বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

পবিত্র হজ আজ

মোস্তফা কাজল

পবিত্র হজ আজ

ফাইল ছবি

আজ পবিত্র হজ। এবারের হজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে পালিত হচ্ছে। ফলে লাব্বাইক, আল্লাহুমা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে না আরাফাতের ময়দান। হজে অংশ নেওয়া সব পুরুষ সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়েছেন। মহিলারাও ইসলামের বিধিবিধান মেনে অংশ নিয়েছেন। এবারও হজের খুতবা বাংলাসহ ১০ ভাষায় প্রচার করা হবে। করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরবে অবস্থানরত সারা বিশ্বের ১৬০টি দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লি সীমিত পরিসরে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ সৌদি আরবে বসবাসরত বিদেশি। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ সৌদি নাগরিক। আজ কাবা শরিফের গিলাফ বদলানো হবে। এ নিয়ে আজকের আয়োজন...

 

সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাত চক্করের দোয়া

আল্লাহুম্মা ইন্নী উরিদু আন আ’ছআ মা বাইনাছ সাফা ওয়াল মারওয়াতা ছাব’য়াতা আশওয়াতিন ছা’ইয়া-ল-হাজ্জি আবিল লিল্লাহি তাআলা আজ্জা ওয়া যাল্লা ইয়া রাব্বাল আলামিন।

প্রথম দৌড়ের দোয়া (সাফা থেকে মারওয়া)

আল্লাহু  আকবার কাবিরাও ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা। ওয়া ছুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়া বিহামদিহিল কারীমি বুকরাতাও ওয়া আছিলা। ওয়া মিনাল লায়লি ফাছজুদ লাহু ওয়া ছাববিহহু লায়লান তবিলা। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আনজাজা ওয়াদাহু ওয়া নাছারা আবদাহু ওয়া হাজামা-ল আহজাবা ওয়াদাহু লা শাইয়া কাবলাহু ওয়া লা বা’দাহু ইউইয়ি ওয়া ইউমিতু ওয়া হুয়া হাইয়ূন দায়িমূন লা ইয়ামুতু বিইয়াদিহিল-খায়রু ওয়া ইলায়হিল মাছিরু ওয়া হুয়া আ’লা কুল্লি শায়ইন কাদির। রাব্বিগফির ওয়ার হাম ও’য়াফু ওয়া তাকাররম ওয়া তাজাওয়ায আম্মা তা’লামু ইন্নাকাল্লাহু তা’লামু মালা না’লামু ইন্নাকা আনতাল আ’আজ্জাল-আকরাম। রাব্বি নাজজিনা মিনান্নারি ছালিমীনা, গানিমীনা ফারিহীনা মুছতাবশিরীনা মা’আ ইবাদিকাছ ছালিহীনা মা’আল্লাযীনা আনআমাল্লাহু আলাইহিম মিনান্নাবিয়্যীনা ওয়াছ ছিদ্দিকীনা ওয়াশ শুহাদায়ি ওয়াছ ছালিহীন। ওয়া হাছুনা উলায়িকা রফীকা। যালিকা-ল-ফাদলু মিনাল্লাহি। ওয়া কাফা বিল্লাহি আলীমা। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু হাককান হাককা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু তা’আবদুকাও ওয়া রিকা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা না’বুদু ইল্লা ইয়্যাহু মুখলিছীনা লাহুদ্দীনা ওয়া লাও কারিহাল কাফিরুন।

দ্বিতীয় দৌড়ের (মারওয়া থেকে সাফা) দোয়া

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহিদুল আহাদুল ফারদান ছমাদুল্লাযী লাম ইয়াত্তাখিস ছাবিহাতাও ওয়া-লা ওয়ালাদান ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু শারীকুন ফি-ল মুলকি ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু ওয়ালিয়ূম মিনায-যুল্লি ওয়া কাব্বিরহু তাকবীরা। আল্লাহুমা ইন্নাকা কুল্তা ফী কিতাবিকাল মুনাযযালি উদ’উনী আস্তাজিব লাকুম দা’আওনাকা রব্বানা ফাগফির লানা কামা ওয়াআত্তানা ইন্নাকা লা তুখলিফুল মীআদ। রব্বানা ইন্নানা ছামি-না মুনাদিয়াই ইউনাদী লিল ঈমানি আন আমিনু বি রাব্বিকুম ফা আমান্না। রব্বানা ফাগফির লানা যুনূবানা ওয়া কাফ্ফির আন্না ছাইয়িআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মা’আল আব্্রার। রব্বানা ওয়া আ-তিনা মাওয়াআত্তানা আলা-রছুলিকা ওয়া লা-তুখযি না ইয়াত্তমাল কিয়ামাহ, ইন্নাকা লা-তুখলিফুল মীআদ, রব্বানা আলায়কা রব্বানাগ্ফির লানা ওয়া লি ইখওয়ানি-নাল্লাযীনা ছাবাকুনা বিল ঈমানি ওয়া লা তাজ’আল ফী কুলূবিনা গিল্লাল লিল্্ লাযীনা আমানু রব্বানা ইন্নাকা রউফুর রহীম।

তৃতীয় দৌড়ের (সাফা থেকে মারওয়া) দোয়া

রব্বানা আত্মিম লানা নূরানা ওয়াগফির লানা যুনুবানা  ইন্নাকা আলা কুল্লি শায়ইন কদীর। আল্লাহুমা ইন্নী আছআলুকা-ল খায়রা কুল্লাহু আজিলাহু ওয়া আজিলাহু ওয়া আউযু বিকা মিনা-শ-শাররি, কুল্লিহী আযিলিহী ওয়া আজিলিহী আস্তাগফিরুকা লি জামবী ওয়া আছআলুকা রহমাতাকা। আল্লাহুমা রব্বি যিদ্নী ইলমাও ওয়া-লা-তুযিগ কল্বী বা’আদা ইয্্হাদায়তানী ওয়া হাব্লী মিল লা ছাময়ী ওয়া বাছারী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা। আল্লাহুমা ইন্নী আউযু বিকা মিন্্ আযাবি ল-কাবরি, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা ছুবহানাকা ইন্নী কুন্তু মিনাযলিমীন আল্লাহুমা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল কুফরে ওয়াল ফাকরি। আল্লাহুমা ইন্নী আউযুবি রিদাকা মিন্্ ছাখাতিকা ওয়া বি মু’আফাতিকা মিন উকুবাতিকা ওয়া আউযু বিকা মিন্্কা, লা উহ্্ছী ছানাআন আলাইকা আন্তা কামা আছ্ছাইতা আলা নাফছিকা ফা লাকাল হামদু হাত্তা তারদা।

চতুর্থ দৌড়ের (মারওয়া থেকে সাফা) দোয়া

আল্লাহুম্মা ইন্নী আছ্্আলুকা মিন্্ খায়রি মাতা’লামু ওয়া আস্তাগ্ফিরুকা মিন কুল্লি মা তা’লামু ইন্নাকা আন্তাল আল্লামুল গুয়ূব। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু-ল-মালিকুল হাক্্কু-ল-মুবীন। মুহাম্মাদুর রছুলুল্লিহিছ ছাদিকুল-ল-ও’য়াদিল আমীন। আল্লাহুমা ইন্নী আছ্্আলুকা কামা হাদায়তানী লিল ইছলামি আন লা তানযিয়াহু মিন্নী হাত্তা তাতাওয়াফ্্ফানী আলাইহি ওয়া আনা মুছলিমুন। আল্লাহুম্মাজ’আল ফী কলবী নূরাও ওয়া ফী ছাময়ী নুরাও ওয়া-ফী বাছারী নূরা। আলাহুম্মাজ রহলী ছদরী ওয়া-ইয়াছির লী আমরি ওয়া শাতাতিল আমরি ওয়া ফিতনাতিল-কাবরি। আল্লাহুমা ইন্নী আউযু বিকা মিন নাহারি ওয়া মিন শারবি মা ইয়ালিজু ফিল্লাইলি ওয়া মিন শারবি মা ইয়ালিজু ফিন নাহারি ওয়া মিন শারবি মা তাহুব্বা বিহির-রিয়াহু ইয়া আরহামা-র-রহিমীন। ছুবহানাকা মা’আবাদনাকা হাককা ইবাদাতিকা ইয়া আল্লাহ। ছুবহানাকা মা’যাকারনাকা হাককা যিকরিকা ইয়া আল্লাহ।

