রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিখ্যাতদের শেষ ইচ্ছা

রণক ইকরাম

বিখ্যাতদের শেষ ইচ্ছা

একজন মানুষ যতই বিখ্যাত হন না কেন মৃত্যুর অমোঘ নিয়তিকে অস্বীকার করবেন সে উপায় নেই। তিনি চাইলে হয়তো তার কাজের মাধ্যমে মানুষের মনে বেঁচে থাকতে পারেন- কিন্তু পৃথিবীর নিয়ম মেনে সবাইকেই দেহত্যাগ করতে হয়। ইতিহাসে এমন অসংখ্য মানুষ আছেন যারা তাদের কর্মের মাধ্যমে নশ্বর পৃথিবীতে অবিনশ্বর হয়ে আছেন।  সব মানুষের বেলায়ই মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছা বলে একটি কথা থাকে। এমনকি ফাঁসির আসামির বেলায়ও এ সুযোগ দেওয়া হয়।  বিখ্যাতদের অনেকেই মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছার কথা বলে গেছেন। কেউ কেউ করে গেছেন উইল।  বিখ্যাত মানুষদের এমন অদ্ভুত সব ইচ্ছা নিয়েই আজকের আয়োজন।

 

মৃত্যুর পর শেষকৃত্যানুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই

জর্জ বার্নার্ড শ

বিখ্যাত আইরিশ নাট্যকার ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের প্রতিষ্ঠাতা জর্জ বার্নার্ড শ-কে কমবেশি সবাই চেনেন। বিশেষ করে নাট্যকার হিসেবে পৃথিবীর অন্যতম সেরা যে কজন আছেন, তিনি তাদের অন্যতম। তার মূল লেখালেখির শুরুটা হয়েছিল সংগীত সাংবাদিকতা আর সাহিত্য সমালোচনা দিয়ে। তখনো আসল বার্নার্ড শ-কে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার আসল প্রতিভার প্রকাশ ঘটে নাটকে। অল্প সময়ের মধ্যেই অর্ধশতাধিকেরও বেশি নাটক রচনা করেন তিনি। যার অধিকাংশই বছরের পর বছর ধরে বিখ্যাত রচনা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এ ছাড়াও বার্নার্ড শ ছিলেন একাধারে প্রাবন্ধিক, উপন্যাসিক এবং ছোট গল্পকার। তিনি ১৯২৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তার জন্ম ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই। ১৯৫০ সালের ২ নভেম্বর ইংল্যান্ডের হার্টফোর্ডশায়ারে পরলোকগমন করেন। তার বর্ণিল জীবনের মতোই মৃত্যুর আগের শেষ ইচ্ছাটাও ছিল খুব অদ্ভুত। তিনি ঘোষণা দেন তার মৃত্যুর পর যেন কোনো ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন না করা হয়। তথাকথিত শেষকৃত্যানুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানান তিনি।  কেবল এটুকুই নয়, বার্নার্ড শ-এর শেষ ইচ্ছা ছিল তার সমাধিক্ষেত্রে যেন কোনো ক্রস চিহ্ন বা এ জাতীয় কোনো প্রতীক দেওয়া না হয়।

 

এখানে থাকার আর ইচ্ছা নেই আমার। কারণ আগামীকাল আমি আর এখানে থাকব না।

নস্ট্রাদামুস

মাইকেল ডি নস্ট্রাদামুস ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জ্যোতিষী। তবে এর বাইরেও তিনি একজন দার্শনিক, লেখক, ওষুধ প্রস্তুতকারক হিসেবে ইতিহাসে আলাদা স্থান করে আছেন। ফরাসি এই বিদ্বান ব্যক্তি তার লিখিত ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ প্রকাশনা করে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তার লেখা দ্য প্রফেসিস বইটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৫৫৫ সালে। এরপরই তিনি সারা বিশ্বের কাছে তুমুল আলোচিত হয়ে ওঠেন। নস্ট্রাদামুস তার জীবনে যেসব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তার অধিকাংশই পরবর্তীতে সত্য হয়েছে। এর মধ্যে বিখ্যাত কতগুলো হচ্ছে কেনেডির মৃত্যু, হিটলারের উত্থান, নেপোলিয়নের পরাজয়, ৯/১১-তে আমেরিকার টুইন টাওয়ার ভেঙে যাওয়া। এমন অসংখ্য ঘটনার কথা তিনি বহু আগেই বলে গিয়েছিলেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা এই মানুষটির শেষ ইচ্ছা বলতে কিছু ছিল না। শেষ ইচ্ছা ছিল তিনি আর এই পৃথিবীতে থাকবেন না। কারণ তিনি নিজেই নিজের মৃত্যুর কথা অনুমান করতে পেরেছিলেন। তার অন্য সব ভবিষ্যদ্বাণীর মতো নিজের মৃত্যুর কথাও বলে গেছেন অবলীলায়। নস্ট্রাদামুস নিজের মৃত্যুর আগ মুহূর্তে বলেছিলেন, ‘এখানে থাকার আর ইচ্ছা নেই আমার। আগামীকাল আমি আর এখানে থাকব না।’  ১৫০৩ সালে জন্ম নেওয়া নস্ট্রাদামুসের মৃত্যু হয় ১৫৬৬ সালের ২ জুলাই।

 

নিজের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছেন

ভার্জিল

সবাই তাকে মহাকাব্যের কবি ভার্জিল হিসেবেই চেনেন। কিন্তু তার পুরো নাম পুবলিয়ুুস ভেরগিলিয়ুস মারো। খ্রিস্টপূর্ব ৭০ অব্দের ১৫ অক্টোবর বর্তমান ইতালির মান্তুয়া সীমান্তে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

প্রাচীন রোমান এই কবি একলোগুয়েস, গেয়র্গিক্স ও ইনিডের লেখক। এর মধ্যে ইনিড ছিল ১২টি বইজুড়ে লেখা এক মহাকাব্য, যা পরে রোমান সাম্রাজ্যের জাতীয় মহাকাব্যের মর্যাদা লাভ করে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রোমান সাম্রাজ্যের বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠে এই একটি মহাকাব্য।

ভার্জিলের কাব্যের ঐতিহাসিক তাৎপর্য রোমানদের জাতি গঠনে দৃঢ় ভূমিকা রেখেছিল। এ ছাড়া তার কাব্যে এক মহামানবের আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল। অধিকাংশের বিশ্বাস ভার্জিল এ মহামানব বলতে যিশুখ্রিস্টকে বুঝিয়েছেন। ফলে অনাগত কালের জন্য ‘ইনিড’ হয়ে ওঠে মহামুক্তির প্রামাণ্য গ্রন্থ। তার মৃত্যু হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৯ অব্দের ২১ সেপ্টেম্বর। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছা ছিল তার অন্যতম অমর সৃষ্টি ‘ইনিড’কে পুড়িয়ে ফেলা। এর পেছনে ভার্জিলের একটা যুক্তি আছে।

তার কাছে কেবল মনে হতো যে এই মহাকাব্যটি এখনো অসম্পূর্ণ। যেহেতু ইনিড সম্পূর্ণ শেষ করে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়, তাই একে পুড়িয়ে ফেলাই শ্রেয় মনে করেন ভার্জিল। আর তাই অসমাপ্ত কাজকে ধ্বংস করে দিতেই উইলে এমন ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। অবশ্য পরবর্তীতে তার অদ্ভুত এ ইচ্ছার একটা সমাধান হয়েছিল। মৃত্যুর আগে তার বন্ধুরা সবাই মিলে ভার্জিলকে অনেক  বোঝানোর পর ইনিড না পোড়ানোর ব্যাপারে রাজি হয়েছিলেন তিনি।

 

মৃত্যুর পর হ্যালোইনে যেন ডাকা হয়

হ্যারি হুডিনি

হ্যারি হুডিনি ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন জাদুশিল্পী ছিলেন। হুডিনি ১৮৭৪ সালের ২৪ মার্চ হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম স্যামুয়েল ভাইস; তিনি ছিলেন একজন ইহুদি সম্প্রদায়ভুক্ত হিব্রুভাষার প-িত ব্যক্তিত্ব। ঘটনাচক্রে জাদুবিদ্যার সঙ্গে পরিচয় ঘটে তার। এরপর আশ্চর্য সব জাদুর কলাকৌশল দেখিয়ে তিনি দর্শকচিত্ত জয় করেন। অল্পদিনের মধ্যেই গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশে দেশে তার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যক্তিগত জীবনে হুডিনির একটি ইচ্ছা ছিল। আর সেটি হচ্ছে তার মৃত মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা। হুডিনি তার মাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করা কখনই সম্ভব হয়নি। মা ছেলের ডাকে সারা দেননি। এরপরও দমে যাননি হুডিনি। বরং এই উইলের মাধ্যমে স্ত্রীকে ১০টি শব্দ লিখে দিয়ে যান। আর জানান তার মৃত্যুর পর সেই ১০টি শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমে তাকে যেন প্রতি হ্যালোইনে ডাকা হয়। স্ত্রী স্বামীর কথা ফেলেননি। তবে লাভও হয়নি কিছু। হুডিনি কখনই সাড়া দেননি।

 

জন্মভূমি জ্যামাইকাতেই মরতে চাই

বব মার্লে

তৃতীয় বিশ্বের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের নাম ‘বব মার্লে’। এ আধুনিক সময়ে এসেও বব মার্লেকে মানা হয় তারুণ্যের প্রতীক, বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে। এখনকার তরুণদের মধ্যেও বিশ্বব্যাপী তার গানের জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়। তার গানে তিনি অধিকার বঞ্চিত মানুষদের কথা বলেছেন সবসময়। ‘বাফেলো সোলজার’, ‘নো ওম্যান, নো ক্রাই’, ‘গেট আপ স্ট্যান্ড আপ’, ‘ব্ল্যাক প্রগ্রেস’-এর মতো অনেক ভুবনকাঁপানো গান দিয়ে সংগীতপ্রেমীদের মন জয় করেছিলেন বব মার্লে। মৃত্যুর শেষ দিনগুলোতে তিনি চেয়েছিলেন তার প্রিয় জন্মভূমি জ্যামাইকাতে কাটাতে। শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য তাকে জ্যামাইকার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শরীরের নাজুক অবস্থার কারণে ১৯৮১ সালের ১১ মে পথেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে বব মার্লের বয়স ছিল মাত্র ৩৬ বছর। পুত্র জিগি মার্লেকে উদ্দেশ করে তার শেষ কথাগুলো ছিল, ‘অর্থ জীবন কিনতে পারে না’।

 

‘ওগো ভালো মানুষ, এখন শত্রু বানানোর সময় নয়।’

ভলতেয়্যার

তার আসল নাম ফ্রাঁসোয়া-মারি আরুয়ে। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি ভলতেয়্যার নামে পরিচিত। তিনি রেনেসাঁর সময় আবির্ভূত বিশ্বের অন্যতম সেরা প-িত ছিলেন। তার সময়ে তো বটেই এখনো ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক মানা হয় তাকে। তিনি নাগরিক স্বাধীনতার স্বপক্ষে, বিশেষত ধর্মের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত ছিলেন। তার সময়ের ফ্রান্স ছিল রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে দারুণ গোঁড়া। তিনি সেসব কঠোর গোঁড়ামি উপেক্ষা করে সামাজিক সংস্কারের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। শুধু তাই নয়, সব রক্তচক্ষু উপক্ষো করে খ্রিস্টান গির্জা ও তৎকালীন ফরাসি সামাজিক আচারকে ব্যঙ্গবিদ্রƒপ করেছিলেন। ভলতেয়্যারের জন্ম ১৬৯৪ সালের ২১ নভেম্বর। আর ১৭৭৮ সালের ৩০ মে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হলেও তিনি কিছুই বলেননি। আর নাস্তিক হওয়ার কারণে ঈশ্বরের নামও নেননি। তার মৃত্যুর সময় পাদ্রি তাকে ঈশ্বরে বিশ্বাস আনার অনুরোধ করেন। কিন্তু ভলতেয়্যার তখনো নিজের দর্শনে অটল। ভলতেয়্যার স্মিত হেসে পাদ্রিকে বলেন- ‘ওগো ভালো মানুষ, এখন শত্রু বানানোর সময় নয়।’ অর্থাৎ ঈশ্বরে বিশ্বাস এনে তিনি শত্রু বানাতে চান না!

 

সে যেন অহেতুক অতিরিক্ত গয়না না পরিধান করে -মেয়ে সারাকে উদ্দেশ করে।

ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট

এই তালিকায় তিনিই একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পৃথিবীর ইতিহাসের কম-বেশি সবক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের অংশগ্রহণ আছে। ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। দীর্ঘ ১২ বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সময় সমগ্র বিশ্বের পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি উত্তপ্ত। ফলে অনেকের চেয়ে বেশি চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হয়েছে। ইউনাইটেড নেশনস বা জাতিসংঘ সৃষ্টিতে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন উইনস্টন চার্চিল এবং জোসেফ স্ট্যালিনের মতো বিশ্ব নেতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিত্রবাহিনীর পক্ষে কাজ করেন রুজভেল্ট। ৩০ জানুয়ারি ১৮৮২ সালে জন্ম নেওয়া রুজভেল্ট মৃত্যুবরণ করেন ১৯৪৫ সালের ১২ এপ্রিল। মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছাপত্রটিও দারুণ আলোচনার জন্ম দেয়। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ফ্রান্সের এক রাষ্ট্রদূত রুজভেল্টকে কিং লুইস ১৬ এর একটি পোট্রেট উপহার দেন। এই পোট্রেটে ৪০৮টি হীরা লাগানো ছিল। ফ্রাঙ্কলিন জানতেন যে তার মৃত্যুর পর সেই পোট্রেট ও এর হীরাগুলো তার মেয়ে সারা পাবে। তাই তার মেয়ে সারা যাতে সেগুলোকে খুলে নিয়ে গয়না না বানায় সে জন্যই রুজভেল্ট তার মেয়ের উদ্দেশে একটি ইচ্ছাপত্র লিখে যান,  তাতে লেখা ছিল যে সারা যেন অহেতুক অতিরিক্ত গয়না পরিধান না করে।

 

নিজের শেষকৃত্যানুষ্ঠানেও দেরি!

এলিজাবেথ টেইলর

এলিজাবেথ রোজমন্ড টেইলর ডিবিই বা লিজ টেইলর একজন ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ব্রিটিশ-মার্কিন অভিনেত্রী। তিনি তার অভিনয় প্রতিভা ও সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সেই সঙ্গে তার হলিউড জীবনপদ্ধতির জন্যও। যেমন- অনেকগুলো বিয়ে করা। টেইলরকে হলিউডের স্বর্ণযুগের অন্যতম অভিনেত্রী হিসেবে ধরা হয়। তাকে তাই বলা হয় জীবনের থেকেও বড় তারকা। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট টেইলরকে তাদের নারী কিংবদন্তি তালিকায় সপ্তম স্থানে রেখেছে। তার জন্ম ১৯৩২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে টেইলরের কফিন পৌঁছায় ১৫ মিনিট দেরিতে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো এটি ঘটেছে টেইলরের ইচ্ছাতেই। এমনকি তিনি এও বলে গেছেন যেন কেউ ঘোষণা করেন যে নিজের শেষকৃত্যানুষ্ঠানেও দেরি করে এসেছেন এলিজাবেথ টেইলর!

 

দ্বিতীয় সেরা বিছানাটি আমার স্ত্রী পাবে

উইলিয়াম শেকসপিয়র

তাকে চেনেন না পৃথিবীতে এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। তিনি আর কেউ নন, নাট্যকার, কবি, অভিনেতা উইলিয়াম শেকসপিয়র। তিনি ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি হিসেবেও বেশ পরিচিত। তা ছাড়া বিখ্যাত মানুষটিকে ইংল্যান্ডে ‘বার্ড অব অ্যাভন’ নামে চেনেন। তিনি ছিলেন একজন ইংরেজি কবি ও ইতিহাসের বিখ্যাত নাট্যকার। তার রচিত অসংখ্য রচনার মধ্যে রয়েছে ৩৮টি নাটক, ১৫৪টি সনেট, দুটি দীর্ঘ আখ্যান কবিতা এবং আরও কয়েকটি কবিতা। বিখ্যাত এ নাট্যকার জন্মগ্রহণ করেন ১৫৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল। শেকসপিয়রের জন্ম ও বেড়ে ওঠা স্ট্যাটফোর্ড অন-অ্যাভনে। মৃত্যুবরণ করেন ১৬১৬ সালের ২৩ এপ্রিল। মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছাটিকে বেশ অদ্ভুত বলা চলে। ঠিক কী কারণে কে জানে তার মনে অদ্ভুত এক ইচ্ছা জাগল। তিনি তার বিছানাটি স্ত্রীকে দিতে চাইলেন। নিজের ইচ্ছাপত্রে শেকসপিয়র জানান তার ইচ্ছা হচ্ছে স্ত্রী অ্যানা হ্যাথাওয়ে তার দ্বিতীয় সেরা বিছানাটি পাক। এটা অদ্ভুত মনে হলেও যতটুকু জানা যায়, শেকসপিয়রের খাটটির কারুকাজ ও দামের দিক দিয়ে সে সময়ে বেশ মূল্যবানই ছিল। অবশ্য শেকসপিয়রের কবরের ফলকে লেখা তার শেষ কথাগুলো পড়লে মনে হবে যেন, নিজেকে আর নিজের সেরা বিছানাকে অন্যের হাত থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অদ্ভুত ইচ্ছাপত্রের নজির আর কোথাও নেই।

 

আমাকে গুলি করা হয়েছে... এমন ভালোবাসা কার দরকার?

জন লেনন

সবাই তাকে জন লেনন নামে চিনলেও তার পুরো নাম জন উইন্সটন ওনো লেনন। তিনি ছিলেন একজন ইংরেজ গীতিকার, গায়ক, সুরকার, চিত্রশিল্পী ও লেখক। মজার ব্যাপার হচ্ছে সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বাইরে তিনি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অনেক কাজ করেছেন। চেষ্টা করেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এখনো পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ড মানা হয় বিটলস-কে। সেই বিটলসের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। মানবধর্মে বিশ্বাসী লেনন ছিলেন একজন আলোকিত মানুষ। মাত্র ৪০ বছর বয়সে ১৯৮০ সালের ৮ ডিসেম্বর বিটলস সংগীতগোষ্ঠীর এক অন্ধ ভক্তের গুলিতে নিহত হন লেনন। মৃত্যুকালীন তার শেষ কথা ছিল অভিযোগ এবং দাবির মতো, ‘আমাকে গুলি করা হয়েছে... এমন ভালোবাসা কার দরকার?’ তিনি কতটা আতঙ্কিত ছিলেন, তার শেষ বাক্য থেকেই স্পষ্ট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর