করোনা সামলে ফিলিস্তিনে ঈদ আয়োজন
পিঠা, পায়েস কার না পছন্দ। যুদ্ধ, দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই ফিলিস্তিনিদের। সেখানেও পৌঁছেছে ঈদের আমেজ। করোনায় মুখে মাস্ক আর সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে গৃহিণীরা ব্যস্ত পিঠা বানাতে। নিকটাত্মীয় আর পরিবারের সবাই মিলে বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ আড্ডায় এসব খাবার পরিবেশন করা হয় সেখানে। সামর্থ্যবানরা কোরবানি করেছেন। নিকটাত্মীয়ের কাছে পাঠিয়েছেন মাংস। রান্না করা খাবার পরিবেশন করেছেন সবার মাঝে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে স্বজনহারা, পরিবারহারা মানুষের পাশে ছুটেছেন অনেকে। ফিলিস্তিনের সমাজব্যবস্থায় মহল্লাকেন্দ্রিক উৎসব পালনের রীতি রয়েছে। তার ব্যতিক্রম হয়নি ্এবারও। করোনার কারণে বেশি মানুষের জমায়েত হয়নি এবার।
কঠোর স্বাস্থ্যবিধিতেও উৎসবমুখর ঈদ ইন্দোনেশিয়ায়
ইন্দোনেশিয়ায় ঈদুল আজহা পালনে এবার বেশ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল। করোনার সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে মহল্লার মোড়ে মোড়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন। পশু প্রদর্শনীর বাজারের স্বাস্থ্যকর্মীরা সবার তাপমাত্রা মেপে পরীক্ষা করে দেখছিলেন। তবে পশু কোরবানি দেওয়া, মাংস বিতরণ ও স্বজনদের আপ্যায়নের দৃশ্য এবারও চোখে পড়েছে। ঈদের দিন বেশ উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল সেখানে। করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো বলে মানুষজনও ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। হালাল মাংস বিতরণের রেওয়াজ বহু বছর ধরে রয়েছে জাকার্তায়। ছবিতে সেই দৃশ্য।
কারফিউ নেই, করোনায় অন্যরকম ঈদ সৌদি আরবে
ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি দেওয়া ও হজ পালন সৌদি আরবের চিরায়ত দৃশ্য। এ বছর করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে কঠোর ছিল সৌদি প্রশাসন। স্বাভাবিক সময়ে সারা বিশ্ব থেকে মক্কায় হজ করতে আসেন ২০ লাখ মানুষ। কিন্তু এবার শুধু যারা আগে থেকে সৌদি আরবের বাসিন্দা তাদেরই হজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। ফলে এবার হজযাত্রীর সংখ্যা নেমে এসেছিল মাত্র এক হাজারে। জুনে কারফিউ উঠিয়ে নেওয়ার পর থেকে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে সেখানে। তবে এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে।
সিরিয়ায় ঘরহারা, স্বজনহারাদের নেই ঈদের আনন্দ
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়া। যুদ্ধ, শরণার্থী, দরিদ্রতার সঙ্গে যোগ দিয়েছে করোনা। নানা সংকটে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশটি। বেদনায় ক্লান্ত দেশটিও হেসেছে ঈদের আনন্দে। যার যা সামর্থ্য ছিল তা নিয়েই ঈদের আনন্দ উদযাপন করেছে তারা। সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে যুদ্ধে ঘরহারা, পরিবারহারা সন্তানদের এক শরণার্থী শিবিরের চিত্র এটি। ঈদের আগেই এনজিও কর্মীরা সেখানে পৌঁছে দিয়েছেন নতুন পোশাক। একটি নতুন জামা তাদের হাতে আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতোই আনন্দের। ঈদের দিন সেখানে সাধ্যমতো ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়। অন্য পরিবারগুলো নিজেদের আত্মীয়দের ঘরে দাওয়াত করে আপ্যায়ন করেছেন। করোনার কারণে বিনোদন কেন্দ্রে যাননি বেশির ভাগ মানুষ।
করোনা আতঙ্ক তবু পাকিস্তানে ঈদ উৎসব
ঈদের আগের দিন থেকেই ঘর সাজানো, পরিপাটি হওয়ায় মন দেয় পাকিস্তানের মেয়েরা। করোনায় ঘর থেকে অনেকেই বের হতে পারেননি। তাই আত্মীয়, পরিজনদের মাঝেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দেখা গেছে সেখানে। ছবিটি রাওয়ালপিন্ডির এক বাড়ি থেকে তোলা। মুখে মাস্ক পরে হাতে মেহেদি লাগানোয় ব্যস্ত দুই তরুণী। তবে দেশটিতে ঈদে প্রচুর মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে গেছেন। এ কারণে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। করোনার ঝুঁকির মাঝেই অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও ঈদের নামাজ, পশু কোরবানি দেওয়া ও মাংস বিতরণের দৃশ্য দেখা গেছে দেশটিতে।
পরিবারের সঙ্গে ঈদ মালয়েশিয়ায়
মালয়েশিয়াতে এবার ঈদ উৎসব ছিল মলিন। করোনার কারণে বাইরে জমায়েতে কড়াকড়ি ছিল সেখানে। নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে নামাজ আদায়, পশু কোরবানি হয়েছে সেখানে। ঘরের বাইরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ ছিল না। পশুর মাংস বিতরণ করেছেন সামর্থ্যবানরা। শিশুদের জন্য অনেকেই নতুন পোশাক কিনলেও পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেননি অনেকেই। স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে চলায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানো হয়নি। তবে ঘরেই পরিবারের সবাই মিলে উৎসব পালনের চেষ্টা করেছেন। ঘর সাজানো, রান্না, আপ্যায়ন আর আড্ডায় কেটেছে করোনাকালীন এই ঈদ।
ভারতে প্রাণঘাতী করোনায় মলিন ঈদের আনন্দ
ভারতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মলিন হয়ে যায় ঈদের আনন্দ। দিল্লির জামে মসজিদে দৈহিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং মুখে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
জম্মুতে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন চলায় মানুষজন মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেননি। দেশের নানাপ্রান্তের চিত্র এমনই। মানুষজনকে বাসার বাইরে না বেরোতে পরামর্শ দেওয়া হয়। দোকানপাট বন্ধ থাকায় মানুষজন ঈদের কেনাকাটা করতে পারেননি। বেশির ভাগ শহরের মানুষজন বাসাতেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।