পঞ্চম দৌড়ের (সাফা থেকে মারওয়া) দোয়া

ছুবহানাকা মা শাকারনাকা হাক্্কা শুকরিয়া ইয়া আল্লাহ। ছুবহানাকা মা কছাদনাকা হাক্কা কছদিকা ইয়া আল্লাহ। আল্লাহুমা হাব্বিব ইলায়না-ল-ঈমানা ওয়া যাই নিনহু ফী কুলুবিনা ওয়া কারবিহ ইলায়না-ল-কুফরা ওয়াল ফুছুকা ওয়া-ল-ইছইয়ান। ওয়াজ-আলনা মিন ইবাদিকা-ছ-ছলিহীন। আল্লাহুমা কিনা আযাবিকা ইয়াও’মা তাব’আছু ইবাদাকা। আল্লাহুমাহদিনী বিলহুদা ওয়া নাক্ইকনী বিৎতাক্্ওয়া ছুৎআলাইনা মিম বারাকাতিকা ওয়া রাহমাতিকা ওয়া ফাদলিকা ওয়া রিজকিকা। আল্লাহুমা ইন্নী আছআলুকান না’য়ীসা-ল-মুকীমাল্লাযী লা-ইয়াহুলু ওয়া-লা ইয়াযুলু আবাদা। আল্লাহুমাজআল্্ কলবী নুরাও ওয়া ফী ছাময়ী নুরাও ওয়া ফী বাছারী নুরাও। ওয়া ফী লিছনী নুরাও ওয়া আন ইয়ামিনী-নুরাও। ওয়া মিন ফাওকী-নূরাও। ওয়াজ আল ফী নাফ্্ছী নূরাও। ওয়া আয্ইম লী নূরা। রব্বিশরাহলী ছদরী ওয়া ইয়াচ্ছির লী আমরী। ইন্নাচ্ছফা ওয়াল-মারওয়াতা মিন শাআ’ই-রিল্লাহি ফা মান হাজ্জাল-বাইতা আবি’তামারা ফাল-জুনাহা আলাইহি আই ইয়াত্তউয়াফা বিহিম ওয়া যান তাতউ’ওয়াআ খইরান ইন্নাল্লাহা শাকিরুন আলীম।

ষষ্ঠ দৌড় (মারওয়া থেকে সাফা) দোয়া

আল্লাহ আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহ আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হাম্্দ। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্্দাহু ছদাকা ওয়াদাহু নাছারা আবদাহু। ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াদাহু। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা নাবুদু ইল্লা ইয়্যাহু মুখলেছীনা লাহুদ্দীনা ওয়া লাউ কারিহাল কাফিরুন। আল্লাহুমা ইন্নী আছআলুকাল হুদা ওয়াততুকা ওয়াল খাইরাম মিম্মা নাকুলু। আল্লাহুমা ইন্নী আছআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউযু বিকা মিন ছাখাতিকা ওয়াননারি ওয়া মা ইযূর্কারিবুনী ইলাইহা মিন কাওলিন আও ফিইলিন আও আমছাইনা। আন্তাল আউওয়ালু ফা লা কাবলাকা শাইউন, ওয়াল আখিরু, ফা লা বা’দাকা শাইয়ুন দুনাকা, নাউযু বিকা মিনাল ফালছি ওয়াল কাছলি ওয়া আযাবিল কাবরী ওয়া ফিত্নাতিল গিনা ওয়া নাছআলুকাল ফাউযা বিল জান্নাতি। রাব্বি ওয়ার হাম ওয়াফু ওয়া-তাকারাম ওয়া-তাজাওয়ায আম্মা তাআলামু ইন্নাকা আনতাল্লাহুল আআয্্যুল আকরাম। ইন্নাছ ছফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শাআইরিল্লিাহি,ফা মান হাজ্জাল বাইতা আবি’তামারা ফা লা জুনাহা আলাইহি আঁই-ইয়াত তওয়াফা বিহিমা ওয়া মান তাতওয়াআ খাইরান ফা শাকিরুন আলীম। 

সপ্তম দৌড় (সাফা থেকে মারওয়া) দোয়া

আল্লাহ আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহ আকবার কাবীরাও ওয়াল হাম্্দু লিল্লাহি কাছীরা। আল্লাহুমা হাব্বিব ইলাইয়াল ঈমানা ওয়া জাইয়িনহু ফী কাল্বী ওয়া র্কারিহ ইলাইয়াল কুফরা ওয়াল ফুছুকা ওয়াল ইছইয়ানা ওয়াজ-আলনী মিনার রাশিদীন। রববিগফির ওয়ারহাম ওয়াফু ওয়া তার্ক্রাম ওয়া তাজাওয়ায আম্মা তালামু ইন্নাকা তাআলামু মা-লা নাআলামু ইন্নাকা আনতাল্লাহুল আআয্্যুল আকরাম। আল্লাহুম¥াখ্তিম বিল খাইরাতি আযা’লানা ওয়া হাক্কিক বিফাদলিকা আ’মা-লানা ওয়া ছাহ্হিল লিবুলুগি রিদাকা ছুবুলানা ওয়া হাচ্ছিন ফী জামি’ইল আহওয়ালী আ’মালানা ইয়া মুনকিযাল গারকা, ইয়া মুনজিয়াল হাল্্কা ইয়া-শাহিদা কুল্লি নাজওয়া, ইয়া মুনতাহা কুল্লি শাক্্ওয়া ইয়া কর্দীমাল ইহ্্ছানি, ইয়া দায়িমাল মারুফি, ইয়া মান লা গিনা বিশাইয়িন আনহু ওয়া লা বুদ্দা বিকুল্লি শাইয়িম মিনহু, ইয়া মান রিজকু কুল্লি শাইয়িন আলাইহি। ওয়া মাছীরু কুল্লি শাইয়িন ইলাইহি। আল্লাহুমা ইন্নী আউযুবিকা মিন শারবি আ’তাইতানা ওয়া মিন্্ শারবি মা মানা’তানা। আল্লাহুমা তাওয়াফফানা মুছলিমীনা ওয়ালহিকনা বিচ্ছ-লিহীনা গাইরা খাযাইয়া ওয়া লা মাফতুনীনা। রব্বি ইয়াচ্ছির ওয়ালা তু’য়াচ্ছির রব্বি আত্মিম বিল খায়র। ইন্নাছ ছফা ওয়াল মারওয়াতা। মিন শাআইরিল্লিাহি ফা মান হাজ্জাল বায়তা আবি’তামারা ফা লা জুনাহা আলাইহি আঁই ইয়াত তউওয়াফা বিহিমা ওয়া মান্্তাতউওয়াআ খাইরান, ফা ইন্নাল্লাহা শাকিরুন আলীম।

 

হজের দোয়া ও নিয়তসমূহ

পবিত্র কাবা শরিফ দেখা মাত্রই এ দোয়া পড়তে হয়

লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারিকা লাক। আল্লাহুম্মা যুকনি বি হা কারারান ওয়ার যুকনি ফি হা রিযকান হালালা।

ইহরামের নিয়ত

নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকআতাই সালাতি সুন্নাতিল ইহরাম। মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহ আকবর।

পবিত্র হজের নিয়ত

আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল হাজ্জা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাক্বাব্বালহু মিন্নি

তালবিয়া

লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইকা, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারিকা লাক।

পবিত্র আবে জমজম পানি পানের দোয়া

বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রসুলিল্লাহি।

শয়তানকে প্রতীকী কঙ্কর নিক্ষেপের দোয়া

বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।

রাগমাললিশ শায়তানি ওয়া রিদাআল্লির রহমানি, আল্লাহুম্মজ আলহু হাজ্জাম মাবরুরাও ওয়া জাম্বাম মাগফুরাও ওয়া সা’ইয়াম মাশকুরাও ওয়া তিজারাতান লান তাবুর।

 

হজের ফরজ এবং ওয়াজিব

প্রথম দিন ৮ জিলহজ

পবিত্র হজের নিয়ত করা। ইহরাম পরিধান করা (ফরজ)। তালবিয়া পাঠ অব্যাহত রাখা। ইহরাম অবস্থায় তাঁবুর শহর মিনায় গমন। জামাতের সঙ্গে মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। মিনায় রাতযাপন।

দ্বিতীয় দিন ৯ জিলহজ

আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ)। আরাফাতের ময়দানে জোহর ও আসর নামাজ আদায় করা। আরও যা যা করতে হয় তা হলো- কোরআন তেলাওয়াত, তালবিয়া পাঠ, জিকর-আজকার এবং দোয়া-দরুদ পাঠ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমল করা। মহান আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের জন্য দোয়া করা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। সূর্যাস্তের পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করা। মুজদালিফায় পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করা। পাশাপাশি খোলা আকাশের নিচে ইহরাম অবস্থায় রাতযাপন করা। শয়তানকে মারার জন্য কঙ্কর সংগ্রহ করা। চলতি বছর করোনাভাইরাসের কারণে কঙ্কর সংগ্রহ করতে হবে না। তবে সৌদি সরকার সব হাজীকে জীবাণুমুক্ত প্যাকেটসহ কঙ্কর দেবে।

তৃতীয় দিন ১০ জিলহজ

মুজদালিফা থেকে মিনায় পৌঁছে নিজের তাঁবু খুঁজে একটু বিশ্রাম করা। এরপর অজু ও গোসল করে নাশতা করা ভালো। এর মধ্যে তালবিয়া পাঠ অব্যাহত রাখতে হবে। পরে জামারাহ এ-আকাবায় দ্বিপ্রহরে কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়। এ কঙ্কর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং তর্জনীর মধ্যে ধরে শয়তানের প্রতীকীতে নিক্ষেপ করতে হবে।

চতুর্থ দিন ১১ জিলহজ

আজও তিন শয়তানকে লক্ষ্য করে মুজদালিফা (চলতি বছর সৌদি সরকার থেকে প্রদত্ত কঙ্কর) থেকে সংগ্রহ করা কঙ্কর আগের দিনের মতো নিক্ষেপ করতে হবে। সম্ভব হলে মিনায় রাতযাপন করা ভালো।

পঞ্চম দিন ১২ জিলহজ

আজও তিন শয়তানকে লক্ষ্য করে মুজদালিফা থেকে সংগ্রহ করা কঙ্কর (চলতি বছর সৌদি সরকার থেকে প্রদত্ত কঙ্কর) নিক্ষেপ করা। মক্কায় ফিরে যাওয়া।

 

হজের ইতিহাস

আজ ৩০ জুলাই মুসলমানদের পবিত্র হজ পালিত হবে। প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ লাখ হাজীর উপস্থিতিতে হজ পালন হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। চলমান মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে হজ। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে  গেছে হজের আনুষ্ঠানিকতাও। হজের শাব্দিক অর্থ ‘জিয়ারতের সংকল্প’। আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসলমানরা পবিত্র কাবা তাওয়াফ বা জিয়ারতের সংকল্প নিয়ে ছুটে আসেন বলেই এর নাম রাখা হয়েছে হজ। হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম একটি এবং অকাট্য একটি ফরজ ইবাদত। মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের এক মহামিলন অনুষ্ঠান। হজের এ বিধানটি বিশ্ব-ভ্রাতৃত্বের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। হজের রয়েছে একটি তাৎপর্য ও শিক্ষা। প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগে আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইবরাহিম (আ.) সর্বপ্রথম হজের প্রবর্তন করেন। এরপর  থেকে নবী-রসুল পরম্পরায় চলে আসছে হজ পালনের বিধান। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর হজ অবশ্য পালনীয় কর্তব্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন শরিফের সূরা বাকারার ১২৫ নম্বর আয়াতে কাবাঘর নির্মাণ সম্পর্কিত বিষয় এভাবে ইরশাদ হয়েছে : ‘আর আমি যখন কাবাঘরকে মানুষের জন্য সম্মিলন ও নিরাপত্তার স্থান করলাম। আর তোমরা ইবরাহিমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাজের জায়গা বানাও। আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম ঘরটিকে খুব পবিত্র রেখ। তাওয়াফকারী ও অবস্থানকারী লোকদের জন্য। রুকু-সিজদাকারীদের জন্য। হজ প্রবর্তনের আগে হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে সঙ্গে নিয়ে পুনর্নির্মাণ করেন কাবাঘর। কাবাঘরটি হজরত আদম (আ.) ফেরেশতাদের সহায়তায় সর্বপ্রথম নির্মাণ করেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) জিবরাইল (আ.)-এর সাহায্যে একই ভিতে অর্থাৎ হজরত আদম (আ.) কর্তৃক নির্মিত কাবার স্থানে এর পুনর্নির্মাণ করেন। নির্মাণকাজ শেষ হলে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি নির্দেশ হলো হজব্রত পালনের। আল্লাহতায়ালা জিবরাইল (আ.) মারফত তাঁকে হজের সব আহকাম সম্পর্কে অবহিত করেন। ইবরাহিম (আ.) তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে নিয়ে কাবাঘর সাতবার তাওয়াফ করেন। চুম্বন করেন হাজরে আসওয়াদ এবং একে একে সম্পন্ন করেন হজের সব আহকাম।

এরপর আল্লাহর নির্দেশ এলো হজের দাওয়াত বিশ্ববাসীকে  পৌঁছে দেওয়ার। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যখন হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে হজ ফরজ হওয়ার কথা ঘোষণা করার আদেশ দেওয়া হয় তখন তিনি আল্লাহর কাছে আরজ করলেন, এটা তো জনমানবহীন প্রান্তর। এখানে  ঘোষণা শোনার মতো কেউ নেই। যেখানে ঘনবসতি আছে  সেখানে আমার আওয়াজ কীভাবে পৌঁছবে? আল্লাহ বললেন,  ‘তোমার দায়িত্ব শুধু ঘোষণা দেওয়া। সারা বিশ্বে পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার।

এ কথা শুনে হজরত ইবরাহিম (আ.) তখন মাকামে ইবরাহিমে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেন। আল্লাহ তা উচ্চ করে দেন।’ কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, তিনি আবু কুবায়েস পাহাড়ে আরোহণ করে  ঘোষণা দিয়েছিলেন। বর্ণিত আছে, ‘ইবরাহিম (আ.)-এর সেই আহ্বান জড়জগতের সীমা অতিক্রম করে রুহানি জগতে গিয়ে পৌঁছেছিল। পরে লাব্বাইক বলে যেসব রুহ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল আল্লাহ চান তো কিয়ামত পর্যন্ত তারাই পর্যায়ক্রমে আরাফাতের প্রান্তরে সমবেত হবে! এভাবে মক্কা পরিণত হলো হজব্রত পালনের ক্ষেত্রস্থল হিসেবে। আর এ ঘরের হজ করা হলো মানুষের ওপর আল্লাহর প্রাপ্য, যে লোকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত  পৌঁছার। আর যারা অস্বীকার করবে আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন। সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৯৭।

 

কাবা শরিফে সাত ফরজ তাওয়াফের দোয়া

ফরজ তাওয়াফের নিয়ত

আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারাম। ফা ইয়াছছিরহু লী ওয়া তাকাব্বাল হু মিন্নী ছাবয়াতা আশওয়াতিল লিল্লাহি তায়ালা আযযা ওয়া জাল্লা।

মক্কা শরিফে ফিরে হজের ফরজ প্রথম তাওয়াফের দোয়া

সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আকবার। ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি আলিয়্যাল আযীম। ওয়াচ্ছালাতু আলা রসুলিল্লাহি ওয়া আলিহী ওয়া ছাল্লাম। আল্লাহুমা ঈমানাম বিকা ওয়া তাছদীকাম বি কিতাবিকা ওয়া ওয়াফায়াম বি’আহদিকা ওয়াত্তিবাআল লি ছুন্নতি নাবিয়্যিকা ওয়া হাবীবিকা ছায়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ছাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া ছাল্লাম। আল্লাহুমা ইন্নী আছআলুকাল আফ্্ওয়া ওয়াল আফিয়াতা ওয়াল মু’য়াফাতাদ্্ দায়িমাতা ফিদ্্দীনে ওয়াদ দুন্্য়া ওয়াল আখিরাতি ওয়াল ফাওজা বিল জান্নতি ওয়ান্্ নাজাতা মিনান্্ নার।

দ্বিতীয় তাওয়াফ

আল্লাহুম্মা ইন্না হাযাল বায়তা বায়তুকা ওয়াল হারামা হারামুকা ওয়াল আম্না আমনুক্্া ওয়াল আবদা আবদুকা ওয়া আনা আবদুকা ওয়া ইবনু আবদিকা ওয়া হাযা মাকামুল আয়িযিবিকা মিনান্নার। ফাহাররিম লুহুমানা ওয়া বাশারাতানা আল্লান্নার। আল্লাহুমা হাব্বিব ইলায়নাল ওয়া যাইয়িন্্ হু ফী কাররিহ্্ ইলায়নাল-কুফরা ওয়াল ফুছুকা ওয়াল ইছইয়ানা ওয়াজ-আল লা মিনার রাশিদীন। আল্লাহুম্মা কেনী আযাবাকা ইয়াওমা তাব’আছ ইবাদাকা। আল্লাহুমার যুকনীল-জান্নাতা বিগায়রি হিছাব।

তৃতীয় তাওয়াফ 

আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিনাশ শাক্কি ওয়াশ শিরকে ওয়াশ শিকাকি ওয়ান নিফাফি ওয়া ছুয়িল আখলাকি ওয়া ছুয়িল মানযারি ওয়াল মুনকালাবি ফীল মালি ওয়াল আহ্লি ওয়াল ওয়ালাদি। আল্লাহুম্মা ইন্নী আছ্্আলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া মিন ছাখাতিকা ওয়ান্নার। আল্লাহুমা ইন্নী আউযুবিকা মিন  ফিতনাতিল  কাব্রি ওয়া আ’আউযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহ্্ইয়া ওয়াল মামাত। 

চতুর্থ তাওয়াফ

আল্লাহুম্মাজ্্’আলহু’ হাজ্জাম মাবরুরাও ওয়া ছা’ইয়াম মাশকুরাও ওয়া যামবাম মাগফুরাও ওয়া আমালান ছালিহাম্্ মাকবুলাও ওয়া তিজারাতাল লানতাবুর। ইয়া আলিমা মা ফিছ্্ ছুদূরি ওয়া আখরিজ্্নী ইয়া আল্লাহু মিনায-যুলুমাতি ইলান নূর। আল্লাহুম্মা ইন্নী আছআলুকা মুজিবাতে রহমাতিকা ওয়া আযায়িমা মাগফিরাতিকা ওয়াছ-ছালামাতা মিন কুল্লি ইছমিও ওয়াল-গানীমাতা মিন কুল্লি বিরবিও ওয়াল্্ ফাওয়া বিল জান্নাতি ওয়ান্্ নাজাতা মিনান্নার। রাব্বি কান্নিনী বিমা রাজাকতানী ও বারিকলী ফী মা আ’তায়তানী ওয়াখলুক আলা কুল্লি গায়িবাতিল লী মিন্্কা বি-খায়র।

পঞ্চম তাওয়াফ

আল্লাহুম্মা আযিল্লানী তাহ্তা যিল্লি আরশিকা ইয়াওমা লা যিল্লা ইল্লা য়িল্লু আরশিকা ওয়া লা বাকিয়া ইল্লা ওয়াজহুকা ওয়াছকিনী মিন হাওদে নাবিয়্যাকা ছায়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ছল্লাল্লাহু তাআলা আ’লাইহি ওয়া আলিহী ওয়া ছাল্লামা শারবাতান হানিয়াতাম মারিয়াতাল লা নায্মাউ বা’দাহা আবাদা। আল্লাহুমা ইন্নী আছ্্আলুকা মিন্্ খায়রি মা ছাআলাকা মিনহু নাবিয়্যূকা ছায়্যিদুনা মুহাম্মাদুন ছাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া ছাল্লাম। ওয়া আউযুবিকা মিন শাররি মাছতায়াযা বিকা মিনহু নাবিয়্যূকা ছাইয়িদূনা মুহাম্মাদুন ছাল্লাল্লাহু তাআলা আ’লাইহি ওয়া আলিহী ওয়া ছাল্লাম। আল্লাহুম্মা ইন্নী আছআলুকাল জান্নাতা ওয়া নায়ী’মাহা ওয়া মা ইউকাররিবুনী ইলাইহা মিন কাওলিন আও ফি’লিন আও’আমালিন ওয়া আউযুবিকা মিনান নারি ওয়া মা ইউকাররিবুনী ইলাহা মিন কাওলিন আও আ’মালিন।

ষষ্ঠ তাওয়াফ

আল্লাহুম্মা  ইন্না লাকা আলায়ইয়া হুকুকান কাছীরাতান ফী মা বায়নী ওয়া বায়নাকা ওয়া হুকুকান কাছীরাতান ফী মা বাইনী ওয়া বাইনা খালকিকা। আল্লাহুমা মা কানা লাকা মিন্্হা ফার্গ্ফ্হুি লী ওয়া মা কানা লি খল্কিকা ফা তাহাম্মালহু আন্নী। ওয়া আগনিনী বি হালালিকা আন হারামিকা ওয়া বিতা’আতিকা আম মা’ছিয়াতিকা ওয়া বি ফাদ্লিকা আম মান ছিওয়াকা, ইয়া  ওয়াছি আল মাগফিরাহ। আল্লাহুম্মা ইন্না বায়তাকা আযীমুউ ওয়া ওয়াজহাকা কারীমুন্্ ওয়া আন্তা ইয়া আল্লাহু হালীমুন কারীমুন আযীমুন তুহিব্বুল আফ্্ওয়া ফাঅফু আন্নী।

সপ্তম বা শেষ ফরজ তাওয়াফের দোয়া

আল্লাহুম্মা ইন্নী আছআলুকা ঈমানান কা-মিলাও ওয়া ইয়াদকীনান ওয়া রিযকাও ওয়াছি’আও ওয়া কালবান খাশিয়াও ওয়া যাকিরাও ওয়া কাছবান হালালান্্ তায়্যিবাও ওয়া তাওবাতান নাছুহাতান। ওয়া তাওবাতান কাবলাল মাওত, ওয়া রাহাতান ইন্দাল মাউত। ওয়া মাগফিরাতাও ওয়া রহমাতাম বা’দাল মাউত ওয়াল্্ আফওয়া ইন্্দাল হিছাব ওয়াল্্ বিল জান্নাতি। ওয়ান্নাজাতা মিনান্নার। বি রহ্মাতিকা ইয়া আযীযূ ইয়া গাফফারু, রব্বি যিদনী ইলমাও ওয়াল হিক্নী বিছছালিহীন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর