রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বুকারজয়ী লেখক

সাইফ ইমন

বুকারজয়ী লেখক

ম্যান বুকার পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার হিসেবে পরিচিত। একসময় এ পুরস্কার সীমাবদ্ধ ছিল শুধু কমনওয়েলথভুক্ত দেশ, আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে। ২০০৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে চালু হয়। বুকারজয়ী এমন কিছু বিখ্যাত লেখককে নিয়ে  আজকের রকমারি-

 

ভিএস নাইপল

নোবেল বিজয়ী প্রখ্যাত লেখক স্যার ভিএস নাইপল। ২০০১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ত্রিনিদাদিয়ান-ব্রিটিশ এই লেখকের পুরো নাম স্যার বিদ্যাধর সুরজপ্রসাদ নাইপল। অ্যা হাউস ফর মিস্টার বিশ্বাস, ইন অ্যা ফ্রি স্টেট, অ্যা বেন্ড ইন দ্য রিভার ও দ্য এনিগমা অব অ্যারাইভালের মতো নন্দিত বইগুলো লিখে সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন ভিএস নাইপল। এর আগে ‘ইন অ্যা ফ্রি স্টেট’ এর জন্য ম্যান অব বুকার অর্জন করেন। ১৯৩২ সালে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোয় বসবাস করা এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেন তিনি। তাঁর পিতামহ দেশান্তরী হয়েছিলেন চুক্তিভিত্তিক দাস হিসেবে। পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালে তিনি ব্রিটেনে এসে বসবাস শুরু করেন। এখান থেকেই লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবনের পরিকল্পনার শুরু করেছিলেন তিনি। বিশ্বজুড়ে নন্দিত লেখক ভিএস নাইপল বাংলাদেশে এসেছিলেন   কিছু দিন আগে।

 

ডেভিড গ্রুসম্যান

বামপন্থি পিস অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে ডেভিড গ্রুসম্যানকে সবাই চিনে। ২০১৭ সালে ম্যান বুকার প্রাইজ পান তিনি। মানবাধিকার কর্মী হিসেবে খ্যাত এই লেখক ‘হর্স ওয়াকস ইনটু বার’ বইয়ের জন্য বুকার পুরস্কার পান। তিনি ২০১০ সালে ফিলিস্তিনি এলাকায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি সে সময় বিক্ষোভেও অংশ নিয়েছিলেন। পুলিশের হাতে মারও খেয়েছেন।  এটাই প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি কোনো লেখকের বুকার জয়। তার বাবা এক সময় বাসচালক ছিলেন। বুকার ছাড়াও লেখক হিসেবে তিনি বহু পুরস্কার পেয়েছেন। তবে ম্যান বুকার তাঁকে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা। ১৯৭০ দশকে লেখালেখি শুরু করেন গ্রুসম্যান। তাঁর রচিত বিখ্যাত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ডুয়েল, দ্য স্মাইল অব দ্য ল্যাম্ব, ফলিং আউট টাইম, টু দ্য অ্যান্ড অব দ্য ল্যান্ড ইত্যাদি। গ্রুসম্যান ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার জিতেছেন ‘এ হর্স ওয়াকস ইন্টো এ বার’  বইটির জন্য।

 

জর্জ স্যান্ডার্স

নিজের লেখা প্রথম উপন্যাসেই ম্যান বুকার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্যিক জর্জ স্যান্ডার্স। মূলত তিনি গল্পকার। পুরস্কারপ্রাপ্ত স্যান্ডার্স দ্বিতীয় মার্কিন লেখক হিসেবে এ পুরস্কার পান ২০১৭ সালে। ‘লিংকন ইন দ্য বার্ডো’ উপন্যাসের জন্য তিনি এ পুরস্কার লাভ করেন। ছেলের কবরের পাশে যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের শোকের পটভূমি নিয়ে উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। উপন্যাসজুড়ে শুধু আব্রাহাম লিংকনের একটি রাতের গল্প। লন্ডনের গিল্ডহলে লেখকের হাতে ৫০ হাজার পাউন্ড অর্থমূল্যের বিশ্বসাহিত্যের সম্মানজনক এ পুরস্কার তুলে দেন ডাচেস অব কর্নওয়াল। পুরস্কার ঘোষণার পর স্যান্ডার্স বলেছিলেন, আমার জন্য এটা বিরাট সম্মানের। আশা করি, এটি আমার কাজকে অনুপ্রাণিত করবে। স্যান্ডার্সের জন্ম টেক্সাসে হলেও বর্তমানে থাকেন নিউইয়র্কে। বিভিন্ন গল্পগ্রন্থের জন্যও পুরস্কৃত হয়েছেন  তিনি পরবর্তীতে।

 

জুলিয়ান বারনেস

ব্রিটিশ লেখক জুলিয়ান বারনেস ২০১১ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন। ‘দ্য সেন্স অব অ্যান এন্ডিং’ উপন্যাসের জন্য এই পুরস্কার পান জুলিয়ান বারনেস। তিনি এর আগে আরও তিনবার মনোনীত হয়েছিলেন ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য। ১৯৮৪, ১৯৯৮ ও ২০০৫ সালে তাঁর এই পুরস্কার পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত পাননি। পুরস্কার প্রাপ্তির পর লন্ডনের গিল্ডহলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বারনেস বলেন, এই পুরস্কার পেয়ে তিনি আনন্দিত। একই সঙ্গে স্বস্তিও পেয়েছেন। তাঁর লেখা ফ্লবার্টস প্যারট, ইংল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও আর্থার অ্যান্ড জর্জ বই ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। এ জন্য তিনি মানসিক কষ্টে ভুগছিলেন। একপর্যায়ে তাঁর মনে হয়েছিল, কেউ বুঝি তাঁর এই পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাগড়া দিচ্ছে। পুরস্কার পাওয়া বই ‘দ্য সেন্স অব এন্ডিং’ সময় পরিভ্রমণ নিয়ে, তবে টাইম মেশিনে নয়। ১৫০ পৃষ্ঠার বইটি আয়তনে অন্য বিজয়ী বইগুলোর  চেয়ে ছোট।

 

অরুন্ধতী রায়

অরুন্ধতী রায় ভারতীয় ঔপন্যাসিক, বুদ্ধিজীবী এবং অ্যাকটিভিস্ট। তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে আছেন তাঁর উপন্যাস ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ এর জন্য। ১৯৯৭ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী হইচই পড়ে যায়। ১৯৯৮ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন উপন্যাসটির জন্য। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি পরিবেশগত সংশ্লিষ্টতা এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়েও কাজ করেন। ভারতের আসাম রাজ্যের শিলংয়ে অরুন্ধতী জন্মগ্রহণ করেন। অরুন্ধতীর বাবা ছিলেন বাঙালি হিন্দু আর মা ছিলেন মালয়ালি সিরিয়ান খ্রিস্টান। বাবা চা-কর্মী এবং মা নারী অধিকার কর্মী ছিলেন। অরুন্ধতী স্থাপত্যবিদ্যা বিষয়ে দিল্লির পরিকল্পনা ও স্থাপত্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। প্রথম স্বামী স্থাপত্যবিশারদ গেরার্ড দ্য কুনহার সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়েই তাঁর পরিচয় হয়েছিল। আর দ্বিতীয় বিয়ে করেন ১৯৮৪ সালে চলচ্চিত্র  নির্মাতা প্রদীপ কৃষাণকে।

 

হান কাঙ

দক্ষিণ কোরিয়ার নারী লেখক হান কাঙ। ২০১৬ সালের ম্যান বুকার পুরস্কার জয় করেন তিনি। তাঁর ‘দ্য ভেজেটেরিয়ান’ উপন্যাসের জন্য তিনি সাহিত্যের সম্মানজনক এ পুরস্কার পান। এক নারীকে ঘিরে এই উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। মানুষের নির্মমতা প্রত্যাখ্যান করতে চাওয়া এক নারী যিনি মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়ে নিরামিষাশী হয়ে ওঠেন। উপন্যাসটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন ডেবোরাহ স্মিথ। বিচারক প্যানেলের চেয়ারম্যান বয়েড টনকিন বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ান লেখক হান কাঙের কাজটি ছিল অবিস্মরণীয় শক্তিশালী এবং মৌলিক। ম্যান বুকার পুরস্কারের নিয়ম অনুযায়ী পুরস্কার মূল লেখক এবং অনুবাদক ভাগাভাগি করে পান। পুরস্কারের ৫০ হাজার পাউন্ড অর্থ মূল লেখক হান এবং তাঁর ব্রিটিশ অনুবাদক স্মিথ  উভয়ের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ের প্রভাষক হান কাঙের প্রথম উপন্যাস এটি।

 

মারলন  জেমস

জ্যামাইকান লেখক মারলন জেমস ২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার অর্জন করেন। বিচারকরা দুই ঘণ্টারও কম সময়ে সর্বসম্মতভাবে মারলনের উপন্যাসটিকে পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করেছেন। পুরস্কারটি মারলন তাঁর বাবাকে উৎসর্গ করেন। ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব সেভেন কিলিং’ উপন্যাসটির জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। ৬৮০ পৃষ্ঠার বিশাল আয়তনের উপন্যাসটি লেখেন ৪৪ বছর বয়সে। সত্তর দশকের কিংবদন্তিতুল্য জ্যামাইকান গায়ক বব মার্লের হত্যা প্রচেষ্টার ওপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে উপন্যাসটি। যাতে বব মার্লের জীবনের বিভিন্ন দিকও উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে মারলন জেমসের হাতে ম্যান বুকারের পুরস্কার তুলে দেন ডাচেস অব কর্নওয়েল। মারলনের উপন্যাসটি সম্পর্কে ম্যান বুকার পুরস্কারের বিচারকদের প্রধান মাইকেল উড বলেন, পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা ‘সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ’ উপন্যাস এই ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব  সেভেন কিলিং’।

 

এলিনর ক্যাটন

ম্যান বুকার পুরস্কার জয়ী সর্বকনিষ্ঠ লেখিকা এলিনর ক্যাটন। ২০১৩ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পান নিউজিল্যান্ডের এলিনর ক্যাটন। এলিনর তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস দ্য লুমিনারিজের জন্য পুরস্কারটি অর্জন করেন। কানাডার অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন এলাকায় ১৯৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছয় বছর বয়সে তাঁর পরিবার নিউজিল্যান্ডে আসে। সেখানেই তিনি বার্নসাইড উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ক্যান্টরবুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক এবং ওয়েলিংটনের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এলিনর। পুরস্কার জয়ী বইটি নিউজিল্যান্ডের সোনার খনিকে কেন্দ্র করে লেখা। ৮৩২ পৃষ্ঠার বইটি বুকার পুরস্কারের ৪৫ বছরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সাহিত্যকর্ম হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। পেশায় শিক্ষক এলিনর লেখালেখিতে একাধিক ফেলোশিপ পেয়েছেন। সবচেয়ে কম বয়সে এই  পুরস্কার জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেন তিনি।

 

পল বিটি

২০১৬ সালের ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের লেখক পল বিটি। তাঁর রচিত ‘দ্য সেলআউট’ উপন্যাসের জন্য এ পুরস্কার পান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন বর্ণের মানুষের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে বিদ্রূপাত্মক উপন্যাস লিখে পল বিটিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ম্যান বুকার জয়ী লেখক। পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে ৫০ হাজার পাউন্ড পান তিনি। বুকার পুরস্কারের জন্য গঠিত পাঁচ বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি আমান্ডা ফোরম্যান বলেন, কোনো দ্বিমত ছাড়াই ‘দ্য সেলআউট’কে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়।

মাত্র চার ঘণ্টার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। এমনকি তিনি উপন্যাসটিকে জনাথন সুইফট ও মার্ক টোয়েনের স্যাটায়ারধর্মী সাহিত্যকর্মের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত রসিকতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমকালীন সমাজের গভীরে প্রবেশ করতে পেরেছেন পল বিটি, যা সুইফট  বা টোয়েনের পর আর দেখা যায়নি।

 

লাসলো ক্রাসনাহরকাই

‘যেসব পাঠক আজ অবধি আমার লেখা  কোনো বই পড়েননি, তাদের আমি বই পড়ার পরামর্শ না দিয়ে বরং বলতে পারি, ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ুন, যে কোনো জায়গায় বই নিয়ে বসে যান।’ কথাগুলো বলেছেন হাঙ্গেরির কল্পলেখক লাসলো ক্রাসনাহরকাই। কল্পকাহিনীতে অবদানের জন্য ‘ম্যান বুকার পুরস্কার ২০১৫’ অর্জন করেন। তরুণ জীবনে ক্রাসনাহরকাই ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো সমাজতান্ত্রিক হাঙ্গেরির বাইরে পা রাখেন। ভ্রমণ করেন পশ্চিম বার্লিন ড্যাড ফেলো হিসেবে। সোভিয়েত ব্লকের পতনের পর থেকে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন বৈচিত্র্যময় নানা দেশে। লাসলো ক্রাসনাহরকাই বলেন, কোনো কিছুতে আস্থাশীল হওয়ার আগ্রহ-প্রবৃত্তি নেই আমার, বরং আমি বুঝতে চাই ওদের, যারা আস্থাশীল। প্রথমে অক্ষর, অক্ষর  থেকে শব্দ, শব্দ সাজিয়ে ছোট ছোট কটা বাক্য, তার বাদে খানিকটা দীর্ঘ কিছু বাক্য, তারপর  প্রধানত মস্ত দীর্ঘ বাক্য।

 

হাওয়ার্ড জ্যাকবসন

২০১০ সালের বুকার পুরস্কার অর্জন করেন ব্রিটিশ লেখক হাওয়ার্ড জ্যাকবসন। হাস্যরসাত্মক উপন্যাস ‘দ্য ফিঙ্কলার কোয়েশ্চেন’-এর জন্য তাঁকে সাহিত্যের এই সম্মানজনক পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁর সেই পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে প্রায় ৩০ বছর পর প্রথম কোনো কমিক উপন্যাস এ পুরস্কার লাভ করে। ১৯৮৬ সালে কিংসলে অ্যামিস তাঁর দ্য ওল্ড ডেভিল উপন্যাসের জন্য বুকার পুরস্কার পেয়েছিলেন। দুবার বুকার পাওয়া পিটার ক্যারি ও সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে বহুল আলোচিত টম ম্যাকার্থিসহ পাঁচজনকে টপকে এ বছর পুরস্কার পেলেন জ্যাকবসন। এর আগে দুবার বুকারের দীর্ঘ তালিকায় নাম উঠলেও এবারই প্রথম তিনি শর্ট লিস্টে চলে আসেন। এবার ভাগ্য তাঁর সহায় ছিল এবং জিতে নেন নোবেলের পর সবচেয়ে মর্যাদাবান সাহিত্য পুরস্কার বুকার। ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী কোম্পানি ম্যান গ্রুপ পিএলসি এই পুরস্কারের স্পন্সর বলে এই নাম। গত বছর দুই নারী নোবেল ও বুকার দুটি পুরস্কার জিতে নেন।

 

সালমান রুশদি

সালমান রুশদি একজন ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস মিডনাইটস চিলড্রেন ১৯৮১ সালে বুকার প্রাইজ অর্জন করে। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত তাঁর লেখা বিতর্কিত বই স্যাটানিক ভার্সেস বিশ্বের অনেক দেশেই নিষিদ্ধ। বইটি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। এর প্রতিবাদ জানায় বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়, যা এক সময় সহিংস রূপ ধারণ করে। তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। বাংলাদেশেও বইটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। তাঁর লেখার একটা বিশেষ দিক হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশ।

বইয়ের একটা বড় অংশজুড়ে থাকে এই উপমহাদেশ। সাধারণত তাঁর লেখার বিষয় হচ্ছে জাদু বাস্তবতা। যার সঙ্গে তিনি ঐতিহাসিক পটভূমির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে কল্পকাহিনী রচনা করেন। ২০০৭ সালের জুন মাসে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে নাইট ব্যাচেলর উপাধিতে ভূষিত করেন।  এ ছাড়াও তিনি বহু পুরস্কার অর্জন করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর