বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

ড্রপআউট হয়েও বিশ্বসেরা

সাইফ ইমন

ড্রপআউট হয়েও বিশ্বসেরা

ইতিহাস গড়া মানুষ। সবাই বিভিন্ন অঙ্গনে রেখেছেন সফলতার স্বাক্ষর। নিজ নিজ জায়গায় তাঁরা সফল ব্যক্তিত্ব। তবে কেউই পড়াশোনার গন্ডি শেষ করতে পারেননি। আনতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় প্রত্যেকেই কোনো না কোনো কারণে স্কুল-কলেজেই পড়াশোনার সমাপ্তি ঘটাতে বাধ্য হয়েছিলেন। অনেকেই দ্বিতীয়বার স্কুলের বেলকনিতে পা রাখলেও অর্থাভাবে শেষ করতে পারেননি পড়াশোনা। তবে আইনস্টাইন কিছুটা ব্যতিক্রম। কারণ তিনি স্কুল ছাড়লেও ১৭ বছর বয়সেই অসাধারণ মেধাবী হওয়ায় অর্জন করেন গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি। আবার অনেকে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অর্জন করেন সেরা পুরস্কার।  বিশ্বসেরা ড্রপআউটদের নিয়ে আজকের রকমারি...

 

বিল গেটস

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সফল ড্রপআউট বলা যেতে পারে বিল গেটসকে। ১৯৭৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন বিল। স্যাট পরীক্ষায় ১৬০০ নম্বরে ১৫৯০ পান। কিন্তু কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরির নেশায় তিনি ১৯৭৫ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাম কাটান। ১৯৭৭ সালে গেটস বিশ্বের প্রথম পারসোনাল কম্পিউটার ‘এমআইটিএস অলটেয়ার’ নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মাধ্যমেই মেক্সিকোতে বিল ও পল তাদের প্রথম সফটওয়্যার কোম্পানির কাজ শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে মাইক্রোসফটকে দুজন মিলে প্রথমবারের মতো সিয়াটলে আনেন। ১৯৮৫ সালে মাইক্রোসফট তাদের উইন্ডোজ তৈরি করে এবং ১৯৮৬ সালে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। ১৯৮৭ থেকেই ৩১ বছর বয়সী বিল গেটস পরিণত হন একজন বিলিয়নিয়ারে। বর্তমানে তাঁর নিট সম্পদ ১৩১.১ বিলিয়ন ডলার। ফোর্বসের রিয়েল টাইম বিলিয়নিয়ারের তালিকা অনুযায়ী চতুর্থ অবস্থান থেকে পিছিয়ে পঞ্চম অবস্থানে চলে গেছেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। চতুর্থ অবস্থানে চলে এসেছেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ। শেয়ার স্থানান্তরের পর বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯৬০ কোটি ডলারে। গত বৃহস্পতিবার বিল গেটসের বিনিয়োগ সংস্থা ক্যাসকেড ইনভেস্টমেন্ট এলএলসি মেলিন্ডার কাছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার মূল্যের স্টক হস্তান্তর করেছে।

 

আলবার্ট আইনস্টাইন

তাঁর আবিষ্কৃত বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত¡ বিজ্ঞান জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে। ১৯২১ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন

বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের জন্ম হয়েছিল ১৪ মার্চ ১৮৭৯ সালে জার্মানির মিউনিখ শহরে। অথচ এই বিজ্ঞানীর ছেলেবেলা ছিল একেবারেই সাদাসিধে এবং সম্ভাবনাহীন। তখনো কেউ ভাবেননি এই আলাভোলা ছেলেটি বড় হয়ে হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এমনকি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পুরস্কার নোবেল প্রাইজ অর্জন করবেন। বিখ্যাত এই বিজ্ঞানীর বাবা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। তাই বাবার কাছ থেকে খুব বেশি সময় পেতেন না, নিজের কারখানা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন তিনি। আইনস্টাইন ছিলেন খুবই সাধারণ ছাত্র। তবে এই আলাভোলা ছাত্রটির বিজ্ঞান ও গণিতের প্রতি আগ্রহ ছিল ছেলেবেলা থেকেই। সেরা ছাত্রদের তালিকায় কখনই ছিলেন না তিনি। কথা বলেছিলেন অনেক দেরিতে। পড়া আর লেখা শিখতেই কেটে যায় সাতটি বছর। একবার তো স্কুলের শিক্ষক মন্তব্য করেই বসেন, ‘বোকা ছেলে, তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না।’ শিক্ষকের এমন মন্তব্যের কারণ তিনি ঠিকমতো উত্তর দিতে পারতেন না। ভাবতে গিয়ে দেরি তো হতোই, উপরন্তু তোতলামির কারণে কথা আটকে যেত। ফলে সহপাঠী, শিক্ষকদের কাছে তিনি প্রায়ই হাসির পাত্র হতেন। ক্লাসের কেউ তাঁর সঙ্গী ছিল না। সবার শেষে পেছনের বেঞ্চে গিয়ে বসতেন। শুধু একমাত্র সঙ্গী তাঁর মা। তাঁর কাছে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের নানা সুর শোনেন। আনন্দেই কাটছিল তাঁর জীবন। স্কুলের ক্যাথলিক ধর্মের নিয়ম-কানুন ভালো লাগত না। শুধু দর্শনের বই তাঁকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করত। ১৫ বছর বয়সে সিদ্ধান্ত নিলেন স্কুল ছেড়ে দেবেন। এক সময় জার্মানির স্কুল ছাড়েন। তবে গণিতে বিশেষ পারদর্শিতার জন্য সুইজারল্যান্ডে লেখাপড়া করেন এবং মাত্র ১৭ বছরে গ্র্যাজুয়েট হন। এরপর বার্নে এসে চাকরির পাশাপাশি পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আইনস্টাইনের আবিষ্কারগুলো বাইরের বিশ্বে প্রকাশ পেতে থাকে। তাঁর আবিষ্কৃত বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত¡ বিজ্ঞান জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে। ১৯২১ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

 

শচীন টেন্ডুলকার

ভারতে ক্রিকেটের দেবতা হিসেবে খ্যাত শচীন টেন্ডুলকার। ক্লাস টেন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। খেলার মাঠে তাঁর বিস্ময়কর দক্ষতার কাছে এই অযোগ্যতা কোনো বিষয়ই ছিল না। এখনো ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ মানের ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষেক হয়। এরপর প্রায় ২৪ বছর ধরে শচীন আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের হয়ে খেলেন। টেস্ট ও এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক শতকের অধিকারী হন। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ও টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ মিলিয়ে প্রথম শততম শতক করেন। ২০১৩ সালে তিনি সব ধরনের স্বীকৃত ক্রিকেট খেলায় প্রথম ভারতীয় হিসেবে মোট ৫০ হাজার রানের মালিক হন। ক্রিকেটের ঈশ্বর উপাধিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম তাঁকে সম্মানিত করে। জীবনে বহু পুরস্কারে ভূষিত হওয়া টেন্ডুলকারকে আইডল মানেন অনেক ক্রিকেটার। ক্রিকেট বিশ্বে ভারতকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর ব্যক্তিজীবনে এই মানুষটি খুবই উদার। কথিত আছে, যে কোনো মানুষ তাঁর কাছে সাহায্যের জন্য গেলে কাউকে তিনি খালি হাতে ফেরান না।  

 

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন

ঐশ্বরিয়া রাই স্কুল শেষ করেন মুম্বাই থেকে। কিন্তু আর্কিটেকচারাল কলেজের মাঝপথে লেখাপড়া থামিয়ে দেন। ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খ্যাতি অর্জনের পর আবার লেখাপড়া করেন। অভিনয় জগতে পদার্পণ করার আগে এই অভিনেত্রী মডেল হিসেবে কাজ করতেন। ঐশ্বরিয়া বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রসহ চল্লিশটিরও বেশি হিন্দি, ইংরেজি, তামিল এবং বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। গণমাধ্যমে প্রায়ই বিশ্বের অন্যতম সুন্দরী মহিলাদের আসরে তাঁর ডাক পড়ে। মণি রত্নমের তামিল ছবি ইরুবর (১৯৯৭) এ অভিনেত্রী হিসেবে আসেন। প্রথম বাণিজ্যিক সাফল্য পান তামিল ছবি জিন্স-তে। তিনি সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত হাম দিল দে চুকে সনম ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে স্থান পাকাপোক্ত করেন। তবে বলিউডে আসন গাড়লেও এই বিশ্বসুন্দরী কাজ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্রে। অভিনয় আর রূপে-গুণে এমন অনন্যা তিনি শুধু তাই নয়; তিনি গরিব অনাথ বাচ্চাদের জন্যও সব সময় বিপুল অর্থ দান করেছেন। কাজ করে আসছেন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত জাতির কল্যাণের জন্য। তিনি মনে করেন, মানুষের ভালোবাসাই পৃথিবীতে মানুষের একমাত্র অর্জন। 

 

আমানসিও ওর্তেগা

আমানসিও ওর্তেগার এখন বয়স ৮৫ বছর। থাকেন স্পেনের লা করুনায়। পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি এই বিশ্বখ্যাত ধনকুবের। স্পেনের ব্যবসায়ী ইন্ডিটেক্স ফ্যাশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আমানসিও ওর্তেগা। তাঁর মোট সম্পদ ৮০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফ্যাশন হাউসকে ঘিরে যাঁরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন সবাই আমানসিও ওর্তেগাকে গুরু মানেন। কারণ রীতিমতো ফ্যাশন বিপ্লব ঘটিয়েছেন এই স্প্যানিশ ধনকুবের। ২০১১ সালে তিনি বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন হাউস ইন্ডিট্যাক্সের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ ছাড়া তিনি স্পেনের জারা ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার। বর্তমানে ফ্যাশনের গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন সেক্টরে পা দিচ্ছেন তিনি। তাঁর মালিকানায় রয়েছে এপিক হোটেল, একটি ৫৪ তলার বিলাসবহুল ভবনসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। ওর্তেগার বাবা ছিলেন রেল কর্মচারী। তাই এক শহরে বেশিদিন থাকা হতো না। ১৯৭২ সালে ওর্তেগা প্রথম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। চালু করেন একটি ফ্যাশন হাউস। যেখানে শুধু বিভিন্ন ধরনের শার্ট বিক্রি হতো; যা পরবর্তী সময়ে ‘জারা’ ব্র্যান্ড নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। এখান থেকেই গড়েন টাকার পাহাড়।

 

জর্জ বার্নার্ড শ

স্কুল হলো কারাগার ও শিক্ষক হলেন কারা পরিদর্শক- এমনটাই মনে করতেন নোবেল ও অস্কার জয়ী লেখক, নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ। সারা জীবনই স্কুল, কলেজ ও শিক্ষকদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করা মানুষটির জন্ম ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই। আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে কাটে তাঁর ছেলেবেলা। ১৮৬৫-১৮৭১, এ সময় পর্যন্ত চারটি স্কুলে পড়াশোনা করেও কোনোটিতেই মন বসাতে পারেননি। ডাবলিনের সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল ডে স্কুলই ছিল তাঁর শেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৫ বছর বয়সে লেখাপড়া ছেড়ে চাকরি নেন। তবে ২০ বছর বয়সে সব ছেড়ে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। পরবর্তীতে সমাজতন্ত্রের প্রতি আগ্রহের কারণে ফেবিয়ান সোসাইটিতে যোগ দেন। শিক্ষা, বিয়ে, ধর্ম, সরকার, স্বাস্থ্যসেবা, শ্রমজীবীদের অধিকার; সব বিষয়ে শ ছিলেন স্বচ্ছ মনের অধিকারী। সাহিত্য সমালোচনা ও সংগীতবিষয়ক লেখার পাশাপাশি নাটকেও তাঁর চরম উৎকর্ষের বিকাশ ঘটে। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ১৯২৫ সালে সাহিত্যে নোবেল এবং ১৯৩৮ সালে অস্কার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

 

স্টিভ জবস

যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবক স্টিভ জবসকে পারসোনাল কম্পিউটার বিপ্লবের পথিকৃৎও বলা হয়। বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রগতিশীল, প্রভাবশালী, প্রতিভাবান আর সফল প্রযুক্তি ভাবনার অধিকারী হিসেবেও তিনি পরিচিত। তিনি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে অ্যাপল কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন। স্টিভ অ্যাপল ইন করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। স্টিভ পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। মৃত্যুর আগে তাঁর সম্পদ ছিল ৮.৩ বিলিয়ন ডলার। এত এত অর্জনকারী স্টিভ জবস হয়তো এক জায়গাতেই বিফল হয়েছেন। ২১ বছর বয়সে কলেজের পড়ালেখার খরচ চালাতে না পারায় নাম কাটা যায়। বড় ডিগ্রি হয়তো অর্জন করা তাঁর ভাগ্যে জোটেনি, তবে এত অর্জনের শিরোমণি স্টিভ জবসকে ২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। মৃত্যুর আগে জীবনে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

 

মার্ক জুকারবার্গ

আমেরিকান কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ। তাঁকে এখন চেনে না এমন মানুষ পৃথিবীতে নেই বললেই চলে। সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা বললে পরিচয়টি আরও পরিষ্কার হয়। বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে। বর্তমানে তিনি ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রেসিডেন্ট। জুকারবার্গ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে আবাসিক হলে বন্ধুদের নিয়ে ২০০৪ সালে তৈরি করেন ফেসবুক। এর পরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট হন তিনি। এই ড্রপআউট ছেলের আবিষ্কার ফেসবুক এখন বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। জুকারবার্গ ২০১১ সালে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়াতে সমাবর্তন বক্তব্য দেন। এ ছাড়াও মাত্র ২৬ বছর বয়সেই তিনি টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে বছরের সেরা ব্যক্তিত্বরূপে নির্বাচিত হন। বর্তমানে মার্ক জুকারবার্গ ১৩১.৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক। সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি। 

 

ব্রাড পিট

মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ কিংবা ট্রয়খ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা ব্রাড পিট। যুক্তরাষ্ট্রের ছোট্ট একটি শহর স্প্রিংফিল্ড। শহরের হাইস্কুলের সবচেয়ে পরিচিত মুখ ছিল কিশোর পিট। গলফ থেকে শুরু করে স্কুলের টেনিস দলের দাপুটে সদস্য ছিলেন তিনি। খেলাধুলা আর পড়াশোনা দুটিই চলত সমান তালে। এমন কি স্কুলের গানের অনুষ্ঠানেও তাঁর ঝলক দেখা মিলত। সেই কিশোর বয়সে হাইস্কুলের পড়াশোনা শেষে ভর্তি হন মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাংবাদিকতা ও বিজ্ঞাপন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে বুঝতে পারলেন পড়ালেখার দিকে তাঁর একটুও মন নেই। সব মনোযোগ যেন সিনেমার প্রতি। মনের কথাই শুনলেন পিট। পড়ালেখা ছেড়ে নাম লেখালেন অভিনয়ের ক্লাসে। মিসৌরি ছেড়ে লস অ্যাঞ্জেলেস গেলেন কাজের জন্য। বছর খানেকের মধ্যে টেলিভিশনে ডাক পড়ে আজকের হলিউড তারকা ব্রাড পিটের। জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে। তবে কোনো সম্পর্কই  টেকেনি। এখন একাই বসবাস করছেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। 

 

হেনরি ফোর্ড

হেনরি ফোর্ড আধুনিক মোটরশিল্পর জনক। ১৯০৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘ফোর্ড মোটর কোম্পানি’। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটি মডেল টি মোটরগাড়ি উদ্ভাবন করে আমেরিকার শিল্প ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনে। এ ছাড়াও একজন বহুমুখী উদ্ভাবক এবং ১৬১টি ইউএস পেটেন্টের অধিকারী ছিলেন হেনরি ফোর্ড। পৃথিবীর প্রথম বিলিয়নিয়ার যিনি শিল্প বিপ্লবের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত। তাঁকে সস্তা পণ্যের বহু উৎপাদনশীলতার জনকও বলা হয়ে থাকে। ফোর্ড ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ডিলারশিপ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। হেনরি ফোর্ডের বর্তমান নিট সম্পদের পরিমাণ ১৯৯ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু তিনি পড়াশোনায় খুব বেশিদূর এগোতে পারেননি। ফোর্ড লেখাপড়া করেছেন মাত্র ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত। অথচ অসম্ভব মেধাবী এই মানুষটি পৃথিবীর মোটরশিল্পের ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য। ড্রপআউট হয়েও তৈরি করেছেন ইতিহাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর