রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

অবিশ্বাস্য কাকতালীয় ঘটনা

সাইফ ইমন

অবিশ্বাস্য কাকতালীয় ঘটনা

মানুষ নিজেই রহস্যময় জীব। মানুষের বাস এই পৃথিবী নিজেও কম রহস্যময় নয়। মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই নানারকম অলৌকিক এবং উদ্ভট ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। কখনো এসব ঘটনার ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। আবার কখনো এসব শুধু ‘কাকতালীয়’ আখ্যা দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।  আজ তেমন কিছু ঘটনা নিয়েই রকমারির আয়োজন...

 

অন্যরকম প্রতিশোধ

প্রেমে অনেকেরই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। কেউ এই বিচ্ছেদকে মেনে নিতে পারে, আবার কেউ পারে না। এমনই হয়েছিল হেনরি জিগল্যান্ড নামে এক ব্যক্তির প্রেমিকার কাছে। মানসিক চাপে ভারাক্রান্ত হয়ে প্রেমিকা আত্মহত্যা করে ফেলে। এ ঘটনার পর মেয়েটির ভাই তার বোনের আত্মহত্যার প্রতিশোধ নিতে জিগল্যান্ডকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু গুলি জিগল্যান্ডের শরীরে না লেগে তার গা ঘেঁষে গিয়ে লাগে বাগানের একটি গাছে। ঘটনার শুরু এখানেই। মেয়েটির ভাই ভেবে নেয়, জিগল্যান্ড মারা গেছে। অপরাধ বোধে আত্মহত্যা করে সে। এ ঘটনার প্রায় ২০ বছর পর জিগল্যান্ড সেই গাছটিকে যেটিতে গুলি ঢুকে গিয়েছিল তা কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এই বিশাল গাছটি কীভাবে কাটবে কিছুতেই সে বুঝে উঠতে না পেরে ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ডিনামাইটটি ফেটে প্রচন্ড চাপে গাছ থেকে ২০ বছর আগে ঢুকে যাওয়া গুলিটি সজোরে বেরিয়ে জিগল্যান্ডের কপালে গিয়ে লাগে। তৎক্ষণাৎ মারা যায় জিগল্যান্ড।

 

মানুষের চন্দ্র জয়

চন্দ্র জয় মানুষের অন্যতম সেরা অর্জন। এদিকে জনপ্রিয় কালজয়ী কথাসাহিত্যিক জুল ভার্নকে চেনেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছেন পৃথিবীতে। ১৯ শতকের বিখ্যাত এই কল্পকাহিনিকার ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইস’ বইটি লিখে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছিলেন। জেনে অবাক হবেন তার লেখা অন্য একটি ছোট কল্পকাহিনি বইও পরবর্তীতে সত্যি হয়ে যায়। সায়েন্স ফিকশন গল্পটির নাম ‘ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন’। গল্পটিতে মানুষের প্রথম চন্দ্রাভিযানের বিষয়ে অবতারণা করা হয়। সে সময় গল্পটি পড়ে মানুষ বিশ্বাসই করতে পারেনি যে মানুষ সত্যি কখনো চাঁদে পৌঁছতে পারবে। এরও প্রায় এক শতাব্দী পর ১৯৬৯ সালে জুল ভার্নের কল্পনায় দেখা ভবিষ্যৎ বাস্তবে রূপ নেয়। মানুষের পা প্রথমবারের মতো পৃথিবীর বাইরে কোথাও গিয়ে পৌঁছে। চাঁদের বুকে নামে পৃথিবীর প্রথম মানুষ নিল আর্মস্ট্রং। জুল ভার্নের বর্ণিত গল্পের অভিযানের সঙ্গে শুধু এখানেই বাস্তবের অ্যাপোলোর অভিযানের মিল নয়। আরও অনেক মিল রয়েছে। যেমন অ্যাপোলোর অভিযাত্রীর সংখ্যার সঙ্গে হুবহু মিলে যায় জুল ভার্নের গল্পের অভিযাত্রীর সংখ্যা। দুটি রকেটই ফ্লোরিডা থেকে পৃথিবী ত্যাগ করে। আরও অদ্ভুত আর বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে জুল ভার্নের কল্পনার রকেটে অভিযাত্রীরা মহাশূন্যে নিজেদের ওজনহীন অনুভূতির মধ্য দিয়ে যায়। এ বর্ণনার সঙ্গে হুবহু মিলে যায় বাস্তবের অ্যাপোলোর অভিযাত্রীদের অভিজ্ঞতা। অথচ জুল ভার্নের সময়কালীন বিজ্ঞানীরা তখনো জানতেন না পৃথিবী ও তার বাইরের গ্র্যাভিটির পার্থক্য।

 

আলেকজান্ডারের মরদেহ

আলেকজান্ডারের মরদেহ ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছিল আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের মরদেহ সমাধিস্থ করা নিয়ে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তিনবার সমাধিস্থ করা হয়েছিল তাকে। এরপরই হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায় আলেকজান্ডারের সমাধি। এখন পর্যন্ত ১৪০ বারের মতো অনুসন্ধান চালিয়েও খুঁজে পাওয়া যায়নি বিখ্যাত এই গ্রিক সম্রাটের দেহাবশেষ। আলেকজান্ডারের ইচ্ছা ছিল গ্রিসের আমন শহরে অবস্থিত জিউসের মন্দিরেই তাকে সমাধিস্থ করা হোক। পরাক্রমশালী এই রাজার শবযাত্রা মেসিডোনিয়ায় যাওয়ার পথে আলেকজান্ডারেরই এক ক্ষমতাশালী সেনাপতি টলেমি সোটার প্রথম সমাধিবাহী গাড়িটা চুরি করে নিয়ে যান মিসরের মেমফিসে। টলেমির এ চুরির কারণ ছিল রাজজ্যোতিষী অ্যারিস্টান্ডারের ভবিষ্যদ্বাণী। তিনি বলেছিলেন, আলেকজান্ডার যেখানে সমাধিস্থ হবেন, সেই দেশ হবে সমৃদ্ধশালী, অপরাজেয় ও চিরশান্তির এক দেশ। টলেমির উদ্দেশ্য সফল হয়। আলেকজান্ডারকে মমি করে মিসরীয় রীতিতে সমাধিস্থ করা হয়। এরপর থেকেই আশ্চর্যজনকভাবে মিসরের উন্নতি সাধন হতে থাকে। টলেমির বংশও দীর্ঘদিন রাজত্ব চালাতে সক্ষম হয়। যদিও পড়ে মরদেহ আবারও চুরি হয়।

 

লিংকন-কেনেডি

আব্রাহাম লিংকন এবং জন এফ কেনেডি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দুই সাবেক প্রেসিডেন্ট। দুজনই যুক্তরাষ্ট্রে সমধিক জনপ্রিয় আজও। তবে দুজনের মধ্যে মিল এখানেই শেষ নয় বরং কিছু কিছু মিল রীতিমতো চমকপ্রদ। অনেকে বলেন- লিংকন আর কেনেডি যেন ১০০ বছরের ব্যবধানে একই ব্যক্তি।

পৃথিবীর ইতিহাসে যত রহস্যময় বা কাকতালীয় ঘটনা ঘটেছে, তার শীর্ষে রয়েছে আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এবং ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন ফিতজেরাল্ড জ্যাক কেনেডি। লিংকন ১৮৪৬ সালে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সরাসরি রাজনীতির ক্ষমতা বলয়ে প্রবেশ করেন। আর কেনেডির প্রবেশ ঘটে ঠিক ১০০ বছর পর ১৯৪৬ সালে একইভাবে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে লিংকন এবং কেনেডি প্রেসিডেন্টও হন ১০০ বছরের ব্যবধানে যথাক্রমে ১৮৬০ এবং ১৯৬০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। লিংকনের নামের ইংরেজি বানান (Lincoln) এবং কেনেডির (Kannedy) বানানে রয়েছে সাতটি করে অক্ষর। উভয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে থাকাকালে একজন করে পুত্রসন্তানের মৃত্যু ঘটে। উভয়ের মৃত্যু ঘটে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ঘাতকের গুলিতে। এই গুলিও আবার আঘাত হানে উভয়ের মাথার পেছনে এবং উভয় ক্ষেত্রে দিনটি ছিল শুক্রবার। লিংকনকে গুলি করা হয় একটি থিয়েটার হলে এবং গুলি করে ঘাতক একটি গুদামে পালিয়ে যায়। আর কেনেডিকে গুলি করা হয় একই গুদাম থেকে এবং গুলির পর ঘাতক ঢুকে পড়ে একটি থিয়েটার হলে। লিংকনের স্থলাভিষিক্ত হন সে সময়কার প্রেসিডেন্ট অ্যানড্রে জনসন (সংক্ষেপে জনসন)। অন্যদিকে লিনদন বেনিস জনসন নামে তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন কেনেডির মৃত্যুর পর।

 

তিনবার জাহাজডুবি

একই ডিজাইনের দুই বা ততধিক জাহাজকে নৌযান শাস্ত্রে সিস্টার শিপ বা ভগ্নি জাহাজ বলা হয়। ১৯১১ সালে আরএমএস অলিম্পিক নামের একটি ব্রিটিশ জাহাজ দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এ বছর ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে ইংল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ ‘এইচএমএস হক’-এর সঙ্গে পাশাপাশি চলতে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় অলিম্পিক। এর ফলে দুটি বড় ফাটল ধরে অলিম্পিকের বডিতে। এই ফাটল দিয়ে দ্রুত পানি ঢোকার ফলে প্রায় ডুবে যায় জাহাজটি। জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জাহাজের ক্যাপ্টেন অ্যাডওয়ার্ড স্মিথ এবং দুজন স্টুয়ার্ট বা সেবাদানকারী মহিলা প্রাণে বেঁচে যান। এ দুজনেরই একজন ছিলেন ভায়োলেট জেশপ নামের নার্স (জাহাজের স্টুয়ার্ট)। এরপর ভায়োলেট জেশপ তিনবার জাহাজডুবির ঘটনায় পড়লেও তিনবারই প্রাণে রক্ষা পান।

আরএমএস জাহাজেরই সিস্টার শিপ ছিল আরএমএস টাইটানিক। টাইটানিকে ছিলেন ভায়োলেট জেশপ। টাইটানিক ডোবার সময় নারী ও শিশুযাত্রীকে অগ্রাধিকার দিয়ে লাইফ বোট বা জীবন রক্ষাকারী নৌকায় তুলে দিলেও জাহাজডুবিতে প্রাণ হারান প্রায় ১৫০০ জন। পড়ে উদ্ধার জাহাজ বিভিন্ন লাইফ বোট ও জাহাজের ভাসমান সামগ্রীতেও হিমশীতল আবহাওয়ায় আশ্রয় নেওয়া ৭০৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে। এদের একজন ছিলেন আলোচিত চরিত্র ও জাহাজের নার্স (স্টুয়ার্ট) ভায়োলেট জেশপ। এভাবে দ্বিতীয়বারের মতো বেঁচে যান তিনি। টাইটানিক দুর্ঘটনার চার বছর পর ১৯১৬ সালে ইংল্যান্ডের পতাকাবাহী ‘এইচএমএইচএস ব্রিটানিক জাহাজের যাত্রী হন ভায়োলেট জেশপ। ২১ নভেম্বর ১৯১৬ তারিখ সকাল ৮টায় প্রচ- বিস্ফোরণে জাহাজের তলদেশ ফেটে যায়। ফলে ক্রমেই ডুবতে থাকে জাহাজ এইচএমএইচএস ব্রিটানিক। লাইফ বোটে তুলে দেওয়া শুরু হয় যাত্রীদের। উদ্ধারকারী জাহাজ উদ্ধার করে ৮৪৩ জন যাত্রী। ১৫০ জন জেলে নৌকা ও অন্যান্য প্রক্রিয়ার তীরে পৌঁছে। আর উদ্ধারকৃতদের মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৩৫ জন, যার অন্যতম আলোচিত চরিত্র ভায়োলেট জেশপ।

 

এক জীবন দুই মানুষ

হুবহু যমজ দুই ভাইয়ের জন্মটাই কিছুটা বিস্ময় জাগানিয়া। জীবনধারাটা একইভাবে চলে আসছে যমজ সহোদরের। কেউ কাউকে আগে চিনতেন না। বড় হয়েছেন দুজন দুই পরিবারে। এরা হলেন জেমস লুইস এবং জেমস স্প্রিঞ্জার। জন্মের পর দুটি আলাদা পরিবার তাদের দত্তক নিয়ে চলে যায় দুই আলাদা দেশে। অথচ গোটা জীবনটাই তারা যেন সাজিয়েছিলেন একই সূত্রে। দুই পরিবারই নতুন সন্তানের নামকরণ করে ‘জেমস’। দুজনকেই ছোট করে ডাকা হতো ‘জিম’। দুজনই ল-এনফোর্সমেন্ট প্রশিক্ষণ নেন, আবার দুজনই মেকানিক্যাল ড্রয়িং এবং কার্পেন্টার হিসেবে দক্ষ ছিলেন। এরপর তারা বিবাহযোগ্য হন, দুজনই বিয়ে করেন ‘লিন্ডা’ নামের আলাদা দুজন নারীকে। দুজনেরই একটি করে পুত্রসন্তান হয় এবং পুত্রসন্তান দুজনের নামই রাখা হয় জেমস অ্যালান। প্রথম বিয়ে দুজনেরই কারোরই টেকেনি। ডিভোর্স হয়ে যায় খুব দ্রুতই। পরে দুজনই আরেকটা বিয়ে করেন। এবার দুজনের স্ত্রীর নামই বেটি। আর দুই ‘বেটি’-এর একটি করে পোষা কুকুর ছিল, যার নাম ছিল টয়।

 

জন্মান্তর রহস্য

বিশ্বখ্যাত ‘ফেরারি’ কোম্পানির নাম সবারই জানা। এর প্রতিষ্ঠাতা এনজো ফেরারি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৮ সালে। আর ঠিক এর এক মাস পরই জন্মগ্রহণ করেন জার্মানির প্রখ্যাত ফুটবলার মেসুত ওজিল। দুজনের ছবি দেখলে মনে হবে তারা একই ব্যক্তি কিংবা যমজ ভাই। একইভাবে মিসরীয় অভিনেত্রী জুবাইদা থারওয়াত এবং আমেরিকান অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্সের চেহারায়ও আশ্চর্য মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি দেখলেই তা  বোঝা যায়। এদিকে এমন কাকতালীয় ঘটনাগুলোকে অনেকে পুনর্জন্মের সঙ্গে মিলিয়ে থাকে। বলা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে দিল্লিতে ছোট্ট একটা মেয়ের পুনর্জন্মের ঘটনায় চারদিকে হইচই পড়ে গিয়েছিল। ছোট্ট মেয়েটা প্রথমদিকে কেবল স্থানীয়দের কাছেই বিস্ময় ছিল। ধীরে ধীরে তার পুনর্জন্মের খবর ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে। তার নাম চিল শান্তি দেবী। পুনর্জন্ম একটি ধর্ম বিশ্বাস মাত্র। এর দালিলিক কোনো প্রমাণ কখনই পাওয়া যায়নি। তারপরও পৃথিবীর ইতিহাসে মাঝে-মধ্যে এমন সব ঘটনা ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। শান্তি দেবীর ঘটনাটাও এরকমই একটি। তাকে বলা হয় জাতিশ্বর। জাতিশ্বর তাদেরই বলা হয় যারা আগের জন্মের স্মৃতি মনে করতে পারে। শান্তি দেবীর ঘটনাটাও তাই। গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে দিল্লিতে শান্তি দেবীর পুনর্জন্মের ঘটনায় চারদিকে হইচই পড়ে গিয়েছিল।

 

টাইটানিক-টাইটান

টাইটানিকের আরও একটি কাকতালীয় বিস্ময়কর ঘটনা রয়েছে। ১৮৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একটি বই প্রকাশ পায়। বইটির নাম ‘ফুটিলিটি অর দ্য রিক অব দ্য টাইটান’। এর লেখক ছিলেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মরগান রবার্টসন। বইটিতে বলা হয় ‘এস এস টাইটান’ নামের একটি বিশালাকার জাহাজের কথা। যেটি নর্থ আটলান্টিক সাগরে একটি আইসবার্গের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ডুবে যায়। এর ঠিক ১৪ বছর পরই অর্থাৎ ১৯১২ সালে হুবহু একই রকম এবং পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম জাহাজডুবির ঘটনাটি ঘটে। বলছি টাইটানিকের কথা। ১৫০৩ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় জাহাজটি। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে- বইটিতে বর্ণিত টাইটান জাহাজের সঙ্গে বাস্তবের টাইটানিক জাহাজের প্রায় হুবহু মিল পাওয়া যায়। লেখকের কল্পনার টাইটানের আকার এবং গতি আর বাস্তবের টাইটানিকের আকার এবং গতি একই। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে- দুটি জাহাজকেই কখনো ডুববে না বলে অভিহিত করা হয়েছিল। এমনকি দুটি জাহাজেই যাত্রীর সংখ্যার চেয়ে অনেক কমসংখ্যক লাইফ জ্যাকেট ও লাইফ বোট ছিল। শুনলে আরও অবাক হবেন যে- বইটিতে লেখক বর্ণনা করেছেন যে টাইটান ডুবে যায় বছরের এপ্রিল মাসে। এর ১৪ বছর পরের বাস্তবের টাইটানিকও ডুবে যায় এপ্রিল মাসেই। দুটি জাহাজেই অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী মৃত্যুবরণ করে। আবার জাহাজ দুটির নামও প্রায় একই টাইটান এবং টাইটানিক। এমন বিস্ময়করভাবে সবকিছু মিলে যাওয়ায় পৃথিবীর মানুষ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর