রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

রংপুরে আট মাসেও কাটেনি সংকট

নজরুল মৃধা, রংপুর

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলেও আট মাসেও চিকিৎসক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি রংপুর করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল। করোনা আক্রান্ত হলেই এখানে চিকিৎসা মেলে। লক্ষণ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষা করতে যেতে হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সর্বোচ্চ ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা যায়। পরীক্ষার আওতা বাড়ানো হলে করোনা শনাক্তের হার বাড়বে এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকরা।

রংপুর করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনা শুরু হয় মার্চ মাসে। নগরীর প্রাণকেন্দ্রে নবনির্মিত শিশু হাসপাতালটিকে এপ্রিল মাসে করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। এখানে ১০০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। চালুর পরই ৩২ জন মেডিকেল অফিসারের চাহিদা দেওয়া হলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ২৪ জন চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে কর্মরত চিকিৎসকদের ওপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে কয়েক গুণ।

এ ছাড়া সিটি স্ক্যানসহ অন্যান্য পরীক্ষা রোগীদের বাইরে করাতে হয়। হাসপাতালটি শুরুর দিকে সিটি স্ক্যান মেশিন পাওয়ার আশ্বাস মিললেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। করোনামুক্ত রোগী আসাদুজ্জামান আফজাল বলেন,  হাসপাতালে সরকারি ওষুধ সরবরাহ খুবই কম। বাইরে থেকে বেশি দামে তাকে ওষুধ কিনে খেতে হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দিকে রোগীর সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত ছিল। মাঝখানে সর্বনি¤œ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১২ জনে। শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ছিল ৪৯ জন। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হবে- এমনটাই শঙ্কা করা হচ্ছে।  স্থানীয় প্রশাসন কঠোর আইন করেও শতভাগ মানুষের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে পারছে না। বিশেষ করে  তরুণদের চলাফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকরা। পাশাপাশি উৎকণ্ঠায় রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তুলনামূলক বয়স্করা কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও তরুণদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। অধিকাংশ তরুণই মাস্ক ছাড়া বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছে। এদিকে শুক্রবার রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৩২ জন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরের ১৮ জন, গাইবান্ধার আটজন, কুড়িগ্রামের তিনজন, লালমনিরহাটের  দুজন ও নীলফামারীর একজন রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এ কে এম নুরুন্নবী লাইজু। রংপুর সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ব কুমারের তথ্য মতে, রংপুর জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৪৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৯ জন ও মারা গেছেন ৬১ জন। করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নুরুন্নবী জানান, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তার পরেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর