বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

কোন দেশে কেমন বাজেট

আবদুল কাদের

কোন দেশে কেমন বাজেট

বাজেট হচ্ছে একটি দেশের সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের হিসাব। গ্রেট ব্রিটেনে সর্বপ্রথম বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছিল। ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী কমন্স সভায় সর্বপ্রথম বাজেট পদ্ধতির গোড়াপত্তন করেন। আধুনিক বাজেটের প্রবর্তক ভারতীয় ভাইসরয়ের নির্বাহী পরিষদের অর্থসদস্য স্যার জেমস উইলসন। মূলত একটি দেশের সরকারকে দেশ চালাতে হয়, সরকারের হয়ে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের বেতন দিতে হয়, আবার নাগরিকদের উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাট বানানোসহ নানা ধরনের উদ্যোগ নিতে হয়। সুতরাং একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরে কোথায় কত ব্যয় হবে, সেই পরিকল্পনার নামই বাজেট। যার মাধ্যমে উন্নয়ন ঘটে একটি দেশের, একটি রাষ্ট্রের। বাজেট প্রণয়নে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলো নিয়ে আজকের রকমারি।

 

যুক্তরাষ্ট্র

প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার দেশটির জনগণের পরিষেবা এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচির জন্য অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। দেশটির রাষ্ট্রপতি সে দেশের আইনসভা কংগ্রেসের কাছে আগামী অর্থবছরের ফেডারেল সরকারের বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন। এরপর তা কংগ্রেসের দুই কক্ষ অর্থাৎ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস (নিম্নকক্ষ) ও সিনেটে (উচ্চকক্ষ) পাস হওয়ার পরে তা রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য ফেরত পাঠানো হয়। ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দেশটির প্রথম বাজেট প্রক্রিয়া তৈরি করে, তবে সরকারের মধ্যে মতভেদ এবং নানা অদক্ষতার কারণে এটি খুব কম ব্যবহৃত হয়। ১৯৭৬ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৮ বার তাদের বাজেট পাস আটকে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিকে ‘শাটডাউন’ বলা হয়। এর ফলে সরকারি সেবা খাত বন্ধ হয়ে যায়, আটকে যায় সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা। ১৯৯৫ সালে রেকর্ড ২১ দিন এমন পরিস্থিতি ছিল। সর্বশেষ শাটডাউনের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম ১৬ দিন। প্রতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়। মূলত জনসাধারণের আয়কর ও ট্রেজারি সিকিউরিটি থেকেই বাজেটের অর্থ আসে। এর জন্য দেশটির ফেডারেল সরকারকে বরাদ্দকৃত  অর্থ এবং তার ব্যয়সমূহ বিবেচনা করতে হয়।

 

চীন

এশিয়ার অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ চীন। দেশটির বাজেট প্রণয়ন করা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অর্থাৎ অর্থবছর শুরু ১ জানুয়ারি এবং শেষ হয় ৩১ ডিসেম্বর। তবে জনবহুল দেশটির বাজেট ঘোষণা করা হয় মার্চ মাসে। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র চীনের বাজেট অনুমোদন দেয় চীন ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশটির বাজেট গোটা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। সমাজতান্ত্রিক দেশটির বাজেটের উৎস দেশটির শিল্প-কারখানা। প্রণয়নকৃত বাজেটের বৃহৎ অংশ ব্যয় করা হয় শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে। প্রণয়নকৃত বাজেটের তৃতীয় বৃহৎ অংশটি ব্যয় করা হয় নিজেদের সামরিক খাতে। কারণ চীনের আছে বৃহত্তম সেনাবাহিনী। বর্তমান সময় দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিজেদের সামরিক খাতকে করেছে আরও শক্তিশালী। যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীনের সামরিক বাজেট কম হলেও যুক্তরাষ্ট্রের পর সামরিক ব্যয়ের দিক থেকে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। প্রায় ৪২ বছর আগে দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কার ও শিল্পোন্নয়নের মাধ্যমে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাধিত হয়। সে সময় চীন এমন এক নীতি বজায় রাখে, যা দেশটির অর্থনীতিকে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন রেখেছিল।  বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি।

 

জার্মানি

ইউরোপের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র জার্মানি। বৃহৎ অর্থনীতির দেশটির অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর এবং শেষ হয় ৩০ সেপ্টেম্বর। জার্মানির পার্লামেন্ট চ্যান্সেলর নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করে থাকেন। তবে নতুন বছরের এই বাজেট তৈরি করে দেশটির অর্থমন্ত্রী এবং অর্থনীতি বিভাগসহ সব সরকারি অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো। পার্লামেন্টের চ্যান্সেলর কর্তৃক বাজেট প্রস্তাবনার পর দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষ বাজেটের অনুমোদন দেয়। দেশটির বাজেটের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো- দেশটির অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব এবং ব্যয়ের একটি ওভারভিউ তৈরি করা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে জার্মানির বিশাল অঙ্কের বাজেট যে কাউকে চমকে দেবে। সম্প্রতি ইউরোপের অর্থনীতি চাঙা করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যেতে দৃঢ় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয়। জার্মানির সরকার বাজেটের একটি বড় অংশ বরাদ্দ করে প্রতিরক্ষা খাতে। তাই তো জার্মানির প্রতিরক্ষা বাজেট পৃথিবীর মধ্যে নবম সর্বোচ্চ বাজেট। পাশাপাশি শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে প্রচুর টাকা খরচ করে দেশটির সরকার। যদিও করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাব পড়েছে দেশটির বাজেটে।  তবুও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আগ্রহী জার্মানি।

 

জাপান

জাপান বিশ্বের অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ। যার বাজারভিত্তিক অর্থনীতি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময় দেশটির অর্থনীতির বিস্তারের ফলে জাপান যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠে। ২০১৩ সালের পর থেকে এশিয়া মহাদেশে চীনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে। বৃহৎ অর্থনীতির দেশটির অর্থবছর শুরু হয় ১ এপ্রিল এবং শেষ হয় ৩১ মার্চ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাতীয় বাজেট তৈরি করে আসছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়। আর সেই বাজেট দেশটির সংসদ ডায়েটের দুই কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস (নিম্নকক্ষ) ও হাউস অব কাউন্সিলরস (উচ্চকক্ষ) থেকে অনুমোদিত হতে হয়। বাৎসরিক বাজেট পাস নিয়ে জাপানে নানা ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। যেমন- কখনো প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, আবার জোট সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেটের অনুমোদন দিয়েছে ডায়েট। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য ৯৫ দশমিক ৮৮ ট্রিলিয়ন ইয়েনের বাজেট অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার। এদিকে গত চার বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো মূল্য সংকোচনের জাল থেকে বেরিয়ে এসেছে এশিয়ার শিল্পোন্নত দেশটি।

 

যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য (গ্রেট ব্রিটেন) বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। দেশটির অর্থনীতি যেমন উন্নত- তেমনি দেশটির বাজেট প্রণয়নও অত্যন্ত শক্তিশালী। গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যকে বাজেট পদ্ধতির জনকও বলা হয়। দেশটির অর্থবছর শুরু হয় ১ এপ্রিল এবং শেষ হয় ৩১ মার্চ। আর দেশটির অর্থবছর শুরুর অন্তত এক মাস আগে আগামী বছরের বাজেট পেশ করা হয়। যুক্তরাজ্যের অর্থবছরের বাজেট তৈরি করে এইচএম ট্রেজারি খ্যাত (হার ম্যাজেস্ট্রিস ট্রেজারি) ব্রিটিশ সরকারের বাজেট নীতি ও অর্থনৈতিক নীতিমালা বিভাগ। বাজেট প্রণয়নের আগে সরকারের নানা সংস্থা ও বিভাগ তহবিলের জন্য প্রস্তাবনা দিতে থাকে। সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকারি দলের হাউস অব লর্ডস সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বাজেট পাসের সময় সরকার বড় প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেখতে পারে না। ব্রিটিশ সংসদের দুই কক্ষ হাউস অব কমন্স (নিম্নকক্ষ) ও হাউস অব লর্ডস (উচ্চকক্ষ) পাস হওয়ার পর কার্যকর শুরু হয়। তবে সংসদ চাইলে গ্রীষ্ম অধিবেশন পর্যন্ত বাজেট সংশোধন করতে পারে। চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হওয়ার পর ব্রেক্সিট-পরবর্তী প্রথমবারের  মতো জাতীয় বাজেট ঘোষণা করে যুক্তরাজ্য।

 

ফ্রান্স

বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক রাষ্ট্র ফ্রান্স। যার বাজার ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়া মহাদেশেও। ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ফ্রান্স ১৯১১ সাল থেকে অর্থবছর হিসেবে বাজেট প্রণয়ন করে আসছে। ফরাসি দেশটির ক্যালেন্ডারই তার অর্থবছর। অর্থাৎ দেশটির অর্থবছর শুরু হয় ১ জানুয়ারি এবং শেষ হয় ৩১ ডিসেম্বর। ফ্রান্সে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অনুমোদনের পর বাজেট বাস্তবায়ন করা হয়। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী নতুন বাজেট অনুমোদনের জন্য সর্বোচ্চ ৭০ দিন সময় পায় পার্লামেন্ট। আবার সংবিধানের আর্টিকেল ৪০ অনুসারে সিনেট ও ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটের অনুমোদন আটকে দিয়ে আনা যাবে সংশোধনী। যে কোনো প্রয়োজনে বাজেট পাস হওয়ার পরও ফরাসি সরকার মাত্র ২ শতাংশ বাজেট সমন্বয় করতে পারে। ফ্রান্সের বাজেট সরকারি ব্যয় ও রাজস্ব আদায়ের ওপর হয়ে থাকে। সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ করে থাকে। ২০১৭ সালের অর্থনৈতিক মন্দায় বাজেটে সরকারি ব্যয় কমিয়ে আনে ফ্রান্স। করোনা মহামারীর ধাক্কা সামলে ইউরোপকে এগিয়ে নিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যেতেও বদ্ধপরিকার দেশটি।

 

কানাডা

বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলোর একটি কানাডা। ধনী রাষ্ট্রের বাৎসরিক বাজেটও চমকে দেয় সবাইকে। কানাডার অর্থবছর শুরু হয় ১ এপ্রিল এবং শেষ ৩১ মার্চ। নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী। দেশটির হাউস অব কমন্সে জাতীয় বাজেট পেশ করা হয়। হাউস অব কমন্সের উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষ অনুমোদন দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ওই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন করে থাকেন। শুধু তাই নয়, দেশটির আয়করদাতাদের জন্য আছে আলাদা অর্থবছর। তবে কানাডার বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে মজার একটি তথ্য রয়েছে। হাউস অব কমন্সে জাতীয় বাজেট পেশ করার আগে কানাডার অর্থমন্ত্রী নতুন জুতা পায়ে সংসদে যান এবং বাজেট পেশ করেন। এটিই হচ্ছে কানাডার ঐতিহ্য। ১৯৫০ সাল থেকে টানা চলে আসছে এই ঐতিহ্য। কানাডা সরকারের বরাদ্দকৃত বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় হয় দেশটির শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে। করোনাভাইরাস মহামারী ভালোভাবে সামাল দিয়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে ধনী রাষ্ট্র কানাডা।

 

ভারত

বৃহত্তম গণতন্ত্রের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট বিশ্বের ১৪তম বৃহৎ বাজেট। দেশটির সংবিধানের ১১২ ধারা অনুসারে প্রতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ কর্মদিবসে সংসদে বাজেট পেশ করা হয়। ভারতীয় সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। এর উচ্চকক্ষের নাম রাজ্যসভা এবং নিম্নকক্ষের নাম লোকসভা। ভারতীয় বাজেট নিম্নকক্ষে পেশ করা হয়। অর্থমন্ত্রীর বাজেট ভাষণের পরে তা উপস্থাপন করা হয় রাজ্যসভায়। দেশটির লোকসভা ও রাজ্যসভার অনুমোদনক্রমে ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়। সংসদের অনুমোদন পেলে প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে বাজেট প্রস্তাব কার্যকর হয় এবং পরের বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকে। তবে এবারই প্রথম ভারতে ‘পেপারলেস বাজেট’ পেশ করা হয়। এমন বাজেট আগে কখনো হয়নি। কথা মতো ট্যাবলেট কম্পিউটার হাতে নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী।  ভারতের সামরিক বাজেট বিশ্বের অষ্টম বৃহৎ বাজেট। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দেশটির পুরো বাজেটে প্রাধান্য পেয়েছে স্বাস্থ্য খাত।

 

ইতালি

ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইতালি। সাধারণত ইতালিয়ান ক্যাবিনেট দেশটির নতুন অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দিয়ে থাকে। দেশটির অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করে থাকেন। ক্যাবিনেটের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অনুমোদনের পর বাজেট বাস্তবায়ন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ইতালিও ক্যালেন্ডার বর্ষকেই অর্থবছর হিসেবে মেনে আসছে। ক্যাবিনেটের অনুমোদন পেলে প্রতি বছর ১ এপ্রিল থেকে বাজেট প্রস্তাব কার্যকর হয় এবং পরের বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকে। দেশটির বাজেটের বিরাট একটা অংশ ব্যয় হয় দেশটির প্রতিরক্ষা খাতে। ইতালির রয়েছে বিশ্বের নবম বৃহত্তম সামরিক বাজেট এবং ন্যাটো নিউক্লিয়ার সরঞ্জামের অংশীদারত্ব। দেশটির অর্থবছরের বাজেটের আরেকটি বিরাট অংশ ব্যয় হয় শিক্ষা এবং উন্নয়নে। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কায় বিপর্যস্ত ইতালির নতুন বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে স্বাস্থ্য খাত।

 

রাশিয়া

রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত। আয়তনের দিক থেকে দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্র হলেও বাজেটের অর্থের পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে দেশটির অবস্থান ১২তম স্থানে। ১৯১১ সাল থেকে রাশিয়া ক্যালেন্ডার বর্ষকেই অর্থবছর হিসেবে মেনে আসছে। অর্থাৎ দেশটির অর্থবছর শুরু হয় ১ জানুয়ারি এবং শেষ হয় ৩১ ডিসেম্বর। ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর রাশিয়া ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট দুই বছরের জন্য বাজেট নীতিসংক্রান্ত বিষয়ে নিজের বার্তা পেশ করেন। তাতে দেশের প্রধান বাজেট নীতির প্রধান লক্ষ্যগুলো নির্দেশ করেন। মন্ত্রিসভা রাষ্ট্রপতির এই বার্তার ওপর ভিত্তি করেই বাজেট তৈরি করে থাকে। এরপর তা পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিল ও নিম্নকক্ষে টেস্ট ডুমায় অনুমোদন নিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। সামরিক খাতে ব্যয়ের দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বে তৃতীয় স্থানে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া নিজেদের সামরিক খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় করে আসছে। তবে দেশটির বাজেটের অর্থ এককালীন দেওয়া হয় না; প্রতি বছর গড় হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে।

 

শীর্ষ ১০ সর্বোচ্চ কর পরিশোধের দেশ

১. আরুবা ২. জাপান ৩. যুক্তরাজ্য ৪. ফিনল্যান্ড ৫. আয়ারল্যান্ড ৬. সুইডেন ৭. ডেনমার্ক ৮. নেদারল্যান্ডস ৯. বেলজিয়াম ১০. অস্ট্রিয়া

 

বাজেটে সর্বোচ্চ অর্থের পরিমাণে শীর্ষ ১০ দেশ

১. যুক্তরাষ্ট্র ২. চীন ৩. জাপান ৪. জার্মানি ৫. ফ্রান্স ৬. যুক্তরাজ্য ৭. ইতালি ৮. ব্রাজিল ৯. কানাডা ও ১০. স্পেন

 

শীর্ষ ১০ ধনী দেশ

১. কাতার ২. লুক্সেমবার্গ ৩. সিঙ্গাপুর ৪. ব্রুনাই ৫. কুয়েত ৬. সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭. আয়ারল্যান্ড ৮. নরওয়ে ৯. সুইজারল্যান্ড ১০. যুক্তরাষ্ট্র

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর