শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্বমিডিয়া

সাইফ ইমন

করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্বমিডিয়া

সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অফিস বন্ধ থাকবে নিউইয়র্ক টাইমসের

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের খ্যাতি আকাশচুম্বী। কিন্তু হঠাৎ আসা করোনা মহামারীর কারণে বিশ্বের অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের মতো নিউইয়র্ক টাইমসও কঠিন সময় পার করছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বাসা থেকেই অফিস করছেন। আর যারা বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন তারাও পরিস্থিতির কারণে হেড অফিসের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখতে সক্ষম হচ্ছেন না। তাই প্রতিষ্ঠানটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের হেড অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ও জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমটির সিইও মহামারীর আগেই প্রিন্ট ভার্সন নিয়ে তার শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের ছাপানো পত্রিকার আয়ু দেখছি ১০ বছর। চরম বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে ছাপানো পত্রিকা, আর্কাইভে উঠে যাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলা যায়। আমরা যদি কেবল অর্থনৈতিক দিক থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে যাই, দেখছি যে ছাপানো পত্রিকা আমাদের কোনো স্বার্থসিদ্ধি করতে পারছে না। সেজন্য আমরা ডিজিটাল ব্যবসায়ের দিকেই ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছি, যেন ছাপানো পত্রিকা বিলীন হয়ে গেলেও আমাদের প্রতিষ্ঠান বেঁচে থাকতে পারে।

 

সার্কুলেশন কম ইয়োমিউরি শিমবুনের

জাপানি ভাষায় প্রকাশিত দৈনিক ‘দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন’। বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক এটি। ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে সকাল-সন্ধ্যা দুইবার মিলিয়ে এক কোটির উপরে পত্রিকাটি ছাপানো হচ্ছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী সকাল-সন্ধ্যা মিলিয়ে এক কোটি ৩৫ লাখ পত্রিকা প্রকাশিত হয় শিমবুনের। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে পত্রিকাটির সার্কুলেশন কমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কমিয়ে আনা হয়েছে সাপ্লিমেন্টের সংখ্যাও। জাপানিজ মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ইয়োমিউরি গ্রুপ থেকে প্রকাশিত হয় দ্য শিমবুন। এর প্রধান কার্যালয়গুলো জাপানের ওটিমাচি, চিওদা এবং টোকিওতে অবস্থিত। ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পত্রিকাটিতেও পড়েছে করোনার প্রভাব। বলা হয়ে থাকে জাপানের অন্যতম অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষক এ পত্রিকাটি। ১৯২৪ সালে শোরিকি মাতসুতারো কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়ার পর পত্রিকাটির মোড় ঘুরিয়ে ফেলেন চমকপ্রদ নিউজ কাভারেজ, পুরো পৃষ্ঠায় রেডিও অনুষ্ঠান গাইড যুক্ত করে।

 

কর্মী ছঁাঁটাইয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা

বাংলা ভাষার প্রাচীনতম সংবাদপত্র কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা। সম্প্রতি পত্রিকাটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান সম্পাদক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় পদত্যাগ করেছেন এই করোনা মহামারীর মধ্যেই। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বার্তা সম্পাদক ঈষানী দত্ত রায়। ভারতের প্রভাবশালী এবিপি গ্রুপের মালিকানায় থাকা এই পত্রিকার সম্পাদনা পরিষদ থেকে ব্যাপকহারে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। বৈশ্বিক মহামারী কভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মহামন্দা মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানানো হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন অনির্বাণ। কিন্তু বোর্ড অব ডিরেক্টরস তার এই বিরোধিতা আমলে না নিয়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তিনি সম্পাদকের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এপ্রিলে মালিকপক্ষ জানায়, আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারও এ বছর কোনো পদোন্নতি বা ইনক্রিমেন্ট হবে না।

 

কর্মী ছঁাঁটাই করছে ডেইলি মিরর, এক্সপ্রেস

যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী ট্যাবলয়েড ডেইলি মিরর, ডেইলি এক্সপ্রেস ও ডেইলি স্টার (ইউকে) পত্রিকা থেকে সাড়ে পাঁচশ কর্মী ছঁাঁটাই করছে কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পত্রিকার বিক্রি কমে গেছে অর্ধেকের বেশি। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্মী ছাঁটাইয়ের। ডেইলি মিরর ও ডেইলি এক্সপ্রেস ছাড়াও একই মালিকের ডেইলি স্টার (ইউকে), ওকে! ম্যাগাজিন রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে গত প্রান্তিকে তাদের বিক্রি মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় আয় প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। এ কারণে প্রায় ১২ শতাংশ জনবল ছাঁটাই করতে হচ্ছে তাদের। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকপক্ষের দাবি বিক্রি ও বিজ্ঞাপন থেকে আয় মারাত্মকভাবে কমে গেছে। সিইও জিম মুলেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শুধু করোনাভাইরাসের কারণেই নয়, গত বছরও প্রতিষ্ঠানটির আয় ১৩ শতাংশ কমেছিল। তবে ব্যয় সংকোচন করে গত বছর সে ধাক্কা সামলে নিলেও করোনা মহামারীর কারণে এ বছর কঠিন পরিস্থিতিতে তারা।

 

বিজ্ঞাপন নেই সিয়াটল টাইমস পত্রিকায়

যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল টাইমস পত্রিকায়ও লেগেছে করোনা মহামারীর ছোঁয়া। আগের চেয়ে বিজ্ঞাপন কমে গেছে ৫০ ভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল টাইমস পত্রিকার সিএফও অ্যালান ফিসকোকে উদ্ধৃত করে অনলাইন পোর্টাল বাজফিড.নিউজ লিখছে, সত্যি বলতে কী বিনোদন সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন নেই, রেস্টুরেন্টগুলোর বিজ্ঞাপন উঠে গেছে, অটোমোবাইলসের বিজ্ঞাপনও বন্ধ হওয়ার পথে- যার প্রভাব পড়বেই। শেষ রক্ষা হবে বলে মনে করছেন না প্রতিষ্ঠানটির অর্থবিষয়ক প্রধান। মিডিয়ার ওপর মহামারী করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হবে এখনই খুব স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ এখনো কেউ ঠিক জানেই না, এই ভাইরাসের শেষ কোথায়। কবে, কীভাবে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে। তবে কোন মিডিয়া কী ধরনের কনট্যান্ট বানায় তার ওপর নির্ভর করবে প্রভাব বেশি না কম।

 

সার্কুলেশন কমেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইংরেজি ভাষার আন্তর্জাতিক পত্রিকা, যেখানে মূলত ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতির খবর প্রকাশিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে ভো জোন্সের কোম্পানি; যা বিশ্ববিখ্যাত নিউজ করপোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও এশিয়ান এবং ইউরোপভিত্তিক সংখ্যাও প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকাটি মার্কিন মুলুকে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। বর্তমানে বিশ্বে এই পত্রিকাটিও পড়েছে চরম সংকটে। এর অনলাইন সাস্ক্রাইবার বাড়লেও পত্রিকাটি আগের মতো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে না। সার্কুলেশন কমে গেছে অনেক গুণ। এমন পরিস্থিতিতে পত্রিকাটিকে আগে কখনো পড়তে হয়নি। আউট ব্যুরো অব সার্কুলেশনের মতে, প্রতিদিন প্রায় ২৪ লাখ কপি প্রকাশিত হতো। এখন যা কমে অর্ধেকেরও নিচে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে পত্রিকাটির অনলাইন সাবস্ক্রাইবার করোনা সময়েও বেড়েছে।

 

২০টি পত্রিকা বন্ধ হয়েছে যুক্তরাজ্যে

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ব্যানি স্টিল বলেন, এখন বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের লড়াই চলছে। গণমাধ্যমসমূহ এই লড়াইয়ের সম্মুখে রয়েছে। অসংখ্য গণমাধ্যম নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ব্রিটেনে বন্ধ হয়ে গেছে ম্যানচেস্টার টাইম, গ্লোবাল রিমার্ক, ফোকাস দ্য নিউজসহ কমপক্ষে ২০টি পত্রিকা। বিজ্ঞাপন এবং বাজারজাতকরণের সমস্যার কারণেই এগুলো বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যানি স্টিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে চলমান বৈশ্বিক মহামারীটি বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমকে যে সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, পেশাগতভাবে সাংবাদিকদের এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন দাবি করেছেন অনেকে। আর এর জন্য গণমাধ্যমের গণবিচ্ছিন্নতাকে দায়ী করেছেন কিছু কিছু বিশ্লেষক।

 

ব্যয় কমাতে বাধ্য হচ্ছে বিবিসি নিউজে

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিখ্যাত গণমাধ্যম বিবিসি নিউজরুমের ৪৫০ কর্মীকে ছাঁটাই করার ঘোষণা দেয় বছরের শুরুতেই। এতে করপোরেশনটির ৮ কোটি পাউন্ড বা ৮৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বিবিসির হেড অব নিউজ ফ্রান এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, করপোরেশনটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচিভিত্তিক কাজের বদলে কেন্দ্রীভূত টিম পরিচালনা করবে।  তিনি বলেন, বিবিসি দৈনিক বিভিন্ন ধরনের শতাধিক সংবাদ প্রচার করছে, যার বড় অংশই সংশ্লিষ্ট পাঠকের কাছে পৌঁছায় না। এখন আমরা কম সংবাদ করব। কারণ, শ্রোতা ও পাঠকদের সংবাদ সম্পর্কে অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে, আমরা তার শিকার হচ্ছি। এখন ৪৫০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করলে ৮ কোটি পাউন্ড সাশ্রয় হবে, যা বিবিসির মোট ব্যয় সাশ্রয় পরিকল্পনার অর্ধেক। ফ্রান বলেন, আমরা এমন একটি নিউজরুম করব, যা অতীতের মতো হবে না, ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাবে। টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচলিত দর্শক-শ্রোতা কমছে।

 

অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন

করোনা মহামারীর প্রভাব পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমেও। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (এবিসি) জানিয়েছে, তারা ২৫০ কর্মীকে ছাঁটাই করবে। অস্ট্রেলিয়া সরকার এবিসির জন্য বরাদ্দ বাজেট কর্তন করার সিদ্ধান্তের পর সম্প্রচার মাধ্যমটি এ তথ্য জানায়। এবিসি জানিয়েছে, প্রতিটি বিভাগ থেকেই লোক ছাঁটাই করা হবে। এর মধ্যে নিউজরুম এবং টিভি প্রোডাকশনও রয়েছে। এ ছাড়া কিছু জনপ্রিয় প্রোগ্রাম এবং ওয়েবসাইট বাদ দেওয়া হবে। সম্প্রচার মাধ্যমটি জানিয়েছে, ৫৮ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি মেটাতে তাদের কর্মী ছাঁটাই করতে হচ্ছে। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার কনজারভেটিভ সরকার তিন বছরের ইনডেক্সেশন ফ্রিজ ঘোষণা করে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মী ছাঁটাই করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিল এবিসি। সম্প্রতি এবিসির এমডি ডেভিড অ্যান্ডারসন কর্মীদের বলেন, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২৫০ জনকে বিদায় জানাতে হবে বলে আমরা ধারণা করছি, এবিসি এবং আমাদের দর্শকদের জন্য মূল্যবান এই সহকর্মীদের অবদান অনেক।

 

আর্থিক সংকটে ১৬৩ বছরের সংবাদমাধ্যম

১৬৩ বছরের পুরনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিন’। এতগুলো বছর প্রতিষ্ঠানটি জনগণের ভালোবাসা ধরে রেখেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কভিড-১৯ মহামারীর কারণে কমে যায় ম্যাগাজিনটির সার্কুলেশন। বিজ্ঞাপনও পাচ্ছে না আগের মতো। ফলে আর্থিক সংকটে পড়ে ১৬৩ বছরের পুরনো এই মার্কিন সংবাদমাধ্যম। ‘দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিন’ তাদের ৬৮ জন কর্মী ছঁাঁটাই করেছে ইতিমধ্যে। শুধু এটাই নয়, ভাইস, বাজফিডসহ অনেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আর্থিক সংকটে পড়ে কর্মী ছঁাঁটাই, বেতন কমানো ও বিনা বেতনে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। আর্থিক সংকটে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত অনলাইন নিউজ কোম্পানি বাজফিড নিউজ যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় তাদের প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের তান্ডবে নানাবিধ সংকটের মধ্যে বিশ্বজুড়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোও অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এই সংকট বিশ্ব ব্যবস্থার সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে।

সর্বশেষ খবর