বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্বের বিপজ্জনক যত বিমানবন্দর

আবদুল কাদের

বিশ্বের বিপজ্জনক যত বিমানবন্দর

উড়োজাহাজ আবিষ্কারের পর আকাশযাত্রা আরও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছে। কিন্তু বিশ্বের এমন বিমানবন্দর রয়েছে যেখানে উড়োজাহাজ ওঠানামা করাটা খুবই বিপজ্জনক। মাত্র একটা ভুল ডেকে আনতে পারে হাজারো মানুষের মৃত্যু। ভৌগোলিক অবস্থান আর বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এসব বিমানবন্দরে অবতরণে পাইলটদের সর্বদা সচেতন থাকতে হয়।  এসব বিমানবন্দরের অবস্থান, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা, দুরূহ অবতরণ এবং ছোট রানওয়ের জন্য বিপজ্জনক বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত।

 

লুকলা [নেপাল]

বিমানবন্দরটি হিমায়িত ভূখন্ডের মধ্য দিয়ে মাউন্ট এভারেস্টের কাছে অবস্থিত। পাহাড়ের মধ্য দিয়ে তৈরি বিমানবন্দরটির রানওয়ে খুব ছোট, যা যে কোনো বিমান অবতরণের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কখনো কখনো বিমানবন্দরে কোনো বৈদ্যুতিক শক্তি থাকে না, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পাইলটরা অবতরণের সময় এয়ার কন্ট্রোলারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ব্যর্থ হন। ২০১০ সালে নেপালে অবস্থিত বিমানবন্দরটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক ও বিপজ্জনক বিমাবন্দরের তালিকায় নাম লেখায়। দ্য হিস্টোরি চ্যানেলের এক প্রতিবেদনে বিমানবন্দরের বিপজ্জনক রানওয়ের এয়ারপোর্ট হিসেবে তুলে ধরা হলে বিশ্বের মানুষের কৌত‚হলে এসে দাঁড়ায় এটি। ৯ হাজার ৩২৫ ফুট উঁচু বিমানবন্দরটির নামকরণ করা হয় প্রথম দুই পর্বতারোহীর নাম অনুসারে। ২০০৮ সালে এই বিমানবন্দর এভারেস্ট বিজয়ী স্যার এডমন্ড হিলারির নামে লুকলা এয়ারপোর্টের নাম পাল্টে তেনজিং-হিলারি এয়ারপোর্ট নাম রাখা হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৯০০ মিটার ওপরে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি নেপালের লুকলা শহরে অবস্থিত ছোট এক বিমানবন্দর। এর চারপাশের পরিবেশ জনকোলাহল থেকে দূরে হলেও বিমানবন্দরের এক প্রান্ত পুরোটাই পর্বতবেষ্টিত। ঠিক এ কারণেই বিমান উড্ডয়ন এবং অবতরণ; দুই ক্ষেত্রেই পর্বতের সঙ্গে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা অনেক বেশি।  বারবার বিমান দুর্ঘটনার ঘটনার তালিকায় পিছিয়ে নেই এই বিমানবন্দরটি।

 

প্রিন্সেস জুলিয়ানা [সেন্ট মার্টিন]

প্রিন্সেস জুলিয়ানা এয়ারপোর্ট ক্যারিবিয়ান দ্বীপে অবস্থিত। পূর্ব ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের সেন্ট মার্টিনে এর অবস্থান। এটি অদ্ভুত ও রোমাঞ্চকর দৃশ্যের জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত। নেদারল্যান্ডসের যে অংশে এখনো নিয়মিত বিমান অবতরণে আগে বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য পাইলটদের বলা হয় তার একটি এই বিমানবন্দর। এটি এই অঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর। এই এয়ারপোর্ট সমুদ্রসৈকতের কাছে অবস্থিত। যখন এখান দিয়ে বিমান ওঠানামা করে, সেই সময় সেখানে উপস্থিত মানুষ খুবই রোমাঞ্চিত এবং ভয়ে ভীত হয়। তবুও প্রচুর মানুষ এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার জন্য এই সমুদ্রসৈকতে এসে ভিড় জমায়। ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হয়। বিমানবন্দরের ল্যান্ডিং স্ট্রিপ খুবই ছোট, মাত্র ২১৮০ মিটার মাত্র।  যুদ্ধবিমান রানওয়ে ধরে ছুটে চলার জন্য এমন রানওয়ে।

 

টনকন্টিন  [হন্ডুরাস]

পাহাড়ের পাশে অবস্থান এবং সরু রানওয়ের কারণে বিমানবন্দরে অবতরণও খুব জটিল। পাইলটরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মোড় নিয়ে উপত্যকার কাছাকাছি অবতরণ করে। বিপজ্জনক এই বিমানবন্দরের নাম টনকন্টিন বিমানবন্দর, যা হন্ডুরাসের তেগুসিগালপাতে অবস্থিত মিলিটারি বিমানবন্দর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ২৯৭ ফুট উঁচুতে অবস্থিত বিমানবন্দরটির রানওয়ে ৭০৯৬ ফুট লম্বা। বিমানবন্দরটি চারদিক থেকে উঁচু পাহাড় দ্বারা আবৃত। প্রবল বাতাস ও খারাপ আবহাওয়া অনেক সময়  হেড-অন ল্যান্ডিংয়ে বাধা দেয়।

 

ম্যাডিরা  [পর্তুগাল]

এটি ম্যাডিরা বিমানবন্দর নামে সর্বাধিক পরিচিত। পর্তুগিজ দ্বীপপুঞ্জ এবং মাদেইরা অঞ্চলে সান্তা ক্রুজের নাগরিক প্যারিশের বিমানবন্দর এটি। ১৯৬৪ সালে পর্তুগালের এই বিমানবন্দরটি নির্মাণ করা হয়। ছোট রানওয়ের মূল বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিমানবন্দরের নামডাক হলেও, বিশ্বের বিপজ্জনক বিমানবন্দর এটি। আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থানের কারণে এখানে বিমান অবতরণ অনেক সময় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। পাশাপাশি যোগ হয়েছে রানওয়ে ঘেঁষে থাকা সুউচ্চ পাহাড়গুলো। প্রথমে বিমানবন্দরটির মূল রানওয়ে ছিল মাত্র ১৪০০ মিটার লম্বা। কিন্তু অবতরণের সুবিধার্তে তা  বাড়িয়ে ১৮০০ মিটার করা হয়।

 

কাবুল [আফগানিস্তান]

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ায় দেশটির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর বিদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি আফগানরাও দেশ ছাড়ছেন। ফলে কাবুল বিমানবন্দরে অনেক বেশি ভিড় ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরটি বন্ধ ঘোষণা করেছিল। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, লুটপাট ও অপহরণ ঠেকাতে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সব বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ করা হয়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মার্কিন সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। গতকাল যদিও ফের চালু হয়েছে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তবে আতঙ্ক এখনো কমেনি বলে জানায় বিদেশি গণমাধ্যমগুলো। আফগানিস্তান থেকে কূটনীতিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে সামরিক ফ্লাইট শুরু হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানায়, বিমানবন্দর থেকে সাধারণ মানুষ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।  প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক কারণে নয়, বর্তমান বিশ্বে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

 

চার্চেভেল  [ফ্রান্স]

বিমানবন্দরটির রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ১,৭০০ ফুট, এই বিমানবন্দরের নিম্নগামী ব্যাসার্ধ ১৮.৫ শতাংশ। পাশাপাশি ছোট ও খুব ঢালু হওয়ার কারণে বিমানবন্দরটি আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। বিমান অবতরণের জন্য এখানে পাইলটদের খুব কম গতিতে নামাতে হয়, টেক অফ করার সময় খুব কম গতিতে রানওয়ের উঁচু প্রান্তের দিকে যেতে হয়। বিমানবন্দরটির রানওয়ে মাত্র ৫২৫ মিটার। এত ছোট রানওয়েতে একটি বিমান মাত্র একবারই উঠতে অথবা নামতে পারে। একই সময়ে অন্য কোনো বিমান এয়ারপোর্ট ছেড়ে যেতে চাইলে অথবা বাইরে থেকে এসে এখানে অবতরণ করতে পারে না। এ ছাড়া অনেক সময় অল্প জায়গায় বিমান ঘুরানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এখানে বিমান ঘুরাতে বেগ পেতে হয়। এসবের পাশাপাশি আছে ঘন কুয়াশা এবং মেঘের বাড়াবাড়ি। ঘন কুয়াশায় উড়োজাহাজ অবতরণ বা উড্ডয়ন দুটোই বন্ধ থাকে পুরোপুরি। অনেক সময়ই ভারী মেঘের কারণে বিমান শিডিউল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মেঘ এসে রানওয়েতে কুয়াশাচ্ছন্ন করে তোলে বলে রানওয়েতে বিমান উঠানো বা নামানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া বিমানবন্দরে কোনো আলো বা যান্ত্রিক সহায়তা না থাকায় পাইলটদের জন্য বিমান উড্ডয়ন এবং অবতরণ খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। অতি উঁচু পর্বতমালা ঘিরে রেখেছে বিমানবন্দরটিকে। দক্ষ পাইলটও অনেক সময় বিমানবন্দরের রানওয়ে খুঁজে পেতে হয়রান হয়ে যান।

 

জিব্রাল্টার [জিব্রাল্টার]

বিমাবন্দরের ভিতর দিয়ে রেললাইনের রাস্তা চলে গেছে, যে কারও জন্য বিষয়টি অবাক করার মতো। এ কারণেই প্রায়ই উড়োজাহাজ যখন অবতরণ করে তখন বাধ্য হয়ে দুই পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই অবাক করা বিমানবন্দরটি শুধু জিব্রাল্টার বা ইউএস এয়ারলাইনসের চলাচলে সারা বিশ্বেই উড়োজাহাজের ভয়ানক রানওয়ে হিসেবে পরিচিত। ব্রিটেনের কাছে ৬.৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে জিব্রাল্টার দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত এই এয়ারপোর্ট পৃথিবীর একমাত্র এয়ারপোর্ট যার রানওয়ের মাঝখান দিয়ে একটি রাস্তা চলে গেছে। সমুদ্রতল থেকে এই এয়ারপোর্টের উচ্চতা মাত্র ১৫ ফিট এবং এর রানওয়েটি মাত্র ৫৫১১ ফুট লম্বা। জায়গা কম থাকার জন্য যখন এই রানওয়ে দিয়ে বিমান ওঠানামা করে তখন রানওয়ের মাঝখানে অবস্থিত রাস্তাটিকে ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক পাইলট এই রানওয়ে ধরে নামতে চান না। কারণ একটাই, উড়োজাহাজ তো বটেই  সাধারণ যাত্রীদের নিয়েও প্রাণশঙ্কা।

 

গিসবর্ন  [নিউজিল্যান্ড]

নিউজিল্যান্ডের গিসবর্ন শহরের ঠিক বাইরের দিকে এই বিমানবন্দরটি অবস্থিত। নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপের পূর্ব উপকূলে গিসবর্ন শহরের কেন্দ্র থেকে ৪.২ কিলোমিটার দূরে এলগিনের শহরতলিতে অবস্থিত। আশ্চর্যের বিষয় হলো- বিপজ্জনক বিমানবন্দরটির রানওয়ের সঙ্গে সংযোগকারী একটি রেলপথও রয়েছে। তিনটি ঘাসের রানওয়ে ও একটি প্রধান রানওয়ে দিয়ে দেশটির জাতীয় রেললাইন চলে গেছে। ট্রেনের সময়সূচি অনুযায়ী বিমানবন্দরে অবতরণের সময়সূচি তৈরি করা হয়। এটি নিউজিল্যান্ডের একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর। গিসবর্ন বিমানবন্দর প্রায় ১৬০ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত।

 

সাবা  [নেদারল্যান্ডস]

নেদারল্যান্ডসের সাবা দ্বীপে বিমানবন্দরটির অবস্থান। হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা কিং কং-এ দ্বীপটির নাম দেওয়া হয় জুয়াংকো। জুয়াংকো ই রাসকুইন বিমানবন্দরের শেষে রয়েছে খোলা উত্তাল সমুদ্র, উভয় পাশে উঁচু পাহাড়। কারণ গোটা বিমানবন্দরই আছে একটা ছোট্ট দ্বীপের ওপর। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে এটাই নাকি সবচেয়ে সুন্দর। সমস্যা শুধু একটাই, রানওয়েটা মাত্র ১ হাজার ৩০০ ফুট লম্বা। যা বিশ্বের বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট। তাই ওঠা ও নামা, দুটোর ক্ষেত্রেই পাইলটকে করতে হয় চুলচেরা বিশ্লেষণ। এই বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজ হয় ১৯৬৩ সালে। এটি সাবা দ্বীপের অধিকাংশ এলাকা নিয়ে অবস্থিত অন্যতম বড় আকারের এয়ারপোর্ট। ছোটখাটো বেশ কয়েকবার বিমান দুর্ঘটনা হলেও সৌভাগ্যবশত এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। দুই পাশের উঁচু পাহাড়গুলো বিমান অবতরণের পক্ষে কোনোভাবেই ঠিক নয়। তা ছাড়া রানওয়ের শেষ প্রান্তটি সমুদ্রে নেমে যাওয়ায় ভুল করেও যদি পাইলট বিমান টেক অফ করাতে না পারেন তবে বিমানটি গিয়ে সোজা আছড়ে পড়বে। পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক বিমানবন্দরের একটি ধরা হয় এটিকে।

 

বাররা  [স্কটল্যান্ড]

বিমানবন্দরটি স্কটল্যান্ডের প্রত্যন্ত দ্বীপের অগভীর উপসাগরে সৈকতে অবস্থিত। এটি স্কটল্যান্ডের অন্তর্গত বাররা দ্বীপে অবস্থিত। বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে সব সময় পাইলটদের তীব্র আবহাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান জোয়ার নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। এর রানওয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র পাঁচ ফুট ওপরে এবং তিনটি জোড় জোয়ারের সময় তিনটি রানওয়ে পুরোপুরি ডুবে যায়। বাররা দ্বীপপুঞ্জের কাছে অবস্থিত এই এয়ারপোর্টের সি-বিচে যারা বেড়াতে আসেন তাদের চোখেও দুর্নাম আছে এই এয়ারপোর্টের। দ্বীপের বিশাল বিচের ওপর এই বিমানবন্দর তৈরি করা হয় ১৯৭৫ সালে। পৃথিবীর একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেখানে বিচের ওপর বিমান ল্যান্ড করাতে হয়। এ কারণেই এটি খুব বিপজ্জনক। সি-বিচের ওপর দিয়ে বিমান অবতরণের জন্য পর্যটকদের কাছে বিমানবন্দরটি বেশ আতঙ্ক সৃষ্টি করে। কানফাটানো শব্দের পাশাপাশি বিমানের ঘূর্ণায়মান পাখার বাতাসে পর্যটকদের সরে দাঁড়াতে হয়।

সর্বশেষ খবর