শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র

হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র

সাহিত্য এবং টিভি নাটকের মতো চলচ্চিত্রেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। নব্বইয়ের দশকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ৮টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। সব চলচ্চিত্রেরই কাহিনি তাঁর নিজের। চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও প্রযোজনাও তিনি করেছেন। অধিকাংশ চলচ্চিত্রের গানও তাঁর লেখা। হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় ‘আগুনের পরশমণি’ [১৯৯৪]। আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত ও বিপাশা হায়াত অভিনীত ছবিটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত। ‘আগুনের পরশমণি’ সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালনাসহ ৮টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। হুমায়ূন আহমেদ নিজেও কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা এবং প্রযোজক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান। এ ছবি মুক্তির ছয় বছর পর তিনি নির্মাণ করেন ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ [২০০০]। এ ছবিটিও ৭টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। চলচ্চিত্রটি একদিকে যেমন দারুণ ব্যবসাসফল হয় তেমনি চলচ্চিত্র-বোদ্ধাদের দৃষ্টিতে শিল্পসম্মত হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০০১ সালে মুক্তি পায় ‘দুই দুয়ারী’। রিয়াজ, মাহফুজ আহমেদ ও মেহের আফরোজ শাওন অভিনীত এ ছবিটিও ব্যবসাসফল হয়। এ চলচ্চিত্রের জন্য রিয়াজ ২০০০ সালের সেরা অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এবং এ ছবির ‘বর্ষার প্রথম দিনে’ গানটির জন্য সাবিনা ইয়াসমিন সেরা নারী কণ্ঠশিল্পীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০০৩ সালে মুক্তি পায় ‘চন্দ্রকথা’। আসাদুজ্জামান নূর, আহমেদ রুবেল ও শাওন অভিনীত এ চলচ্চিত্রটিও ব্যবসাসফল হয় এবং সমালোচকদের প্রশংসা পায়। ২০০৪ সালে মুক্তি পায় ‘শ্যামল ছায়া’ চলচ্চিত্রটি। প্রথম ছবি ‘আগুনের পরশমণি’র পর আবার তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ফিরে আসেন এ ছবির মাধ্যমে। চলচ্চিত্রটি বিভিন্ন আন্ত-র্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়। ২০০৭ সালে মুক্তি পায় তাঁর ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮ সালে হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি। ফেরদৌস, মিম, জাহিদ হাসান ও মেহের আফরোজ শাওন অভিনীত এ ছবিটিও ব্যবসাসফল ও দর্শকনন্দিত হয়। ছবিটি দুটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। ২০১২ সালে মুক্তি পায় হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় নির্মিত সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। হুমায়ূন আহমেদ এ ছবির বিশেষ প্রদর্শনী উপলক্ষে শেষবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় ফেরেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শেষ ছবিতেও হুমায়ূন আহমেদ বাজিমাত করেন। ছবিটির জন্য সেরা পরিচালকসহ ২০১২ সালের বেশ কয়েকটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেন তিনি।

সর্বশেষ খবর