বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সমস্যায় জর্জরিত দিনাজপুর হাসপাতাল

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

সমস্যায় জর্জরিত দিনাজপুর হাসপাতাল

দিনাজপুর সদর হাসপাতালে দেখা মেলে না চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের

দিনাজপুরের হাসপাতালে চিকিৎসকসহ সরঞ্জাম সংকট কাটছেই না। আবার চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে কিন্তু চিকিৎসক নেই। চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও চিকিৎসক অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও চিকিৎসকসহ জনবল সংকট, টেকনিক্যাল পারসন সংকট, কোনো বিশেষজ্ঞ নেই, আধুনিক সরঞ্জাম সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং ১২ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফলে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। কোনো কোনো হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে দিন দিন বিল্ডিং বাড়ছে, বেডও বেড়েছে। জেলায় দিনাজপুর সদর জেনারেল হাসপাতাল এবং ১২ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩৩৮ জন, কর্মরত রয়েছেন দুই শতাধিক। দিনাজপুর  সদর জেনারেল হাসপাতালের পাঁচটি বিভাগে কোনো চিকিৎসকই নেই। প্রয়োজনের তুলনায় কম চিকিৎসক দিয়ে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের ৫৯ জনের মধ্যে কাজ করছেন ২৩ জন চিকিৎসক। কার্ডিওলজি, চোখ, নাক-কান গলা, চর্ম-নিউরোলজি বিভাগে কোনো কনসালট্যান্ট নেই। চর্ম-যৌন বিভাগে চিকিৎসক নেই। শিশু কনসালট্যান্ট নেই। জরুরি বিভাগে চারজনের স্থলে একজনও নেই। মেডিসিনে দুজনের স্থলে একজন রয়েছেন। ৩৪টি চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসকের পক্ষে রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে শহরসহ গ্রাম-গঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা গরিব ও অসহায় মানুষকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এই হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে কয়েক শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নজমুল ইসলাম জানান, বর্তমানে এই হাসপাতালের কয়েক বিভাগের বিভিন্ন পদ শূন্য থাকায় রোগীদের সার্বক্ষণিক ২৪ ঘণ্টা সেবাদান কষ্টকর হচ্ছে। এ ছাড়া ৪টি বিভাগের চিকিৎসক শূন্যসহ ৩৪টি চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসকের পক্ষে রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। চক্ষু বিভাগে রোগীর জন্য লেন্সসহ সরঞ্জাম আছে কিন্তু চিকিৎসক নেই। হাসপাতালের অনেক যন্ত্রপাতি পুরনো হয়েছে। সেগুলো সংস্কার বা পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে। এখানে হাসপাতালের স্টোর কমপ্লেক্স প্রয়োজন। তবে চিকিৎসক সংকট থাকলেও কোনো ওষুধের সংকট নেই। জেলা সিভিল সার্জন আবদুল কুদ্দুছ জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে পুরোপুরি সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বীরগঞ্জ, খানসামা, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান অনেক ভালো। তবে অনেক হাসপাতালে কাক্সিক্ষত জনবল ছাড়াও নেই আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন, নেই ডেন্টাল সরঞ্জামাদি, নেই স্টোর কিপার ও ইলেকট্রিশিয়ান। রয়েছে পরিচ্ছন্ন কর্মীর অভাব। আবার অনেক স্থানে থাকলেও এসব চালানোর টেকনিক্যাল পারসন নেই। মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ ফিল্ড পর্যায়ের ৪০-৪৫ জনের পদ শূন্য রয়েছে; যা সেবার মান বাড়াতে প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর