাইলি’। ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে টাইম ম্যাগাজিনের ‘২০১৪ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী কিশোর-কিশোরী’ তালিকায় স্থান করে নেন কাইলি।

 

লুকাস ওয়াল্টন

বয়স : ৩৩ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  ১৮.৪ বিলিয়ন ডলার

তালিকায় বর্তমানে ১৪ নম্বরে রয়েছেন এ শীর্ষ তরুণ ধনকুবের। যুক্তরাষ্ট্রের উইওমিংয়ে বসবাসকারী লুকাস ওয়াল্টন হচ্ছেন ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়াল্টনের নাতি এবং ২০০৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত কোম্পানির প্রয়াত স্বত্বাধিকারী জন ওয়াল্টনের পুত্র। ফলে ছোটবেলা থেকেই লুকাস গণমাধ্যমে পরিচিত মুখ। পরবর্তীতে পৈতৃক সূত্রে বিপুল সম্পদের মালিক হন লুকাস ওয়াল্টন। বাবার মৃত্যুর পর তার সম্পদের বেশির ভাগের দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে লুকাসের ওপর। ধনকুবেরদের তালিকায় লুকাস ওয়াল্টন নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। কারণ কথিত আছে, বিপদে কেউই তার কাছে গেলে সেখান থেকে খালি হাতে ফেরেন না। এই ধনকুবেরের ফার্স্ট সোলার এবং আরভেস্ট ব্যাংকেরও মালিকানা রয়েছে। বিশ্বের তরুণ ধনীদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সম্পদের মালিক।

 

আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসন

বয়স : ২৩ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  ১.১ বিলিয়ন ডলার

১৯৯৬ সালে জম্ম নেন আলেকজান্দ্রা। বর্তমানে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ বিলিওনিয়ার। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক। যদিও তিনি তার বাবার কোম্পানির কোনো পদে সম্পৃক্ত নন এখনো। এ তরুণ ধনকুবেরের পছন্দ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। এ নিয়েই সারাটা সময় অতিবাহিত করেন তিনি। শুধু যে শখের বশে তিনি ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তা কিন্তু নয়, কারণ তিনি এই বয়সেই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় নরওয়ের তিনবারের চ্যাম্পিয়ন! সেই সুবাদে এই সুন্দরী জাতীয় হিরোতে পরিণত হয়েছেন ইতিমধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সর্বত্র আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসনের জনপ্রিয়তা। তার বাবা জোহান এইচ অ্যান্ডারসন, যিনি নরওয়ের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্ড এবং অন্যতম বৃহৎ তামাক প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। জোহান অ্যান্ডারসন কোম্পানির ৪২.২ শতাংশ দুই মেয়েকে দেন।

 

গুস্তাভ মাগনার উইটজো

বয়স : ২৬ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  ২.৩ বিলিয়ন ডলার

নরওয়ের ভেরভার অধিবাসী গুস্তাভ মাগনার উইটজো। সুদর্শন এই তরুণ এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ একজন বিলিওনিয়ার। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বিশাল সম্পদের মালিক তিনি। বর্তমানে নরওয়ের শীর্ষ ধনকুবেরদেরও একজন গুস্তাভ মাগনার উইটজো। মাত্র ২৫ বছর বয়সে এত ধন-সম্পদের মালিক বনে যাওয়া গুস্তাভ মাগনার উইটজো বিলাসিতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেননি। বরং তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।  গুস্তাভ উইটজোরও ভাগ্য খুলে যায় তার বাবার কল্যাণে। ২০১৩ সালে তাকে সালমার নামক মৎস্য চাষকারী প্রতিষ্ঠানের ৪৭ শতাংশের মালিকানা হস্তান্তর করেন তার বাবা। উল্লেখ্য, এটিই বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্যামন মাছ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তার বাবা গুস্তাভ মাগনার সিনিয়র ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এ প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির কোনো পদে নিজেকে যুক্ত করেননি এই তরুণ বিলিওনিয়ার। তবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন।

 

জনাথন কক

বয়স : ২৮ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  দুই বিলিয়ন ডলার

হংকংয়ে বসবাসকারী জনাথন কক হচ্ছেন বিখ্যাত নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সান হাং কাই প্রোপার্টিজের মালিক ওয়াল্টার ককের ছোট ছেলে। সান হাং কাই প্রোপার্টিজ সুনামের সঙ্গে আবাসন শিল্পে কাজ করে যাচ্ছেন অনেক বছর। ওয়াল্টার কক মারা যান ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর। এর পরই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে যায় জনাথন কক। পাশে পায় তার ভাই জিওফ্রেকে। দুই ভাই মিলে প্রতিষ্ঠানের সব দায়িত্ব বুঝে নেয়। পৈতৃক সূত্রে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন দুই ভাই। তবে বাবার মৃত্যুর পর তার সম্পদের বেশির ভাগের দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে জনাথনের ওপর। এই তরুণ ধনকুবেরদের তালিকায় জনাথন নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এই ধনকুবেরের আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেরও মালিকানা রয়েছে। রিয়েল স্টেট ব্যবসার মাধ্যমে বিশ্বের তরুণ ধনীদের মধ্যে তিনি অবস্থান করছেন পাঁচ নম্বরে।

 

ইভান স্পিগেল

বয়স : ২৯ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  ১.৯ বিলিয়ন ডলার

যুক্তরাষ্ট্রের ইভান স্পিগেল ইঙ্কের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। পৈতৃক সূত্রে সম্পদের মালিক হননি ইভান স্পিগেল। নিজের মেধায় গড়ে তুলেছেন স্ন্যাপ ইঙ্ক নামের এই ডিজিটাল ক্যামেরা কোম্পানি এবং এটিই বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্যামেরা প্রতিষ্ঠান। এই কোম্পানি জনপ্রিয় মেসেজিং সার্ভিস প্ল্যাপচ্যাটও পরিচালনা করে আসছে সাফল্যের সঙ্গে। এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়। এটি ব্যবহারকারীরা বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করতে পারেন। স্পিগেল ও মারফির হাত ধরে ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা প্ল্যাপচ্যাট এখন প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি মানুষ ব্যবহার করেন। স্পিগেল স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোডাক্ট ডিজাইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

 

ক্যাথরিনা অ্যান্ডারসন

বয়স : ২৪ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  ১.১ বিলিয়ন ডলার

পৃথিবীর কম বয়সী বিলিওনিয়ার আলেকজান্দ্রার কথা আগেই বলা হয়েছে। এখন বলছি তার থেকে এক বছরের বড় ক্যাথরিনা অ্যান্ডারসনের কথা। তিনি হচ্ছেন বিশ্বের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ধনী ব্যক্তি। বোনের মতোই পৈতৃক সূত্রে সম্পদের মালিক হয়েছেন ক্যাথরিনা। ক্যাথরিনাও তার বাবার কোম্পানির কোনো পদে নিজেকে সম্পৃক্ত করেননি। বর্তমানে অ্যামস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৭ সালে  জোহান অ্যান্ডারসন তার সম্পদের ৪২.২ শতাংশ দুই মেয়ে আলেকজান্দ্রা ও ক্যাথরিনাকে হস্তান্তর করেন। আলেকজান্দ্রা অ্যান্ডারসন ও ক্যাথরিনা অ্যান্ডারসন- নরওয়ের অধিবাসী এই দুই বোন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ দুই বিলিওনিয়ার। নরওয়েতে অ্যান্ডারসন পরিবারের প্রভাব প্রতিপত্তি আছে। তবে ছোট বোন আলেকজান্দ্রা থেকে জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে আছেন ক্যাথরিনা।

 

জন কলিসন

বয়স : ২৯ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ  ৩.২ বিলিয়ন ডলার

১৯৯০ সালে আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন জন কলিসন। অন্য বিলিওনিয়ারদের থেকে জনের গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাননি জন। তাকে কষ্ট করতে হয়েছে। নিজের মেধা ও পরিশ্রম খাটিয়ে তিনি বর্তমানে পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ স্ব-প্রতিষ্ঠিত বিলিওনিয়ার। ছাত্রজীবনে তিনি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি রেকর্ড নম্বর পেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং হার্ভার্ডে পড়ার জন্য নির্বাচিতও হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি হার্ভার্ডে পড়তে আসার আগেই জন মিলিওনিয়ার হয়ে গিয়েছিলেন তার অনলাইনে লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করার সেবার জন্য। পরবর্তীতে জন হার্ভার্ডে পড়াশোনা শেষ না করেই তার ভাইকে নিয়ে সিলিকন ভ্যালিতে পাড়ি জমান।

 

প্যাদ্রো ডি গুদয়

বয়স : ৩০ বছর

মোট সম্পদের পরিমাণ ১.১ বিলিয়ন ডলার

ব্রাজিলের সেরা তরুণ ধনকুবের হয়েছিলেন মাত্র ২৯ বছর বয়সে। এ বছর তিনি ফোর্বসের শীর্ষ ১০ তরুণ ধনকুবেরের তালিকায় চলে এসেছেন। ব্রাজিলের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ব্রাজিলিয়ান ল্যাবরেটরি ফার্ম ডায়াগনস্টিক দ্য আমেরিকা এসএ এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন প্যাদ্রো ডি গুদয়। পারিবারিকভাবেই ধনী হিসেবে পরিচিত তার পরিবার। প্যাদ্রোর বাবা এডসন ডি গুদয়ও বিলিওনিয়ার ছিলেন। স্বাস্থ্য খাতে তাদের পারিবারিক ব্যবসা দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালে বাবার মৃত্যুর পর প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হন প্যাদ্রো। কিন্তু মাত্র ২৪ বছর বয়সেই পড়াশোনা শেষে ডিএএসএ এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন প্যাদ্রো। বিয়ে করেছেন দীর্ঘদিনের প্রেমিকা হারমান হফম্যানকে।

সর্বশেষ খবর