বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
Forbes এর দৃষ্টিতে

বিশ্বের প্রভাবশালী নারী-২০২০

সাইফ ইমন

বিশ্বের প্রভাবশালী নারী-২০২০

অ্যাঙ্গেলা মেরকেল

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি ও সামরিক সুসজ্জিত দেশের চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব

জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর নানা জরিপে বরাবরই তাঁর নাম থাকছে প্রভাবশালী নারী রাজনীতিবিদ হিসেবে। এ বছরও ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী তিনি। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি ও সামরিক সুসজ্জিত দেশের চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। বিশ্ব রাজনীতির পালাবদলে তাঁর দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ এখনো সেলুনে গিয়ে অন্যদের মতো চুল কাটান, কোনো বিশেষ ছাড় তিনি নেন না।

 

ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডে

মুদ্রামান হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান অর্থাৎ ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ফ্রেঞ্চ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডে ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের দ্বিতীয় প্রভাবশালী নারী।

বর্তমানে তিনি কাজ করছেন বিভিন্ন দেশের মুদ্রামান হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান অর্থাৎ ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে। তিনি ফ্রেঞ্চ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও ছিলেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে প্রথম মেয়াদে ২০১১-২০১৬ পর্যন্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়  ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে পদটির জন্য মনোনীত হন এই ফ্রেঞ্চ নারী।

 

কমলা হ্যারিস

ইতিহাস গড়া কমলা হ্যারিস প্রথম নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ যিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর মা ছিলেন ভারতীয়

ইতিহাস গড়া কমলা হ্যারিস প্রথম নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ যিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর মা ছিলেন ভারতীয়। এটিও ইতিহাস হয়ে রইল যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। কমলার মায়ের বাড়ি দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়–তে। তাঁর মায়ের নাম শ্যামলা গোপালন। অ্যান্ডোক্রিনোলজি নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করতেন। প্রখ্যাত স্তন ক্যান্সার গবেষক ও বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী ছিলেন তিনি। বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলিতে পড়াশোনা করার জন্য ১৯ বছর বয়সে শ্যামলা ভারত ছেড়ে আসেন। পরে মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হন।

 

উরসুলা লাইয়েন

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি হওয়া প্রথম মহিলা। তিনি জার্মান এবং আমেরিকান বংশোদ্ভূত...

উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৮ সালের ৮ অক্টোবর। জার্মান রাজনীতিবিদ এবং ইউরোপীয় কমিশনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৩ সাল থেকে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কেন্দ্র-ডান ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) সদস্য উরসুলা লাইয়েন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি হওয়া প্রথম মহিলা। তিনি জার্মান এবং আমেরিকান বংশোদ্ভূত। ১৯৭১ সালে হ্যানোভারে চলে আসেন যখন তাঁর বাবা ১৯৭৬ সালে লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতিতে প্রবেশ  করেছিলেন।

 

মেলিন্ডা গেটস

তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনী ও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান সফটওয়্যার নির্মাতা এবং সাবেক সিইও বিল গেটসের সহধর্মিণী...

মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস একজন মানবপ্রেমী ও নারী ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব। জন্মের সময়ে তাঁর নাম ছিল মেলিন্ডা অ্যান ফ্রেঞ্চ। তাঁর অন্যতম পরিচয় হচ্ছে- তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনী ও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান সফটওয়্যার নির্মাতা এবং সাবেক সিইও বিল গেটসের সহধর্মিণী। মাইক্রোসফটে কর্মরত অবস্থায় তাঁদের মধ্যে পরিচিতি ঘটে। মাইক্রোসফট বব, মাইক্রোসফট এনকার্টা এবং এক্সপিডিয়া প্রকল্পে কাজ করেছেন মেলিন্ডা। মেলিন্ডা ১৯৬৪ সালে টেক্সাসের ডালাসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা রেমন্ড জোসেফ ফ্রেঞ্চ জুনিয়র পেশায় ছিলেন প্রকৌশলী এবং মা অ্যালেইন অ্যাগনেস অ্যামারল্যান্ড গৃহিণী ছিলেন।

 

ম্যারি বারা

সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি কোম্পানিটির ক্রয় এবং সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন...

ম্যারি বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মোটরস কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন ২০১৪ সালে। এর মধ্য দিয়ে ম্যারি বারা ইতিহাসে নিজের লিখে নেন। কারণ কোম্পানিটির সিইওর দায়িত্ব পাওয়া ম্যারি বারা ছিলেন মোটরগাড়ি শিল্পের প্রধান কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রথম নারী সিইও। তিনি এ পর্যন্ত মোট ছয়বার ফোর্বসের ক্ষমতাশালী নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এই ধারবাহিকতায় এবারও তিনি রয়েছেন সেরা ১০-এ। সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি কোম্পানিটির ক্রয় এবং সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।  ২০১৫ এবং ২০১৬ সালের এক জরিপে শীর্ষ প্রভাবশালী নারী তিনি।

 

ন্যান্সি পেলোসি

পুরো নাম ন্যান্সি প্যাট্রিসিয়া পেলোসি। তিনি ১৯৪০ সালের ২৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। কয়েক বছর ধরেই তিনি ফোর্বসের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় সেরা দশে অবস্থান করছেন। ন্যান্সি আমেরিকান রাজনীতিবিদ, যিনি ২০১৯ সাল থেকে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৫২তম স্পিকার। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনি একমাত্র মহিলা যিনি স্পিকার হিসেবে কাজ করেছেন। ন্যান্সি পেলোসি বাল্টিমোরে জন্মগ্রহণ করেন একটি ইতালিয়ান-আমেরিকান পরিবারে।  তাঁর পিতা-মাতা দুজনই ছিলেন ইতালিয়ান।

 

৮ 

অ্যানা প্যাট্রিসিয়া

অ্যানা প্যাট্রিসিয়া বটিন একজন স্প্যানিশ ব্যাংকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তাঁর বিশেষত্ব হচ্ছে, তিনি ইউরো জোনের প্রথম নারী হিসেবে প্রধান কোনো ব্যাংকের শীর্ষ পদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।  ২০১৪ সাল থেকে তিনি স্যানট্যান্ডার গ্রুপের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর আগে ২০১০ সাল থেকে তিনি ব্যাংকিং গ্রুপটির যুক্তরাজ্য শাখা স্যানট্যান্ডার ইউকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন প্রথম তাঁকে তাদের  তালিকায় ৯৯ নম্বরে স্থান দিয়েছিল।

 

অ্যাবিগেইল জনসন

অ্যাবিগেইল জনসন একজন সফল মার্কিন নারী ব্যবসায়ী। সেই সঙ্গে তিনি মার্কিন বিনিয়োগকারী সংস্থা ফিডেলিটি ইনভেস্টমেন্টসের সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বিশ্বের অন্যতম সম্পদশালী নারীই শুধু নন, একজন ধনকুবের নারী হিসেবেও সুপরিচিত। তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৪ সাল থেকে তিনি ফোর্বসের সেরা ১০০ ক্ষমতাশালী নারীর তালিকায় স্থান পেয়ে আসছেন।  সেই ধারাবাহিকতায় এবার রয়েছেন সেরা ১০-এ।

 

১০

গেইল বৌডরক্স

এই তালিকায় চমক হিসেবে এসেছেন গেইল বৌডরক্স। এর আগে কোনো প্রভাবশালী নারীর তালিকায় তাঁকে দেখা যায়নি। তাঁর পুরো নাম গেইল কোজিয়ারা বউদ্রেউস। তিনি একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী ও ক্রীড়াবিদ। কলেজে তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ডার্টমাউথ বিগ গ্রিন উইমেন বাস্কেটবল দলের একজন স্ট্যান্ডআউট খেলোয়াড় ছিলেন। পরে তিনি ইটিনো, ব্লুক্রস, ব্লুশিল্ড এবং ইলিনয় হেলথ গ্রুপের মতো বেশ কয়েকটি সংস্থার নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে আমেরিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃহত্তম  প্রতিষ্ঠানের সিইও হিসেবে কর্মরত রয়েছেন গেইল বৌডরক্স।

 

সর্বশেষ খবর