রবিবার, ২২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

আফগানের অনিশ্চিত কাহিনি

সাইফ ইমন

আফগানের অনিশ্চিত কাহিনি

দেশ ছাড়তে আফগানদের হুড়োহুড়ি তালেবানদের ফিরে আসাকে মহিমান্বিত করছে না কোনো মহলেই। সাধারণ জনগণের বাইরেও দেশটিতে অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায় আছে যারা তালেবানদের শাসন মেনে নেবে না। দেশটির ভিতরের পুরো প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সব মিলিয়ে দেশের ভিতরে ও বাইরে কোনো ফ্রন্টেই নিরঙ্কুশ সুবিধাজনক অবস্থানে নেই তালেবান। এমন ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে আফগান সংকটের অদ্যোপান্ত নিয়ে আজকের রকমারি...

চরম মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে আফগানিস্তানের সাধারণ জনগণ। দেশটির মানুষের বর্তমান অবস্থারই প্রতিফলন যেন এই শিশুর আর্তচিৎকার। নিজের সন্তানকে আমেরিকা পাঠিয়ে দিতে আমেরিকান সৈন্যদের হাতে তুলে দিচ্ছেন নিরুপায় অসহায় বাবা-মা

 

নানা মানবিক সংকট দেশজুড়ে

আফগানিস্তান অত্যন্ত দরিদ্র একটি দেশ। সেখানকার ৫৩ শতাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। বেকারত্বের হার ৪০ শতাংশ। এ অবস্থায় সেখানে আবারও তালেবানদের শাসন শুরু হতে যাচ্ছে। দেশ ছাড়তে আফগানদের হুড়োহুড়ি তালেবানদের ফিরে আসাকে অন্তত মহিমান্বিত করছে না। বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানের ভিতরের পুরো প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সব মিলিয়ে দেশের ভিতরে ও বাইরে কোনো ফ্রন্টেই নিরঙ্কুশ সুবিধাজনক অবস্থানে নেই তালেবান। এমন ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে দেশটির মানুষের অবস্থা শোচনীয়। বিশেষ করে গত ২০ বছর যারা তালেবানদের বিপক্ষে কাজ করেছে তারাসহ সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত জীবনযাপন করছে। এদিকে তালেবানদের  নেতৃত্বে একের পর এক শহরে লুটতরাজ চলছেই। কাবুল বাদে আশপাশের সব শহরেই চলছে নানা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। খাদ্য, শিক্ষাসহ নানা মৌলিক চাহিদা থেকে এখানকার মানুষ বঞ্চিত। এদিকে শরণার্থীর চাপ দিন দিন বাড়ছেই। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আটকে দিয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জার্মানিও আফগানিস্তানে তার আর্থিক সহায়তা স্থগিত করার কথা জানিয়েছে। এ অবস্থায় শাসনকাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়াই তালেবানকে তাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে নেতৃত্ব দিতে হবে।

 

সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে আশপাশের দেশগুলো

পাকিস্তানের আফগানিস্তান সীমান্ত বন্ধ হয়েছে আগেই। এরপর এবার আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করল ইরান। এ বিষয়টি ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা মিজান নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। মন্ত্রণালয়ের সীমান্তবিষয়ক বিভাগের পরিচালক হোসেইন কাসেমি জানান, আফগানিস্তানের ঘটনাপ্রবাহ বিবেচনায় এবং করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের কারণে আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের যেন প্রবেশ করতে দেওয়া না হয় সেজন্য সীমান্ত সংলগ্ন ইরানের তিনটি প্রদেশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কয়েক দিন আগেই কাসেমি বলেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে পালানো শরণার্থীর ঢল সামাল দিতে আফগান সীমান্তের কাছে ইরান শরণার্থী শিবির তৈরি করছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর অক্টোবর পর্যন্ত ইরানে আফগান শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৮০ হাজার। এর আগে আফগানিস্তানের সঙ্গে তোরখাম সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। ওই সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত আফগান এলাকা তালেবান দখল করে নেওয়ার পরই পাকিস্তান এমন পদক্ষেপ নেয়। ফলে সে সময় থেকেই ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দেশটি।

 

ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস মহাআর্থিক সংকটে দেশ

আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশা অনেক পুরনো। দেশটি মূলত বিদেশি সহায়তার ওপর চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আর্থিক সংকটে রয়েছে পুরো দেশ। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ৯০ শতাংশ মানুষ সরকার ঘোষিত দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। এমন প্রেক্ষাপটে এই খনিজ সম্পদ আফগানিস্তানের জন্য একটি আশীর্বাদ হতে পারে। দুষ্প্রাপ্য খনিজ উত্তোলনে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন। আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই যোগাযোগ রেখে চলেছে চীনের সঙ্গে। এই যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে চীন।

 

খাবার ইমপোর্ট করত দেশটি; দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বা ডব্লিউএফপি

খাদ্য সংকটে ১ কোটি ৪০ লাখ আফগান। সংঘাতের কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে রয়েছে জানিয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। ফলে ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-ডব্লিউএফপির কান্ট্রি পরিচালক মেরি এলেন ম্যাকগ্রোয়ের্টি বলেন, তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতায় বসায় দেশটি দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন। ইতিমধ্যে লাখ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছেন। তারা সংবাদিকদের ভিডিওবার্তায় আরও জানান, গত তিন বছরের মধ্যে আফগানিস্তানে দ্বিতীয়বারের মতো খরা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস সামাজিক এবং অর্থনীতিকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশটিতে ৪০ শতাংশের বেশি ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ আফগান। এর মধ্যে সরকারের পতন ঘটেছে। অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এদিকে দেশটির যোগাযোগব্যবস্থা বলা যায় ভীষণ অনুন্নত। অনেক দুর্গম এলাকায় খাবার, আধুনিক শিক্ষা ও চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় না। গাত্রপ্রধানরাই সেখানকার সব কিছু। আবার একেক গোত্রপ্রধান একেক রকম। পূর্বের সঙ্গে পশ্চিমের কিংবা উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের কোনো মিল নেই। ভাষাগত সমস্যা তো আছেই। তার ওপর আছে নানা জাতি-উপজাতি এবং নানা গোত্র।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫% শিক্ষার্থী ছিলেন নারী এখন অনিশ্চিত গন্তব্যে শিক্ষাজীবন

কম সাক্ষরতা হারের দেশগুলোর একটি হলো আফগানিস্তান। এটিও আফগানদের পিছিয়ে থাকার একটি অন্যতম কারণ। সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থা কী রকম সেদিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, আফগানিস্তানে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার জন্য দুটি পৃথক মন্ত্রণালয় রয়েছে। একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে কিন্ডারগার্টেন থেকে ১২তম শ্রেণি পর্যন্ত, আর উচ্চশিক্ষার জন্য আছে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে শিক্ষাব্যবস্থা তিন ভাগে বিভক্ত। দেশটির নারী শিক্ষার হার সব সময়ই নিম্নমুখী ছিল। এর মধ্যে তালেবান প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। তাই আবারও হুমকির মধ্যে পড়েছেন দেশটির নারীরা। তবে এবার তালেবানরা সুর একটু পরিবর্তন করলেও তাতে ভরসা পাচ্ছেন না কেউই। বর্তমানে তালেবানরা দেশটি দখল করার আগে ৪৫ ভাগ নারী শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই হার আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে নারীরা কোথাও কোথাও নিজেদের অধিকার আদায়ে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। 

 

রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন মহিলারা

তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর কয়েকজন আফগান নারী অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছেন। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন হিজাব পরিহিত আফগান নারী হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে আফগানিস্তানের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। ওই নারীদের ঘিরে রয়েছেন রাইফেল হাতে তালেবান যোদ্ধারা। এ সময় তাদের কর্মক্ষেত্রে ফেরার অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা, নারীদের শিক্ষার অধিকার আর রাজনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকারের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

অন্য আরেকটি ভিডিওতে কাবুলের রাস্তায় বেশ কয়েকজন নারী বিক্ষোভ করেছেন। তাদের হাতে তালেবানবিরোধী প্ল্যাকার্ড ছিল। 

 

সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ ব্যর্থ তালেবানদের ঠেকাতে

অবিশ্বাস্য দ্রুততায় আফগানিস্তানের বিভিন্ন শহর তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কোনো কোনো স্থানে আফগান সেনারা কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই অস্ত্র ত্যাগ করে তালেবান বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে। আফগান সরকারি বাহিনী যে এই তালেবানের আগ্রাসনের মুখে কোনো অর্থপূর্ণ প্রতিরোধ দেখাতে পারেনি, তাতে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এক আধুনিক আফগান সামরিক বাহিনী গঠনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২০ বছর বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে। এ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ, যা তালেবান বাহিনীর চার গুণ। এদের জন্য প্রতিটি বড় শহরে নির্মাণ করা হয়েছে সর্বাধুনিক সেনাছাউনি। আধুনিক সমরাস্ত্র ও প্রায় দেড় শ যুদ্ধবিমান-সংবলিত বিমানবাহিনী। তা সত্ত্বেও দ্রুত কীভাবে আফগান প্রতিরোধ ভেঙে পড়ছে কেউই স্পষ্টভাবে তার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

 

আগের মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন তারা এখন কোথায়

ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে বড় ধরনের লড়াইয়ের আশঙ্কাও দেখা যাচ্ছে দেশটিতে। আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ, হামিদ কারজাই, বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী ও অন্যরা ক্ষমতায় নিজের অংশ পাওয়ার জন্য টানাটানি করছেন। দেশটির প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রীরা পাকিস্তানের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেছেন। তারা পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে লবি করে তাদের অংশ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রাথমিকভাবে তালেবানকে সব রাজনৈতিক দল, তাদের নিজেদের লোক, সাবেক মুজাহিদিন নেতা, ধর্মীয় নেতা, দেশের কিছু বুদ্ধিজীবীসহ অন্যদের নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করতে হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে নিজেকে আফগানিস্তানের বৈধ ও সাংবিধানিক অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন আশরাফ গনি সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় নিজেকে আফগানিস্তানের অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন তিনি।

 

আফগানদের জন্য ফেসবুক টুইটারে নতুন নিয়ম

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দেশটির নাগরিকদের নিরাপত্তায় নতুন নিয়ম সামনে এনেছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, টুইটার ও লিংকড ইন। তালেবানের হামলার ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, আফগানিস্তানের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এখন অপরিচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাদের পোস্ট সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। ফলে অচেনা কেউ এসব পোস্ট দেখতে পাবেন না। এ ছাড়া ফেসবুকে তাদের বন্ধুর তালিকাও আপাতত দেখা যাবে না। তালেবানের নজরদারি এড়াতেই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানের ইউজারদের জন্য ফেসবুক একটি ‘ওয়ান-ক্লিক টুল’ চালু করেছে। এর মাধ্যমে খুব দ্রুত ও সহজেই অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করা যাবে। অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করলে ব্যবহারকারীর বন্ধু তালিকার বাইরের কেউ তার পোস্ট দেখা, শেয়ার বা ডাউনলোড করতে পারবে না।

 

যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক অস্ত্র এখন তালেবানদের হাতে

গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সঙ্গে আফগান সরকারি বাহিনীর সমরাস্ত্রেরও দখল নিয়েছে তালেবানরা। সেসব সমরাস্ত্র আফগান সেনাবাহিনীকে উপহার হিসেবে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নতুন সাতটি হেলিকপ্টারসহ আগের দেওয়া সব হেলিকপ্টারও এখন তালেবানের হাতে। তবে কী পরিমাণ সমর সরঞ্জাম তালেবানের হাতে পড়েছে, তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এর মধ্যে রয়েছে ২ হাজারের মতো সাঁজোয়া যান, যার মধ্যে হামভি যানও রয়েছে; রয়েছে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারসহ ৪০টি উড়োজাহাজ, স্ক্যানইগল মিলিটারি ড্রোন।

 

আফগান প্রেসিডেন্টদের নির্মম ইতিহাস

তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে ঢুকে পড়ার দিন দেশত্যাগ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আশরাফ গনির এভাবে দেশ ছেড়ে যাওয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। এমনকি সরকারে থাকা মন্ত্রীদের অনেকেও এভাবে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। এর জবাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে আশরাফ গনি বলেছিলেন, রক্তপাত এড়াতে দেশত্যাগ করেছেন তিনি। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টদের দেশত্যাগ কিংবা দুর্ভাগ্যের ঘটনা আগেও ঘটেছে। কেউ গুপ্তহত্যায় নিহত হয়েছেন কিংবা কেউ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট ছিলেন আশরাফ গনি। সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ দাউদ খান গুপ্ত হত্যায় নিহত হন। মোহাম্মদ নজিবুল্লাহ পদত্যাগ করেছিলেন। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন শিবগাতুল্লাহ মোজাদ্দেদী। তিনিও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। হামিদ কারজাই ছিলেন প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় সেবারের নির্বাচন হয়েছিল। মোট কথা দেশটির প্রেসিডেন্টদের ইতিহাস বড়ই নির্মম। 

 

দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন সাংবাদিক ও এনজিওকর্মীরা

আফগানিস্তানে বিদেশি নাগরিক ছিলেন অনেক এনজিওকর্মী যারা নিজেদের দেশে ফেরত চলে যাচ্ছেন। অনেক বিদেশি সাংবাদিকও চলে যাচ্ছেন আফগানিস্তান ছেড়ে। অনেক সাংবাদিকের মতে, যে সামাজিক বৈষম্যের কারণে এক সময় তালেবানের উত্থান হয়েছিল ২০ বছরের মার্কিন অধিগ্রহণে তা বিলুপ্ত করা যায়নি; বরং আরও জেঁকে বসেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি আগের চেয়ে ব্যাপক আকার নিয়েছে দেশটিতে। মার্কিন আগমনের পর শহরে কিছু পরিবর্তন হলেও যে গ্রাম সে গ্রামই রয়ে গেছে। এসব গ্রাম থেকে তালেবান কখনই সরে যায়নি। বস্তুত এ পুরো সময়েই তালেবান গ্রামাঞ্চলে একটি বিকল্প প্রশাসন চালিয়ে গেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর